স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লিমিটেডের (এপিএসসিএল) বিরুদ্ধে মেঘনা নদী ও তীর অবৈধভাবে দখল করে বালু ভরাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে আশুগঞ্জ বন্দর এলাকার সচেতন নাগরিকের উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক হাজী মোঃ ছফিউল্লাহ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মেঘনা নদীকে কেন্দ্র করে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লিমিটেড, আশুগঞ্জ সার কারখানা, জিটিসিএল, সাইলোসহ বেশ কয়েকটি কেপিআই প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট বড় কলকারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান। সরকার বন্দরকে পোর্ট অব কল বা আন্তর্জাতিক নৌ-বন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছে। মেঘনা নদী ভরাটের কারনে আশুগঞ্জ বন্দরসহ খোদ মেঘনা নদীই এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
তিনি বলেন, এপিএসসিএলের উদ্যোগে নদীর তীর ভূমি অবৈধভাবে দখল করে বালু ভরাট করেছে। এপিএসসিএল কর্তৃপক্ষ কৌশলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেস্ট হাউসের পেছনে নিজেদের সীমানা প্রাচীরের বাইরে মেঘনার নদীর পাড়ে প্রায় তিন হাজার ফুট দৈর্ঘ্য ও প্রায় তিনশত ফুট প্রস্থ এলাকাজুড়ে নতুন করে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করেছে। মেঘনা নদী থেকেই বালু উত্তোলন করে নতুন প্রাচীরের ভেতরে পাড় ভরাট করে জায়গা দখলে নিচ্ছে এপিএসসিএল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় একজন ঠিকাদার সেখানে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার বালু ভরাটের কাজ পেয়েছেন। অথচ মেঘনার পাড়ে এপিএসসিএলর কোনো জায়গা নেই। নদীর তীর কিংবা নদীর প্লাবন ভূমি নদীরই অংশ।
সংবাদ সম্মেলনে হাজী মোঃ শফিউল্লাহ আরো বলেন, আশুগঞ্জ বন্দরে দেশের বৃহৎ ধানের মোকাম অবস্থিত। এই মোকামে দেশের এক তৃতীয়াংশ ধান-চাল ক্রয়-বিক্রয় হয়। বালু ভরাট অংশের পশ্চিম-উত্তর দিয়ে সোহাগপুর গ্রামের দিকে বড় খাল রয়েছে। বৃহত্তর সিলেট, কুমিল্লা, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এই বন্দরে আসা ধানের নৌকা উক্ত খালে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য রাখা হয়। কিন্তু এপিএসসিএল কর্তৃপক্ষ মেঘনার জায়গা ভরাটের পর ওই খালও দখলে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে মোকামে আসা ধানের নৌকা গুলো তীরে ভীড়তে পারবে কি না সন্দেহ।

তিনি আরো বলেন, অপরিকল্পিত ড্রেজিং ও ভরাটের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে নৌবন্দর এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙন দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হতে পারে। পাশাপাশি উপজেলার সোহাগপুর এলাকার নদী পারের ফসলি জমি, নদীর মাঝে জেগে ওঠা চর-সোনারমপুর, সেখানে থাকা কয়েক জেলার বিদ্যুৎ সঞ্চালন টাওয়ার ও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যাপকভাবে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
হাজী মোঃ ছফিউল্লাহ আরো বলেন, মেঘনা নদীর গতিরোধ, পরিবেশ বিনষ্ট ও নদীভাঙন ঠেকাতে ভরাট বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, বিআইডব্লিউটিএ ও বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিন পরির্দশন করে বালু ভরাট কাজ বন্ধ করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এপিএসসিএলের নির্বাহী পরিচালক (পিএন্ডডি) হিতিশ চন্দ্র বিশ্বাস ও সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলাম প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে প্রতিরক্ষা দেয়াল ও বালু ভরাট কাজ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি বলেন, দ্রুত মেঘনার বালু ভরাট বন্ধের ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বন্দর এলাকার সংক্ষুদ্ধ জনগণ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল করিম খান, হাজী নাসির মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, আমাদের জানা মতে বালু ভরাট কাজ বন্ধ রয়েছে।
###

আশুগঞ্জে মেঘনায় বালু ভরাট বন্ধে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গত শনিবার সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখীর ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের শতাধিক বাড়ি-ঘর ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘটনার পর পরই ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকটি পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
গতকাল রোববার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল হক মৃদুল ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের খোঁজ-খবর নেন ও তাদেরকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগীতার আশ্বাস দেন। তবে ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করে বলেন, রোববার দুপুর পর্যন্ত তারা কোন ধরনের সাহায্য-সহযোগীতা পাননি।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা কালীকচ্ছ ইউনিয়নের নন্দীগ্রাম, চাঁন্দপুর, গলানিয়া, ধর্মতীর্থ, মনিরভাগ, কালিকচ্ছ মধ্যপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের উপর দিয়ে কালবৈশাখীর ঝড় বয়ে যায়। এসময় শিলা বৃষ্টিও শুরু হয়। কালবৈশাখীর তান্ডবে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ছোট-বড় মিলিয়ে শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়। ঝড়ে ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ভেঙ্গে যায় এলাকার গাছ পালা।

ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকটি পরিবারের লোকজন তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অবস্থান নেন।
কালীকচ্ছ নন্দীপাড়ার ক্ষতিগ্রস্থ সুবল দাস ও সুমন দাস বলেন, কালবৈশাখীর ঝড়ে নন্দীপাড়ার ১২টি ঘর পড়ে গেছে। কিন্তু রোববার দুপুর পর্যন্ত তারা কোন ধরনের সাহায্য সহযোগীতা পাননি। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন চাঁন্দপুর গ্রামের ফুলচান বিবি। তিনিও বলেন, রোববার দুপুর পর্যন্ত কোন ধরনের সাহায্য -সহযোগীতা পাননি।

এ ব্যাপারে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শরাফত আলী বলেন, শনিবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই তীব্র গতিতে দমকাসহ ঝড়ো-বাতাস শুরু হয়। পরে কালবৈশাখীর ঝড় শুরু হয়। সাথে সাথে শুরু হয় শিলা বৃষ্টি। তিনি বলেন, ঝড়ে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ছোট-বড় মিলিয়ে কমপক্ষে শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়। ঝড়ের পর পরই তিনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারী সহযোগীতা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আরিফুল হক মৃদুল বলেন, রোববার সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি তাদেরকে সব-ধরনের সাহায্য সহযোগীতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা শেষ হলেই জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের টিন ও আর্থিক সহযোগীতা করা হবে।
###

সরাইলে কাল বৈশাখীর ঝড়ে শতাধিক বাড়িঘর ও গাছপালা বিধ্বস্ত

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেলে মোকাম্মল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুস ছাত্তার নকশে বন্দী (রঃ)ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ নাছিরুল হক (মাসুম)নকশে বন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রঃ)দ্বয়ের দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ইছালে ছওয়াব মাহফিল গতকাল রোববার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।

বাদ ফজর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন পীর আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ (মামুন)। প্রায় ৪০ মিনিট মোনাজাতে মুসলিম উম্মার ঐক্য কামনাসহ করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা ও দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে দেশ প্রেমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে পরম করণাময় আল্লাহর দরবারে শান্তি কামনা করা হয়।

ঈমান ও ইসলাম নিয়ে বাচাঁর জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা হয়। মাহফিলে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিদের আগমন ঘটে। মাহফিলে ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার ৫ জন ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।
নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক দরবার শরীফের দু‘দিনব্যাপী মাহফিল শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হয়। মাহফিল উপলক্ষে বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল নির্মান করা হয়। ভক্ত ও মুরিদানদের জন্য ছিলো প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। ছিলো প্রায় তিন হাজার লোকের একসাথে বসে খাবারের আয়োজন। মাহফিলকে ঘিরে অস্থায়ী ভিত্তিতে গড়ে উঠে ছোট বড় কয়েক‘শ দোকান-পাট। দূরের আশেকানদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।
###

আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে নাসিরনগরের ফান্দাউক দরবার শরীফের দুদিন ব্যাপী মাহফিল সম্পন্ন

ফেসবুকে আমরা..