স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরো দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। আজ দুপুরে পুলিশ সদর দফতর থেকে দুই ওসির বদলি সংক্রান্ত আদেশ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌছে। এর মধ্যে জেলার বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমানকে রংপুর এবং নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হককে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন রেজা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই দুইজন ওসির বদলিকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন ও অপরাধ), জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারসহ পুলিশের ২৪জন কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

হেফাজতে ইসলামের তান্ডবের পর সর্বপ্রথম গত ২৬ এপ্রিল পুলিশ সদর দফতরের আদেশে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবদুর রহিমকে রংপুর রেঞ্জে, ২৭ এপ্রিল জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আলাউদ্দিন চৌধুরীকে সিলেট রেঞ্জে বদলী, সরাইলের খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মোঃ সাখাওয়াত হোসেনকে গাজীপুরে বদলি করা হয়।

গত ৯ মে পুলিশ সদর দফতরের আরেকটি আদেশে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল আহমদেকে বরিশাল রেঞ্জে, ১১ মে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইশতিয়াক আহমেদকে নাসিরনগর থানার চাতলপাড় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে, ১৯ মে সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহানকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে পদায়ন করা হয়।

গত ২৫ মে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয় এক আদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কর্মরত ১৩জন উপ-পরিদর্শককে (এস.আই) একযোগে বদলি করা হয়। আদেশে ১০ জন এসআইকে জনস্বার্থে ও বাকি তিনজন এসআইকে প্রশাসনিক কারণে বদলি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বদলির আদেশ হওয়া ১৩জন উপপরিদর্শকের (এসআই) মধ্যে ছয়জনকে রাঙ্গামাটি, দুইজনকে বান্দরবন, দুইজনকে খাগড়াছড়ি, একজনকে লক্ষীপুর, একজনকে চাঁদপুর ও একজনকে নোয়াখালী জেলায় বদলি করা হয়েছে।
গত ২৭ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোঃ রইছ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে বদলী করা হয়।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতা চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরো দুই থানার ওসি বদলি

২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত ইসলাম কর্তৃক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তান্ডবলীলা চালায়। সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীতে পরিনত করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ আভিযানিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত
ইসলাম কর্তৃক বিক্ষোভ কর্মসূচি ও হরতাল চলাকালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের তান্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট ০৭ জন হেফাজত কর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উক্ত সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। উল্লেখ্য হেফাজতের তান্ডবে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯ টি, আশুগঞ্জ থানায় ০৪ টি ও সরাইল থানায় ০২ টিসহ সর্বমোট ৫৫টি মামলা রুজু হয়েছে। এসকল মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ হাজার লোকের নামে মামলা হয়েছে। এসকল মামলায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বমোট ৫১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

প্রেস রিলিজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবে অগ্নিসংযোগ ও তান্ডবে জড়িত আরও ০৭ জন গ্রেফতার


স্টাফ রিপোর্টার ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

করোনা পরিস্থিতি ও আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল থাকার পরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। গত প্রায় ১০দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার আউলিয়া বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে লিচু বেচা-কেনা হচ্ছে। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় বেচা-বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। বিজয়নগর উপজেলার লিচু মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় দেশজুড়ে রয়েছে এই লিচুর সুনাম ও খ্যাতি। এ বছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বিজয়নগরে লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন চাষীরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজয়নগর উপজেলায় ৩৭৫ হেক্টর, আখাউড়ায় ৯০ হেক্টর ও কসবা উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। বাকী ৬ উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০২ সাল থেকে বিজয়নগর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ করা শুরু হয়। কম পরিশ্রমে বেশী লাভ হওয়ায় এখানকার ধানি জমিগুলোকেও লিচু বাগানে পরিনত করতে থাকেন চাষীরা।

বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমোড়া, নুরপুর, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, চান্দপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, রূপা, শান্তামোড়া, কামালপুর, কচুয়ামোড়া, ভিটিদাউপুর এলাকায় প্রায় চার শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে দেশী লিচু, এলাচি লিচু, চায়না লিচু, পাটনাই লিচু ও বোম্বাই লিচু চাষ করা হয়।

এছাড়াও উপজেলার প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই একটি লিচু গাছ আছে। যাদের বাড়িতেই একটু জায়গা আছে, তারা প্রত্যেকেই বাড়িতে অন্যান্য ফলের গাছের সাথে লিচু গাছ লাগান।

এলাকাবাসী ও চাষীরা জানান, লিচু গাছে মুকুল আসার পর থেকে কয়েক দফা বাগান বিক্রি হয়। গাছে মুকুল ও গুটি আসার পর প্রথমে বাগান কিনেন স্থানীয় ও বিভিন্ন জেলার মহাজনরা। গুটি একটু বড় হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় গাছ বিক্রি হয়। লিচু আকার ধারণ করলে তৃতীয় দফায় বিক্রি হয়। লিচু বড় হলে চতুর্থ দফায় বাগান বিক্রি হয়।

বিজয়নগর উপজেলার সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার হচ্ছে আউলিয়া বাজার। এছাড়াও উপজেলার মেরাশানী, মুকুন্দপুর, কাংকইরা বাজার, চম্পকনগর, সিঙ্গারবিল বাজার, আমতলী বাজারসহ আরো কয়েকটি বাজারে পাইকারীভাবে লিচু বেচা-কেনা হয়।
প্রতিদিন ভোর রাত ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এসব বাজারে লিচু বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন উপজেলার আউলিয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রায় ১৫/২০ লাখ টাকার লিচু বেচা-কেনা হয়। এসব বাজার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা লিচু কিনে বিভিন্ন যানবাহনে করে নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার আউলিয়া বাজারসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে বর্তমানে প্রতি হাজার দেশী লিচু দেড় হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, প্রতি হাজার এলাচি ও চায়না লিচু ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, পাটনাই ও বোম্বাই লিচু ২ হাজার ২০০ থেকে ২৫০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা থেকে লিচু কিনতে আসা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, বাজারে বিজয়নগরের লিচুর বিশেষ চাহিদা থাকায় আমি প্রতি বছরই এখান থেকে লিচু কিনে কুমিল্লায় নিয়ে পাইকারী বিক্রি করি। এখানকার লিচু মিষ্টি ও সু-স্বাদু হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এর চাহিদা বেশি। তিনি বলেন, এখান থেকে প্রতি একশ লিচু পাইকারী ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় কিনে কুমিল্লায় নিয়ে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করি।


হবিগঞ্জ জেলার ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন জানান, গত তিনদিন ধরে তিনি আউলিয়া বাজারে আসছেন। প্রতিদিন তিনি গড়ে প্রায় লাখ টাকার উপরে লিচু কিনেন। তিনি বলেন, লাভ একটু কম হলেও এখানকার লিচু অনেক ভালো ও মিষ্টি হওয়ায় চাহিদা থাকে বেশি।

বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের শেখ সায়মন জানান, তিনি তার প্রতিবেশী কৃষকের কাছ থেকে তিন বছরের জন্য দুইটি বাগান সাড়ে ৩ লাখ টাকায় কিনেছেন। দুইটি বাগানে ৩২টি লিচু গাছ আছে। পরিচর্যায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। দুইটি বাগানে যে পরিমাণ লিচু আছে, তা বিক্রি হবে আনুমানিক দেড় লাখ টাকা।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কালাছড়া গ্রামের লিচু চাষী আক্তার হোসেন বলেন, ৬০ শতাংশ জমিতে আমার লিচুর বাগান। এবার বোম্বাই জাতের লিচু চাষ করেছি। আগে মৌসুমের শুরুতে বাগান বিক্রি করে দিতাম। কিন্তু এবার বিক্রি করিনি। আশা করছি খরচ মিটিয়ে আড়াই লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারব।

একই এলাকার অপর চাষি মহসিন জানান, ১২০ শতাংশ জমিতে তার তিনটি লিচুর বাগান রয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার খরার কারণে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তিনি তিনটি বাগানের লিচু ৩ লাখ টাকার মতো বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারনা করছেন।

এ ব্যাপারে আউলিয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, লিচু বাজার ও বাগানে দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন যাতে সুন্দরভাবে লিচু ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন সেদিকে পুলিশের মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক মোঃ রবিউল হক মজুমদার বলেন, লিচুর ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমপক্ষে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করা হবে। আর ১০/১২ দিন বাজারে লিচু পাওয়া যাবে।

বিজয়নগরে লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় কোটি টাকার লিচু বিক্রির আশাবাদ

গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত ইসলাম কর্তৃক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তান্ডবলীলা চালায়। সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীতে পরিনত করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ আভিযানিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত
ইসলাম কর্তৃক বিক্ষোভ কর্মসূচি ও হরতাল চলাকালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের তান্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট ০৪ জন হেফাজত কর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উক্ত সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। উল্লেখ্য হেফাজতের তান্ডবে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯ টি, আশুগঞ্জ থানায় ০৪ টি ও সরাইল থানায় ০২ টিসহ সর্বমোট ৫৫টি মামলা রুজু হয়েছে। এসকল মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ হাজার লোকের নামে মামলা হয়েছে। এসকল মামলায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বমোট ৫১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রেস রিলিজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবে অগ্নিসংযোগ ও তান্ডবে জড়িত আরও ০৪ জন গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের মেরাশানী এলাকা থেকে ০১ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব। গতকাল (২২ মে) সন্ধ্যায় এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজয়নগরের মেরাশানী এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তারা একজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামী হলেন, রোমান বিন সাইদ রাব্বি (৩১), পিতা-মোঃ রওশন আলী, সাং-উত্তর গোরান, বাসা নং-৩৬৫, ওয়ার্ড নং-০২, থানা-খিলগাঁও, ডিএমপি-ঢাকা। এ সময় আসামীর কাছ থেকে ১৩ বতল স্কাফ ও ৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন যাবত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সিমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে চালানকৃত গাঁজা দেশে নিয়ে আসত। এবং সেই গাঁজার চালানটি রাজধানীর এক ব্যক্তির কাছে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ও আসামীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রেস রিলিজ

বিজয়নগরের মেরাশানী এলাকা থেকে ০১ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। মানুষের রুচিবোধের পরিবর্তন, পারিবারিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার কারনে মানুষ এখন আর মাটির ঘরে বসবাস করতে চায়না। অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল মানুষ এখন পাকা দালানের দিকেই ঝুঁকে পড়েছেন। এতে করে দ্রুতই বিলুপ্ত হচ্ছে গরীবের রাজপ্রসাদ খ্যাত মাটির ঘর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভারতীয় সীমান্তঘেষা বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫ টি ইউনিয়নেই শতকরা ৯০ ভাগ মানুষই বসবাস করতো মাটির ঘরে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় ওইসব এলাকায় মাটির ঘরের জায়গায় শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পাকা দালান।

বিজয়নগর উপজেলার প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, আগে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খাটিঙ্গা, মকুন্দপুর, দাড়িয়াপুর, কামালমোড়া, সেজামোড়া, ভিটি দাউদপুর, দুরানাল, কচুয়ামোড়া, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর, কালাছড়া, বক্তারমোড়া, ছতরপুর, দুলালপুর, পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর, শ্রীপুর, হরষপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া, পাঁচগাও, বাগদিয়া, হরষপুর, সোনামোড়া, বড়চাল, মেঘশিমুল, সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মেরাশানী, রানুর বাজার, আলীনগর, কাঞ্চনপুনসহ বিভিন্ন গ্রামে শোভা পেতো মাটির ঘর। বর্তমানে ওইসব গ্রামের হাতেগোনা কিছু বাড়িতে মাটির ঘর থাকলেও অধিকাংশ বাড়িতে দেখা গেছে দালান ঘর ও সেমি-পাকা টিনের ঘর।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার যেসব জায়গায় লাল মাটি ও এটেল মাটি পাওয়া যেতো সেইসব এলাকার লোকজনই বাড়িতে মাটির ঘর তৈরী করতেন। লাল মাটি ও এঁটেল মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে প্যাক করা হতো। পরে সেই মাটি দিয়ে তৈরী করা হতো ২০/৩০ ইঞ্চি চওড়া দেয়াল। প্রতিবার ১/২ ফুট উচু করে দেয়াল তৈরি করে সেই দেয়ালকে ৫/৬ দিন রোদে শুকানো হতো। তারপর এই দেয়াল আবারো ১/২ ফুট উঁচু করে শুকানো হতো। এভাবে পর্যায়ক্রমে ১০/১২ ফুট উচু দেয়াল নির্মান করা হতো। তারপর এই দেয়ালের ওপর টিনের চালা বা ছন দিয়ে চালা (ছাউনি) নির্মান করা হতো। প্রতিটি ঘর নির্মান করতো সময় লাগতো প্রায় ২/৩ মাস। পরে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ঘরের ভেতরের দিকে ধানের তুষ (কুড়া) দিয়ে দেয়ালের উপর প্রলেপ দেয়া হতো। বাইরের দিকে দেয়া হতো চুনের প্রলেপ বা আলকাতরা। চুনের প্রলেপ দিলে ঘরের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি পেত তেমনি ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকেও মাটির দেয়াল রক্ষা পেত। বন্যা বা ভূমিকম্প না হলে এসব ঘর শতাধিক বছর পর্যন্ত টিকে থাকতো। মাটির ঘর নির্মানের কারিগরদের বলা হতো দেয়ালী।


উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের নিদারাবাদ গ্রামের দেয়ালী নোয়াজ আলী জানান, মাটির ঘর তৈরি করার উপযুক্ত সময় হচ্ছে কার্তিক মাস। কারন এ সময় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। তিনি বলেন, আমরা প্রতি হাত ঘর নির্মানে ১০টাকা করে নিতাম। আবার অনেক সময় ৫/৬ হাজার টাকা চুক্তিতেও ঘর নির্মান করে দিতাম। তিনি বলেন, মানুষ এখন আর মাটির ঘর তৈরী করে না যার জন্য আমরা এই পেশা ছেড়ে দিয়েছি।

উপজেলার নিদারাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ও তরুণ সাংবাদিক এস.এম টিপু চৌধুরী বলেন, আমি ছোট বেলায় মাটির ঘরেই বসবাস করেছি। মাটির ঘরে বসবাস খুবই আরামদায়ক। গরমের দিনে ঠান্ডা আর শীতের দিনে শীত লাগতো না। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে ৭টি বড় বড় মাটির ঘর ছিল। বর্তমানে একটি ঘর ছাড়া বাকি ঘরগুলো ভেঙ্গে সেখানে পাকা দালান নির্মান করা হয়েছে। বাড়ির ঐতিহ্য হিসেবে এখনো প্রায় শতবর্ষ পুরনো একটি মাটির ঘর রাখা রয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে এই মাটির ঘরটিকে আমরা রেখে দেব।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ রাসেল খান বলেন, আমি এখনো মাটির ঘরেই বসবাস করি। তিনি বলেন, মাটির ঘরে বসবাস খুবই আরামদায়ক। গরমের দিনে ঠান্ডা আর শীতের দিনে ঘরে গরম অনুভুত হয়। তিনি বলেন, আমাদের বাড়িতে ৫টি মাটির ঘর ছিলো। এখন আমার বাড়িতে দুটি মাটির ঘর আছে। বাকি গুলো ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মান করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন বিদেশ গিয়ে বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছে। ওইসব প্রবাসীরা দেশে এসে মাটির ঘর ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মান করছেন। তিনি বলেন, রুচিবোধের পরিবর্তন, পারিবারিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার কারনে মানুষ এখন আর মাটির ঘরে থাকতে চায়না।
উপজেলার বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকতার হোসেন খাঁন বলেন, আগে আমাদের গ্রামের প্রতি বাড়িতেই মাটির ঘর ছিলো। বর্তমানে মাটির ঘরের সংখ্যা খুবই কম। তিনি বলেন, লাল মাটি ও এঁটেল মাটির অভাব, মাটির ঘর তৈরী করার কারিগর সংকটের কারনে মানুষ এখন আর মাটির ঘর তৈরী করতে চায়না। তিনি বলেন, এছাড়া গ্রামের লোকজন বিদেশে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন। প্রবাসে থেকে তাদের রুচিবোধেরও পরিবর্তন হচ্ছে। প্রবাসীরা দেশে এসে তাদের পরিবারের নিরাপত্তা ও বাড়ির সৌন্দর্যের কথা ভেবে মাটির ঘর ভেঙ্গে বিভিন্ন ডিজাইনের পাকা দালান, বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মান করছেন। তিনি বলেন, বাড়িতে একটি পাকা দালান থাকাটা অনেকেই স্ট্যাটাসের অংশ হিসেবে মনে করেন।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল বলেন, মানুষের আয়-রোজগার বেড়েছে। বিদেশে গিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে। তাছাড়া মানুষের মধ্যে সামাজিক মর্যাদাবোধ ও রুচিবোধ বেড়েছে তাই মানুষ এখন আর মাটির ঘরে বসবাস করতে চায়না। বাড়ির সৌন্দর্যের কারনে ও সামাজিক মর্যাদার কারনে মানুষ মাটির ঘর ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মান করছে।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে মানুষের আয়-রোজগার বেড়েছে। তাছাড়া এলাকার অনেক মানুষ বিদেশে যাওয়ায় তাদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে। আয়-রোজগার বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মধ্যে সামাজিক মর্যাদাবোধ ও নিজের পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি বেড়েছে। তাই মানুষ এখন আর মাটির ঘরে বসবাস করতে চায়না। সামাজিক মর্যাদার কারনে মানুষ মাটির ঘর ভেঙ্গে পাকা দালান নির্মান করছে।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, মানুষ এখন কর্মমুখী। মানুষের আয়-রোজগার বাড়ার কারনে মানুষ দিন দিন সৌখিন হয়ে উঠছে। এছাড়া এলাকার প্রচুর মানুষ বিদেশ গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন। এলাকার প্রবাসীরা ও স্বচ্ছল ব্যক্তিরা তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ও পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে মাটির ঘরে থাকতে চায়না। এজন্য মাটির ঘর ভেঙ্গে সুরম্য অট্টালিকা বা পাকা দালান, সেমি-পাকাঘর নির্মান করছেন।

ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর এখন বিলুপ্তির পথে

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে পিকআপ ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে পিকআপের চালক ও হেলপার নিহত এবং ৪জন আহত হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের আলীনগর এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন পিকআপ চালক হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার রিপন খন্দকারের ছেলে রনি খন্দকার-(১৮) ও হেলপার একই এলাকার হোসেন আলীর ছেলে দ্বীন ইসলাম-(৩৮)।

খাটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে ঢাকাগামী একটি পিকআপ ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পিকআপের চালক ও হেলপার মারা যান ও মাইক্রোবাসের চার আরোহী আহত হন।
খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ মাইক্রোবাসের চার আরোহীকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহ জালাল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত দুইজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, পিকআপ ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে পিকআপের চালক ও হেলপার ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। মাইক্রোবাসের চার আরোহীকে আহতবস্থায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিজয়নগরে পিকআপ ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত

২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত ইসলাম কর্তৃক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তান্ডবলীলা চালায়। সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীতে পরিনত করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ আভিযানিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত
ইসলাম কর্তৃক বিক্ষোভ কর্মসূচি ও হরতাল চলাকালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের তান্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট ০৪ জন হেফাজত কর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উক্ত সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। উল্লেখ্য হেফাজতের তান্ডবে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯ টি, আশুগঞ্জ থানায় ০৪ টি ও সরাইল থানায় ০২ টিসহ সর্বমোট ৫৫টি মামলা রুজু হয়েছে। এসকল মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ হাজার লোকের নামে মামলা হয়েছে। এসকল মামলায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বমোট ৪৮৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রেস রিলিজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবে অগ্নিসংযোগ ও তান্ডবে জড়িত আরও ০৪ জন গ্রেফতার


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক দম্পতিসহ তিনজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের আমতলা নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চাঁন মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া-(৩৫), তার স্ত্রী শিরিন বেগম-(২৮) এবং প্রাইভেটকার চালক কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ এলাকার মন্টু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন-(৩২)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে একটি পন্যবাহী ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-২২- ৮৭৭৯) মহাসড়কের আমতলা এলাকায় পার্কিং করা ছিলো। এসময় সিলেট অভিমুখী একটি প্রাইভেটকার-(ঢাকা মেট্রো-গ- ২৯-৪২৪৪) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্কিং করা ট্রাকের সাথে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে প্রাইভেটকারটি সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই সাগর মিয়া ও শিরিন বেগম দম্পতি নিহত ও চারজন আহত হন।


খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে প্রাইভেটকারের চালক বিল্লাল হোসেন মারা যান।
এ ব্যাপারে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহজালাল আলম দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট অভিমুখী একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমতলা এলাকায় মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা খায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকারে থাকা স্বামী-স্ত্রী নিহত ও চারজন আহত হন। আহতদের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে প্রাইভেটকার চালক মারা যান।
তিনি বলেন, নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিজয়নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক দম্পতিসহ তিনজন নিহত


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে হেনস্তা, মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদ ও তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদপত্র পরিষদের যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদপত্র পরিষদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলমের সভাপতিত্বে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শাহাজাদার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এসোসিয়েশনের সভাপতি পিযুষ কান্তি আচার্য।

বক্তব্য রাখেন রাখেন সাংবাদিক ইউনিয়নের আহবায়ক মোঃ মনির হোসেন, সাংবাদিক মোহাম্মদ আরজু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল চক্রবর্তী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অনুসন্ধ্যানী সাংবাকিকতার পথিকৃৎ রোজিনা ইসলাম। তিনি করোনার এই মহামারির সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল অনিয়ম, দুর্নীতি, অবস্থাপনা নিয়ে একাধিক অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন করেছেন। রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও প্রতিবেদন করেছেন। এতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজনের ব্যক্তিগত অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় লোকেরা রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় আটকে রেখে তাকে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন ও হেনস্থা করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম রোজিনা ইসলামের মতো এক অনুসন্ধ্যানী সাংবাদিককে গলা চেপে ধরেছে। তিনি রোজিনা ইসলামের নয়, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করছেন।
বক্তারা অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ এখন লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বক্তারা রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, তাঁর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে সাংবাদিক সমাজ। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব ও অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন-বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত

ফেসবুকে আমরা..