স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতেও দেশের অন্যতম বৃহত্তম স্থলবন্দর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। তবে এই বন্দর দিয়ে আমদানি কিছুটা কমেছে। যে কারণে রাজস্ব আয়েও কিছুটা কমতি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া যাত্রী পারাপার অনেকটাই বন্ধ থাকায় ভ্রমণ কর বাবদ রাজস্ব আয়েও বেশ প্রভাব পড়েছে। ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরের এক হিসেব থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আখাউড়া স্থল বন্দরের ব্যবসায়িরা জানান, মূলত ওপারে আভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ত্রিপুরা ও এর আশেপাশের রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে মাছের চাহিদা কয়েকগুন বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানিও আয়ে এর প্রভাব পড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এই বন্দর দিয়ে মাছের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় প্লাস্টিক সামগ্রী, জুস, নির্মাণ সামগ্রী রপ্তানি হয়। তবে ভারত থেকে আসে শুধু শুঁটকি আর আদা। তবে স্বাভাবিক সময়ে ১৫-২০ ধরণের পণ্য রপ্তানি হতো। বন্দরটি মূলত রপ্তানি নির্ভর।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে প্রাপ্ত এক তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০২১-২০২১ অর্থ বছরে এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ৬৯৭ কোটি ৭০ লাখ এক হাজার ৭৫৮ টাকার পণ্য। এর আগের অর্থ বছরে রপ্তানি হয় ৫৪২ কোটি ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৩০ টাকা। যা সর্বশেষ অর্থ বছরের তুলনায় প্রায় দেড়শ কোটি টাকা কম।
সূত্র মতে, সর্বশেষ অর্থবছরে আমদানি হয় এক কোটি নয় লাখ ৯২ হাজার ২১৮ টাকার পণ্য। ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানি হয় এক কোটি ১৭ লাখ চার হাজার ৬৩৯ টাকার পণ্য। সর্বশেষ অর্থ বছরে রাজস্ব আয় ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৮ টাকা ও এর আগের বছর রাজস্ব আয় হয় ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৫ টাকা।
দুই অর্থ বছরের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত তিনমাস ধরে রপ্তানি বেশ বেড়েছে। সর্বশেষ অর্থ বছরের এপ্রিল মাসে প্রায় ৪৭ কোটি, মে মাসে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা ও জুন মাসে প্রায় ৩৮ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়।
২০১৯-২০ অর্থবছরের এপ্রিল মাসে প্রায় ১১ কোটি টাকা, মে মাসে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ও জুন মাসে প্রায় ২৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়।
সর্বশেষ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি গত ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৯০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। এর আগের অর্থবছরে একই মাসে ৮৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে বিশেষ করে গত কয়েকমাস ধরে ভারতে আভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে। পণ্য পরিবহনে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মাছসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস ত্রিপুরাতে আসছিলো না। যে কারণে সেখানে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, ‘ভারত থেকে পণ্য আমদানি বাড়লে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসায় গতি ফিরবে। এ বন্দর দিয়ে নতুন কয়েকটি পণ্য আমদানির বিষয়টি অনুমতির অপেক্ষায় আছে।