ব্রাহ্মণবাড়িয়া: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবেলায় অস্বচ্ছল ও কর্মহীন হয়ে পড়া শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি। করোনা ও লকডাউনের কারণে সংকটে থাকা জেলা শহরের অর্ধশত বাউলশিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, যন্ত্রশিল্পী, আবৃত্তিশিল্পী, নাট্যশিল্পীদের হাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদিরী চৌধুরীর সহায়তায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে একহাজার করে নগদ টাকা ভালোবাসা হিসেবে তুলে দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩০এপ্রিল) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শিল্পী ও শিল্পের প্রতি ভালোবাসা বিনিময় শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, সাধারণ সম্পাদক এসআরএম উসমান গনি সজিব, যুগ্ম-সম্পাদক মো.মনির হোসেন, আনোয়ার হোসেন সোহেল, কার্যকরী সদস্য বাছির দুলাল।

এ ব্যাপারে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এসআরএম উসমান গনি সজিব জানান, জেলা শিল্পকলা একাডেমি নিজস্ব উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় কর্মহীন হয়ে পড়া অস্বচ্ছল শিল্পীদের পাশে ভালোবাসার হাত প্রসারিত করার প্রয়াসেই এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এই দুঃসময়ে শিল্পীদের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখানোও জরুরী মনে করেছি।

করোনা সংকটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিল্পিদের পাশে শিল্পকলা একাডেমী

 সবশ্রেণীর মানুষদের জীবনের উৎকর্ষ-অপকর্ষের সূবিচার হয় তাদের ‘চরিত্র’-পরিচয়ে। মানুষদের ”জীবন এবং কর্মের” মহিমায় তাদের চরিত্রের আলোকেই পায় দীপ্তি। সকল মানুষ তার চরিত্র-বৈশিষ্ট্য অনুসারেই কাজ বা চিন্তা করে এবং সেই অনুযায়ী যেন সমাজজীবনে ভূমিকা রাখে। মানুষের জীবনে চরিত্র যে তার অহংকার ও সম্পদ। জনৈক দার্শনিক বলে ছিলেন, মানুষ হচ্ছে তিন প্রকার। একশ্রেণীর মানুষ হলো খাদ্যের জন্য সংগ্রাম করে যাদের দরকার হয় সবসময়েই খাদ্য। আরেক শ্রেণীর মানুষ হলো, ঠিক ওষুধের মতোই যাদের দরকার হয় মাঝে মাঝে। আরেক শ্রেণীর মানুষরা হলো, রোগের মতো যা তাদের কখনো যেন দরকার হয় না। এ মানুষরা এই তিনটি বিষয় নিজ থেকে বিশ্বাস করে কিন্তু সৃষ্টিকর্তা এখানে বৃহৎ ভুমিকা আছে তাইতো তাঁরা এমন আচরণেই কথা কপচায় এবং দাপটের সঙ্গেই চলে। যার যেটা শক্তিশালী সে সেটা নিয়ে অহংকার করে। সুতরাং, সৃষ্টিকর্তা তাদের অহংকার একনিমেষেই পরিবর্তন করে দিতেও পারেন। মানুষের বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু বোকামীর কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তাইতো এই জগতের মানুষরা দাম্ভিকতা প্রকাশ করে এবং অহংকার করে।
সৃষ্টিকর্তা তাদেকে দেয় উজ্জ্বল শোভা ও সমুন্নত মহিমা। ফুলের সম্পদ যেমন তার সৌন্দর্য কিংবা সুরভি, আবার মানুষের সম্পদ তেমনি যেন চরিত্রশক্তি। নানা সদগুণের সমন্বয়েই যেন সব মানুষ হয়ে উঠে চরিত্রবান। মানুষদের সাথে সেই রূপ আচার আচরণ করো যেমন তারা পছন্দ করে। কিন্তু নিজের ইচ্ছা বা পছন্দ মাফিক আচরণ কর না। তাতে তারা কষ্ট পায়, একজনের কোনো রোগ হয়না কিন্তু সে ব্যক্তি রোগী ব্যক্তিকে অবহেলা করে বনজঙ্গল কিংবা রাস্তায় রোগীকে ফেলে চলে যায়। কিযে নির্মমতা ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষ এই সমাজে আছে। তাদের যদি কোনো সময়ে এমন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েই যায় তখন তাদের উপায় কি, তারা একবারেও ভাবে না।
সদাচারণ, সত্যবচন, সৎসংকল্প এবং সৎ জ্ঞান হয় তার জীবনে আদর্শ। মানুষ হিতৈষী হয় তার জীবনব্রত নিয়ে।সে মানুষ কোথায়, সমাজ কি অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে।ভূল করা দোষের কথা নয় বরং ভূলের উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকা দোষণীয়। দেখা যাচ্ছে দিন দিন যেন ভুলের উপর ইচ্ছা করেই হাবুডুবু খাচ্ছে। চারিত্রিক দৃঢ়তাও মানুষদের বিন্দুমাত্র খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এক সময় আমাদের জানা ছিল, চারিত্রিক গুণাবলীর স্পর্শে সমাজের অধম ব্যক্তিরাও নিজের কুলষিত জীবনকে সুধরে নেয়ার যেন সুযোগ পায়। এখন সুধরে নেওয়া তো দূরের কথা মানুষ অহংকারী হয়ে উঠছে। এখানে অহংকার শব্দটাকে যেই ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা, তার উদ্দেশ্য অবশ্যই ভিন্ন আঙ্গিকে। অহংকার গুরুগম্ভীর শব্দটা অবশ্যই মানুষের কাছে পরিচিত হলেও তা নেতিবাচক একটি শব্দ। মানুষ তাকে নিজস্ব আত্মায় ইচ্ছাকৃতভাবে ধারন করে অনেক বড়াই করে। এ ধরনের কথাকে ভেবেই বলা যেতে পারে যে, অহংকারী মানুষরা কখনোই ভালো মানুষদের কাছে সম্মান পায় না। কিসের এতো অহংকার? অনেক সবুজ ধান গাছের পাকা ধান গুলো কাটছে একটি মহল, কিন্তু সেই ধান গাছের ছবিতে দেখা যায় পাকা ধাপগুলি যেন  চোখেই পড়ছে না। জমির মালিকও বলছেন, পাকা ধান কাটা হচ্ছে। মালিক কি ভয়েই বলছেন আমাদের জানা নেই। হয়তো বা ক্ষমতার দাপটে মালিকে বলিয়ে নিতেও পারেন। ক্ষমতার দাপট কিংবা দাম্ভিকতাটাও- সে সকল মানুষের আত্মঅহংকার পর্যায়ে পড়ে বলেই মনে করতে পারি।
ঘুম ভাঙলে সকাল, আর না ভাঙলে পরকাল। অহেতুক এতো অহংকার বা দাপট কেন? মানুষ নিজের অবস্থান নিয়ে অনেক গর্ব এবং অহংকার করে থাকে কিন্তু ভেবে দেখেও না যে, তাঁর যা অবস্থান রয়েছে তার পেছনে যে কার না কারো অবদান আছে। সুতরাং বলা যেতে পারে অহংকারী ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষেই অকৃতজ্ঞ, কৃতঘ্ন ও গর্বিত কুলাঙ্গার। খুব ‘বেশি অহংকার’- কখনোই ভালো হয় না। তিন ধরনের মানুষ অনেক বেশি ‘অহংকার’ করে থাকে। বেশি শিক্ষিত হলে, বেশি সুন্দর হলে, হঠাৎ করেই তারা বড়লোক হলে। তা ছাড়াও আরো একটি কারণ রয়েছে, তাহলো অল্প বিদ্যা অর্জনকারী ব্যক্তি নিজকে অহেতুক আড়াল করে রাখার জন্যেই যেন এক ধরনের ভাব ধরে অহংকার করে। সুতরাং জ্ঞানীরা মূর্খদেকে চিনতে পারে কেননা সে জ্ঞানী। পক্ষান্তরে মূর্খ জ্ঞানীকে চিনতে পারে না, কেননা সে মূর্খ। তাই তো সামাজিক ভাবে কে জ্ঞানী  আর কে মূর্খ বুঝা কঠিন। শুধুই এই সমাজে লক্ষ্য করা যায় দাম্ভিকতা কিংবা অহংকারের বেড়াজালে সাধারণ মানুষরা বন্ধি। অ-মানুষের জ্ঞান কবে হবে, যে অধিকার আদায়ের পেছনে চেষ্টা চালানো হয় তা কখনই বৃথা যায় না। সততা ও নিষ্ঠার সহিত অহংকার পরিহার করেই কি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার করা যায় না। কেনই বা এই দেশের হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের ‘খাদ্যদ্রব্য’ ক্ষমতার দাপটে চোরি করে খেতে হবে।
সমগ্র পৃথিবীতে আজ অবধি যত সত্য কথাগুলো জানা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম সত্যি কথা অহঙ্কার পতনের মূল আর মানুষের নায্য চাহিদা থেকে বঞ্চিত করা। তাই তো ‘জন রে’ বলেছিলেন, ‘লোভী ও অহংকারী মানুষকে বিধাতা সবচাইতে বেশী ঘৃণা করে।’ তাই বলতেই হয় যে, “যতক্ষণ অহংকার ততক্ষন অজ্ঞান। যতক্ষণ নিজ স্বার্থ ততক্ষণ পতন”। অহংকার কিংব অত্মসাতে মতোই স্বার্থ থাকতে কখনোই মুক্তি হবে না। নীচু হলে তবে উঁচু হওয়া যায়, চাতক পাখির বাসা নিচে কিন্তু উঠে খুব উঁচুতে। এ ধরনের ‘অহংকার নয়’ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করলেই বড় হওয়া যায়, সকল শ্রেণীর মানুর জাতি সম্মান করে। যাদের আত্ম বিশ্বাসের অভাব এবং আত্মবিশ্বাসেই অন্ধ তারা অন্য মানুষকে ভালো কাজ থেকে কি ভাবে সরিয়ে রাখা যায় সে চেষ্টাই করে থাকে। তারা নিজেরা পারে না বলেই যেন, অন্যকে কৌশলে ফেলে বিভিন্ন চাল ঘটিয়ে চাল চোরি এবং অন্যান্য কিছু পেলেই ভোগ করে থাকে। আবার অতি আত্মবিশ্বাস ও অহঙ্কারহীন মানুষকে নিজ চেষ্টা কিংবা ”সঠিক কিছু শেখা” থেকেই বিরত রাখতেও চেষ্টা করে। দাম্ভিকতার শিক্ষায় বেশকিছু মানুষরাই এক দিন না এক দিন নিজ স্বার্থ ও অহংকার দেখিয়েই কখন পতন ঘটে যায় তা টেরও পায় না এবং পরেই আপসোস করে। অহংকার এটি অনেক ‘খারাপ গুণ’। এটা অবশ্যই শয়তানের বৈশিষ্ট্য, ঠিক শয়তান মানুষকে দিনে পর দিন অহংকারী রূপেই বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। তাই “সৃষ্টি কর্তা” মনেই করেছেন, অহংকারী মানুষ গুলো কখনোই ভালো হয় না। দিনে দিনেই তাদের অন্তরকে ‘আলোহীন’ করে দেয়। তাদের অন্তরটিতেই যেন একসময়- ‘পরিপূর্ণ অহংকার’ জায়গা করে নেয়। আর কোনোভাবে সরাতে পারে। ভালো চেতনা নষ্ট  হয়ে যায়। সর্ব প্রথম সৃষ্টি কর্তা এবং তাঁর সৃষ্টির ওপর যে অহংকার করেছিল সে হচ্ছে, অভিশপ্ত ইবলিস। সুতরাং অহংকার ইবলিসি চরিত্র।
অহংকারী মানুষ খুব জঘন্য স্বভাবের হয়। এটা আসলে আত্মার মারাত্মক মরন ব্যাধি। মানুষ নিজেকে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম বলে মনে করলেই যেন মনের মধ্যে এক ধরনের আনন্দের হাওয়া বয়ে যায়। এমন– আনন্দ হাওয়ার কারনে মন ফুলে ফেপে উঠে। এটাই অহংকার।মনে রাখতে হবে যে অহংকার ও বড়াই মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং মারাত্মক ব্যাধি, যা কিনা মানুষদের নৈতিক চরিত্রকে শুধু কলুষিতই করে না বরং মানুষদের সত্যের পথ থেকে খুব দূরে সরিয়ে ভ্রষ্টতা বা গোমরাহির পথে নিয়ে যায়। কোনো শ্রেণী-পেশার মানুষদের অন্তরে অহংকার ও বড়াই এর অনুপ্রবেশ ঘটে ঠিক তখনই তার জ্ঞান, বুদ্ধির ওপরেই তা বিস্তার করে। নানা প্রলোভন ও প্ররোচনার মাধ্যমেই খারাপ আত্মা খুব শক্ত হস্তেই টেনে নিয়ে যায় কু-পথে এবং বাধ্য করে সত্যকে অস্বীকার বা বাস্তবতাকেই প্রত্যাখ্যান করার মতো অনেক কিছু। ইচ্ছা জাগ্রত থাকেও না খুব ভালো কাজে। ‘অংহকারী মানুষ’ সবসময়ে চেষ্টা করে অন্যের হক কুক্ষিগত করে নিজের ফায়দা লুটা যায় কিভাবে। তাদের কাছে খুব সজ্জিত ও সৌন্দর্য মণ্ডিত ব্যপারগুলো হয়ে ওঠে যেন কিছু বাতিল, ভ্রান্ত, ভ্রষ্টতাসহ গোমরাহি মতোই নানা বিষয়। যার কিনা কোনো বাস্তবতা খোঁজে পাওয়া যায় না। এ সবের সাথে আরও যোগ হতে থাকে, যেই মানুষ যতোই বড় হোক না কেন, তাকে অহংকারী’রা নিকৃষ্ট মনে করবে এবং তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে তাকে অপমান করবে। দেখা যায় অনেক মানুষরা আবার প্রতিভার কারণে প্রাথমিকভাবেই সফল হয়, কিন্তু সেই মানুষরা অহঙ্কারের কারণেই যেন নিজের সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি। অহংকারী মানুষেরাই তার নিজের ভুল ত্রুটি কাউকে দেখতেও দেয়না। ইগো তাকে অন্ধ করে দেয়, সে যতটা না বড়, নিজেকে তার চেয়েও যেন বেশি বড় করে দেখতে শুরু করে। কারও পরামর্শ এরা নেয় না। মনে করে নিজেই সবচেয়ে ভালো বোঝে।সুতরাং এমন ধরনের মানুষ সমাজে অহরহ চোখে পড়ে নিজেকে নিয়েই অহংকার করতে করতে ধ্বংস হয়েছে। সমাজ তাদেরকে অনেকেই ঘৃণার চোখে দেখে। সুতরাং পা পিছলে পড়ে যাওয়া লজ্জার কথা নয়। বরং যথাযথ সময়ে উঠে না দাঁড়ানোই লজ্জার ব্যাপার। এ মানুষদের লজ্জা হবে কবে।
অহংকার- তো তারাই করে, যাদের কোনো ধরনের গুন নেই। অহংকার শব্দটির প্রতিশব্দটা হচ্ছে: আত্মাভিমান অহমিকা ও গর্ব। অহংকার অথবা গর্ব এমন একপ্রকার  আবরণ, যা মানুষের সকল মহত্ত্ব আবৃত করেও ফেলে। মানুষের সকল মানবীয় গুণের বহিঃপ্রকাশ হলো মহত্ত্ব। এইসব মানবীয় গুণাবলি দিয়েই মানুষেরা অন্যান্য প্রাণী থেকে নিজেকে আলাদা করেছে। হয়েছেও ‘সৃষ্টির সেরা’ জীব। মহৎ মানুষরা অহংকারী ও আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে, দেশ ও দশের কল্যাণে আত্মোৎসর্গ করেছে। তাই, তাঁরা সকল প্রকার “হীনতা, দীনতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা বা অহংকার” থেকে মুক্ত থাকে। তাঁরা সবসময় দেশ, জাতি ও সমাজকে নিয়ে চিন্তা করে, নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে যায়। তারা বিশ্বাস করেন, মরিচা- যেমন লোহাকে বিনষ্ট করে, তেমনি অতিরিক্ত অহংকার মানুষকে ধ্বংস করে।সৎ মানুষেরা এও বিশ্বাস করেন যে, অহংকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দেন, তার প্রভাব-প্রতাপ নস্যাৎ করে দেন এবং তার জীবনকে সংকুচিত করে দেন। যে ব্যক্তি অহংকার করতে চায় কিংবা বড়ত্ব দেখাতে চায় আল্লাহ তাকে বেইজ্জতি করেন। সুতরাং, অহংকারী হওয়া ঠিক নয়, গারিবদেকে ঘৃণা করা উচিত নয়। তাদের যা প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মানুষের সাথেই বন্ধুত্ব ছিন্ন করে অর্থ উপার্জন করতে যেও না। কারণটা, বন্ধুত্ব স্থাপনই যেন নিজস্ব অর্থাপর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম তা স্মরণ রাখতে হবে।
লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

ক্ষমতার অহংকার ও দাম্ভিকতা চীরজীবন থাকে না

জাবেদ রহিম বিজন/নিজস্ব প্রতিবেদক:দৈনিক মানবজমিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ‘বি,বাড়িয়া’ এবং ‘বলদ বাড়িয়া’ বলে কটাক্ষ করায়  চিকিৎসক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বাদী হওয়া এই মামলার এজহার জমা দেয়া হয়। ডা. তুষারের ফেসবুকে দেয়া ওই পোস্ট শেয়ারকারী ৩ জনসহ অজ্ঞাত আরও ৬৩৬ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়।

 

মামলার এজহারে বলা হয়, গত ২০শে এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টায় ডা. আব্দুন নূর তুষার তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট দেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন ‘আজ ২০-০৪-২০২০ ইং শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়ায় করোনা ভাইরাস কোভিড- ১৯ পরীক্ষার আরটি পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করা হয়। সামাজিক দূরত্বের নমুনা দেখুন। পুরো দেশটাই বি-বাড়িয়া বলদ বাড়িয়া’। এজাহারে বলা হয় ডা. তুষার কোনো কারণ ব্যাতিত এবং অনুল্লেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে বি-বাড়িয়া মর্মে বিকৃত উচ্চারণে উপস্থাপন করে আইন ভঙ্গ করেছেন। ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন প্রজ্ঞাপন দ্বারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংক্ষিপ্ত রূপ বি-বাড়িয়াকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য ঘোষনা করেছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয় তার এই নেতিবাচক উপস্থাপনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রায় ৩২ লাখ মানুষের মনে ক্ষোভ ও উত্তেজনা উস্কে দিয়েছে।

এই পোস্ট দিয়ে যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তানদের বিবাদ ও কলহের সম্মুখীন হওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছেন ডা. তুষার। রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, আসামিদের এই অপকর্মে সমগ্র জেলাবাসীর মতো আমিও অপমানিত ও মর্মাহত হয়েছি। বলদ বাড়িয়া বলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩২ লাখ মানুষকে অপমান করা হয়েছে।এর মাধ্যমে অন্য জেলার মানুষের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষের সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান জানান, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে মামলাটি নথিভুক্ত করা হবে।

এরআগে বিশিষ্ট সাংবাদিক জ.ই মামুন তার ফেসবুক পোষ্টে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে নিয়ে মন্তব্য করলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে তিনি ক্ষমা চেয়ে আরেকটি পোষ্ট দেন। ১৮ই এপ্রিল মাওলানা যোবায়ের আহমেদ আনসারীর নামাজে জানাযায় লাখো লোকের সমাগমের পর তিনি পোষ্ট দেন- ‘এখন কাউকে গালি দিতে ইচ্ছে করলে বলা যাবে-তুই একটা ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বি,বাড়িয়া’ এবং ‘বলদ বাড়িয়া’ বলে কটাক্ষ করায় ডা. তুষারের বিরুদ্ধে মামলা

করোনা পরিস্থিতিতে জনসমাগমের মতো অপরাধ শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয় দেশের সবজায়গায়ই প্রতিনিয়ত ঘটছে জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের এমপি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে যখন সারাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে একটি ইসলামি উপদলনেতা মাওলানা যুবায়ের আহমেদ আনসারির মৃত্যুতে অনুষ্ঠিত জানায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটানো নিঃসন্দেহে একটি গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি। তবে এই জানাজা প্রসঙ্গ নিয়ে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে সমগ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিরুদ্ধ একটি অঘোষিত যুদ্ধ শুরু করেছে। এই প্রসঙ্গ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে আমার কিছু বলার আছে।

রোববার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই সভাপতি বলেন, প্রথমত জানাজার নামাজ আদায় করা একটি ধর্মীয় সংস্কৃতি ও অনুশাসন। এটি প্রতিপালন করা ফরজে কেফায়া। সমাজের ৫-১০ জন লোক আদায় করলেই পুরো সমাজের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা কোভিড-১৯ আতঙ্কের মধ্যে সরকারি বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতার জানাজায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা লাখো মানুষের অংশগ্রহণ করতে দেখেছি। এই ঘটনাটি আমিসহ সারাদেশের সচেতন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। মহামারির মধ্যে শোকসন্তপ্ত পরিবারের পক্ষ থেকে লকডাউন ভঙ্গ করে এ ধরনের গণজমায়েতের আয়োজন সীমালঙ্ঘনের শামিল এবং অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকও বটে। ‘কিন্তু এ ঘটনার জন্য সেখানের প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি কিংবা পুরো জনপদের মানুষকে দায়ী করার প্রবণতাও একধরনের মূর্খতা। কেননা প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের তেমন কিছুই করার থাকে না। মূলত এসব বিষয়ে মানুষের মধ্যে রাষ্ট্রীয় নিয়ম নীতির চেয়ে তথাকথিত ধর্মীয় আবেগ বেশি কাজ করে। যদিও অধিকাংশ বিষয়ের সাথে ধর্মের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। আমি মাওলানা যুবায়ের আহমেদ আনসারি সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। তাছাড়া এটি আমার নির্বাচনী এলাকাও না। তবে সমগ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওপর কেউ অযৌক্তিকভাবে কিছু চাপানোর অপপ্রয়াস চালালে সেই জেলার বাসিন্দা হিসেবে আমি চুপ থাকতে পারি না। এ কথা সত্য যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জানাজায় অংশগ্রহণেচ্ছু মানুষদের যদি প্রশাসন বাধা দিত তাহলে সেখানে প্রচুর প্রাণহানির ঘটনা ঘটত। তখন ওই প্রাণহানির ঘটনার দায়-দায়িত্ব কী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়াকর্মীরা গ্রহণ করতেন?। নিশ্চয় করতেন না। বরং তারা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ওপরই দায় চাপাতেন। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন, শহীদ নীরেন্দ্রনাথ ভাষা চত্বর ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদে যখন ধর্মান্ধ গোষ্ঠী তাণ্ডব চালিয়েছিল তখন কী তারা এর প্রতিবাদ করেছিলেন? করেননি। তখন যদি ওসব অপরাধের বিরুদ্ধে মিডিয়া সোচ্চার হতো তাহলে হয়তো শনিবারের ঘটনাটি ঘটতো না।’

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আমরা সবাই ইলেকট্রনিক, টেলিভিশন ও সোস্যাল মিডিয়ায় সবসময় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। কিন্তু তা সারাদেশে কতটুকু কার্যকর করতে পেরেছি? আমরা কী সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পেরেছি? যখন সরকারি ছুটিতে পোশাক শ্রমিকরা ঢাকা ছেড়ে গ্রামের দিকে ছুটছিল কিংবা এবং পুনরায় ঢাকামুখী হয়েছিল তখন কী তাদের আটকাতে পেরেছি?, পারিনি। শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া না সমগ্র দেশের চিত্রই এ ধরনের। তাই তো লক্ষীপুরে করোনায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা না করে মোনাজাতে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘শিক্ষা, সংস্কৃতি ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। এই জেলায় সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, বিট্রিশবিরোধী বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত, উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম বাঙালি ব্যারিস্টার আব্দুর রসূল, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা, কবি আল মাহমুদসহ অসংখ্য কৃতিসন্তান জন্মগ্রহণ করেন। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্যাস দ্বারা সারাদেশের ৪০ ভাগ চাহিদা পূরণ করা হয়। অথচ একজন ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতার জানাজাকে কেন্দ্র করে সোস্যাল মিডিয়ায় তথাকথিত কিছু সংস্কৃতি ও মিডিয়াকর্মীকে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে দেখেছি।’

‘তাদের মধ্যে মার্জুক রাসেল নামে একজন তথাকথিত কবি ও নাট্যকার তার ফেসবুক পেজে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে গালি দিয়ে লিখেছেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে কার্যকরী ছয় মাসের জন্য লকডাউন করা হোক। এই ছয়মাস ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিদ্যুৎ বন্ধ করে পুরো দেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। ততোদিনে তাদের.….।’ আমি মনে করি তিনি যদি জানতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও সার দেশের মোট ৩৫-৪০% চাহিদা পূরণ করে তাহলে হয়তো এটি লিখতেন না। যদিও গত ১৩ এপ্রিল লকডাউনের মধ্যে তার জেলায় মসজিদে নামাজ পড়া নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত হওয়ার ঘটনার সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।’

এ ছাড়া জয়-ই-মামুনের মতো একজন দায়িত্বশীল মিডিয়াকর্মীকেও দেখলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে নিয়ে গালি দিতে। অথচ আমরা দেখেছি তার জেলার সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে একটি ছেলেকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা ও লকডাউনের মধ্যে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটিয়ে মৃত ব্যক্তির জানাজা অনুষ্ঠিত হতে। এ ধরনের অপরাধ শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয় দেশের সবজায়গায়ই প্রতিনিয়ত ঘটছে। এসব মূলত সামাজিক অজ্ঞতারই ফসল। আমাদের এসব থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে। আর সেই পথটি হচ্ছে সকল ধর্মান্ধতা ও মানসিক বিকারগ্রস্ততা থেকে বেরিয়ে এসে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা।’

জানাজায় বাধা দিলে প্রচুর প্রাণহানি ঘটত : মোকতাদির চৌধুরী এমপি

 

সোহেল আহাদ:ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নিয়ে মন্তব্য করায় সাংবাদিক জ.ই.মামুনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করায় এটিএন বাংলার বার্তা সম্পাদক সাংবাদিক জ.ই. মামুনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সুজন দত্ত।

রবিবার (১৯ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জর্জ কোর্টে এডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ স্বপনের মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সুজন দত্ত এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।

লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত শনিবার (১৮এপ্রিল) বিকাল ৪টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক জ.ই.মামুন নামীয় তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন “এখন কাউকে গালি দিতে ইচ্ছা করলে বলা যাবে-তুই একটা ব্রাহ্মণবাড়িয়া“ যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩২ লক্ষ মানুষের মনে আঘাত লেগেছে। এমন স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং তার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠে।

এরই প্রতিবাদ সরূপ রবিবার (১৯ এপ্রিল) সাংবাদিক জ.ই. মামুনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়।

লিগ্যাল নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার ১০দিনের মধ্যে উক্ত পোস্ট প্রত্যাহারসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩২ লক্ষ মানুষের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে এবং জেলার ৬জন সংসদ মহোদয়ের সাথে স্বাক্ষাতে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহবান করেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে প্রচলিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এর সকল দায় তারই বহন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন।

১৯.০৪.২০২০

ফাহিম মুনতাসির:

গতকাল বিকালে আল্লামা জুবায়ের আহমেদ আনসারী মারা গেছেন।এই ব্যক্তির পরিচয় আশা করি সবার জানা।সে শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয়,সমস্ত বাংলাদেশের একজন নামকরা বক্তা।কাল থেকে আচ করতে পারছিলাম যে,আগামীকাল বড়সড় একটা জমায়েত হতে যাচ্ছে।তাই হলো!
এখন অনেকে হুজুরকে গালি দিচ্ছে তোহ আবার অনেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে।এখন এটা কি হুজুরের দোষ যে তার জানাজায় মানুষের জমায়েত হয়েছে নাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দোষ যে এমন একজন আলেম ব্রাহ্মণবাড়িয়া তে জন্ম নিয়েছে?

 

ফেসবুকে ঢুকলে গালাগালি চলছে,গ্রুপে গালিগালাজ চলতেছে,বুঝে না বুঝে গালি দিচ্ছে। মেইন টপিক একটাই “ব্রাহ্মণবাড়িয়া”।
এখন আসি আসল কথায়,আল্লামার জানাযায় শুধুমাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয়, আশেপাশের বিভিন্ন জেলার যেমনঃ নরসিংদী,হবিগঞ্জ,কিশোরগঞ্জ,সিলেট ইত্যাদি থেকে মানুষ এসেছে।তারা যে এসেছে এটা ও কি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দোষ? নাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ বাসা থেকে তাদের নিয়ে এসেছে?

এখন আসি ঝগড়া ঝাটির ব্যাপারে।গত দু-তিন সপ্তাহ ধরেই খবরের কাগজ,টিভির হেডলাইন,ফেসবুক সবকিছুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিউজ।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ ঝগড়াটে, বর্বর,অশিক্ষিত ইত্যাদি ইত্যাদি।তোহ কথা হচ্ছে ঝগড়া কোন জায়গায় না হয়? কোন এমন ফেরেশতাদের জায়গা আছে বাংলাদেশে যেখানে ঝগড়া হয় না? ঠিকানা দিন,সেখানে চলে যাব সারাজীবনের জন্য।
হ্যা,প্রশ্ন করতে পারেন এই সময়টাতে ঝগড়া করা কি ঠিক? অবশ্যই না।কিন্তু তাই বলে এভাবে সবাই মিলে এক জায়গার পিছনে লেগে পড়লেন ঝগড়ার বিষয় কেন্দ্র করে? বাহ! বাঙালি আর কিছুতে একতা দেখাতে পারুক আর না পারুক, অন্যের সম্মানহানিতে একতার দেখা মিলবেই।
আর কিছু ফেসবুক রিনাউনেড পার্সন আছেন, যারা এখন হাসিতামাশা করে যাচ্ছেন এই জেলা নিয়ে।তারা মনে হয় বছরখানেক আগে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া তে ঘুরে গিয়েছেন।ঘুরে যাওয়ার পর তাদের বিশাল বিশাল স্ট্যাটাস দেখেছিলাম আমার জেলার ভূয়সীপ্রশংসায়।কিন্তু এখন দেখছি তারা মুখোশওয়ালা।তারাই এখন ট্রল করে বেড়াচ্ছে,মজা নিচ্ছে।বারোবাতারি হওয়ার একটা লিমিট আছে রে ভাই!
অশিক্ষিত,বর্বর,আদিমযুগ এর তকমা ঝুলিয়ে দিচ্ছে নামের পাশে।তোহ ভাই এত শিক্ষিত হয়ে লাভ কি? সেই তোহ ঘুরেফিরে ৬০০০টাকার বালিশ কিনবে আর ৫০০০ ক্যারিং খরচ নিবে সরকার থেকে।

যাজ্ঞে, আমার জেলার একটা নয়, হাজারখানেক দোষ।কিন্তু বাংলার কোন জায়গার মানুষই ধোয়া তুলসি পাতা না।যারা ট্রল না করে, খবরের কাগজ আসলেই ঘাটাঘাটি করে তাদের আসলে বোঝার কথা। আর বাকি অবুঝদের,বোঝানোর ঠ্যাকা আমি নেই নাই।

আর নিজ জেলার কিছু আল্ট্রা মডার্ণ, খ্যাতদের বলতে চাই।তোমরা যারা অপরের সাথে তাল মিলিয়ে নিজের জেলার বদনাম করে যাচ্ছো,, তাদের প্রোফাইলে আমি এখনো (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওষুধের মূল্য হ্রাসের) গর্বিত স্ট্যাটাস খুজে পাচ্ছি। তোহ তোরা এমন বারোবাতারি কেন?

বাংলাদেশ এখন বাংলাদেশের জন্য রিস্ক।মিলাদ,ওয়াজ সবজায়গায় হয়েছিল,হচ্ছে।চাল চুরি,তেল চুরি সব জায়গায় হচ্ছে।ঝগড়া-বিবাদ সব জায়গায় হয়(কোথাও কম,কোথাও বেশি)।কোন এলাকার মানুষই লকডাউন মানছে না।অপরের দোষ না খুজে ঘরে থাকি,ভালো থাকি ❤

আর যদি ট্রল করে,পরের সম্মানহানি করে ভালো থাকা যায় তাহলে তোমরা দীর্ঘজীবী হও ❤

আমার ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।


আকতার হোসেন ভুইয়া,নাসিরনগর

করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে গোটা উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায়ও একটি সুখবর রয়েছে। আর তা হলো নাসিরনগর জুড়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।এখন চলছে ধান কেটে তা ঘরে তুরার পালা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জাপানের অত্যাধুনিক ধান কাটা মেশিন কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে নাসিরনগর সদরের কামারগাঁও এলাকায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার দ্বারা ধান কাটা কর্মসূচির ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ রাফিউদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নাজমা আশরাফী। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক,কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা চিন্ময় কর অপু,উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান,এসিআই মটরস লিমিটেডের সিনিয়র সেলস ম্যানেজার আবদুল্লাহ তালুকদারসহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। কামারগাও এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের যন্ত্র প্রদর্শনীতে কৃষক কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে জমির ধান কেটে ও মাড়াই করে উপস্থিত অতিথি ও কৃষকদের দেখান।

সিলেট অঞ্চলের এসিআই মটরস লিমিটেডের সিনিয়র সেলস ম্যানেজার আবদুল্লাহ তালুকদার জানান; এ মেশিনে ধান কাটা,খর কাটা ও মাড়াই সুবিধা-তিন ধরনের সুবিধা একসাথে পাবে কৃষকরা। এর ফলে কৃষকরা স্বল্প সময়ে কম খরচে তাদের ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। জাপানের তৈরি অত্যাধুনিক এই ধান কাটা মেশিনটি গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা বেশ উপকৃত হবে। চাষীদের সময়,অর্থ সাশ্রয় ও শারীরিক কষ্ট লাঘব হবে এ মেশিনটি ব্যবহারের মাধ্যমে। এই মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ খরচ খরচ কমানো যায়।এই তিন ধরনের কাজ শ্রমিক দিয়ে করাতে হলে চাষীর খরচ পড়ত দ্বিগুণ।

নাসিরনগরে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা কর্মসূচীর উদ্বোধন

সোহেল আহাদ/নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিশ্ব বিখ্যাত বরেণ্য ইসলামী চিন্তবিদ ও আলোচক আল্লামা হযরত মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। করোনা পরিস্থিতিতে হোম কোয়ারেন্টাইন ও লকডাউন উপেক্ষা করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই লাখো মানুষ তাঁর জানাজায় অংশ নেন।
শুক্রবার বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন যুবায়ের আহমেদ আনসারী (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

শনিবার (১৮এপ্রিল) সকাল ১০টায় সরাইল উপজেলার জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদরাসা প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে জানাজায় অংশ নেয়া লোকদের লোকারণ্যে মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে যায়। একদিকে বিশ্বরোড মোড় হয়ে সরাইলের মোড় পর্যন্ত অন্যদিকে আশুগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকে লোকজন। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত কিছু পুলিশ ছিল এক প্রকার নীরব দর্শক।
সরাইল থানার ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু লাখো মানুষ সমাগমের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে জানায় শরীক হন। এতো লোকের সমাগম হবে আমরা চিন্তাও করতে পারিনি। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিল না। তবে বলার পর উপস্থিত লোকজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ান বলে তিনি জানান।

যুবায়ের আহমেদ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির এবং বেড়তলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। এ ছাড়া তিনি একাধিক মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ইসলামী আলোচক হিসেবে তাঁর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে।

যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল

 

বিশ্বজিৎ পাল বাবু :

দেশের সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম প্রয়াত অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকের স্ত্রী এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি’র মা মুক্তিযোদ্ধা জাহানারা হক (৮৬) শনিবার রাত ৩টা ৪০ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।
মন্ত্রীর ঘনিষ্টজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঢাকাতেই তাঁর
লাশ দাফনের কথা রয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
তিন বছরের ব্যবধানে মন্ত্রী তাঁর ভাই, বোনের পর মাকে হারালেন। ২০১৭ সালের ১০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে একটি হাসপাতালে মন্ত্রীর একমাত্র ছোট ভাই
আরিফুল হক রনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা রেখে গেছেন। মন্ত্রীর বড় বোন সায়মা ইসলাম মারাগেছেন ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ঢাকায় মারা যান। তিনি স্বামী ও এক ছেলে রেখেগেছেন। বিয়ের কিছুদিন পর ১৯৯১ সালের ২ জানুয়ারি সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী নূর আমাতুল্লাহ্ রিনা হককে হারানা তিনি।  ২০০২ সালের ২৮ অক্টোবর মারা যান বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর আনিসুল হকে বাবা।

আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৮ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ও ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

 

তিন বছরের ব্যবধানে মন্ত্রী তাঁর ভাই, বোনের পর মাকে হারালেন

নজরুল ইসলাম তোফা:
অর্থ বা সম্পদ মানব জীবনের জন্যে অপরিহার্য হলেও অর্থ কিংবা সম্পদের যথাযোগ্য ব্যবহার নাহলে তা যেন ব্যক্তি এবং সমাজ জীবনে নেমে আসে অকল্যাণ। জানা কথা হলো, সুশীল সমাজ গঠনে প্রয়াসী মানুষ ব্যক্তি ও সমাজজীবনের বৃহত্তর কল্যাণ ও সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার করার জন্যই গড়ে তুলা হয়েছে ‘রাষ্ট্রীয় অনুশাসন এবং অনুকরণীয় ন্যায়-নীতি’। কিন্তু সমাজ জীবনে এমন কিছু লোক থাকে যারা এসব অনুশাসন কিংবা ন্যায়নীতি মান্য করেনা। তারা অন্যকে উৎপীড়ন করে, অন্যের অধিকারেও যেন তারাই অন্যায় হস্তক্ষেপ করে, তারা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে যেন সামাজিক শৃঙ্খলাকে নস্যাৎ করে, সামাজিক স্বার্থ বিরোধী অন্যায় কিংবা অবৈধ কর্মতৎপরতায় লিপ্ত হয়। এরাই সমাজের চোখে অন্যায়কারী ও আইনের চোখেও অপরাধী বলেই বিবেচিত হয়। এদের অপরাধ অবশ্যই দণ্ডনীয়। সুতরাং, বিবেকবান মানুষকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এই বিবেক বান মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করার চেতনাতেই নানা বাঁধার সম্মুখীন করে থাকে, ‘নীতিকথা’ যদি তুলেই ধরি তাহলে বিবেকবান মানুষ হিসেবে অন্যায়কে দিনের পর দিন সহ্য করা ঠিক নয়। আবার বলা যায় যে, এমন অন্যায় সহ্যকারীরাও ঠিক সরাসরি অন্যায় না করলেও অন্যায়কে সহযোগিতা এবং সমর্থন করা কোনো ভাবেই ঠিক হবেনা। কিন্তু দেশের যা পরিস্থিতি কি করবে তারা, অন্যায়কারীর বিরুদ্ধেই সমাজের ভালো মানুষ প্রতিবাদ করতে যে ভয় পায়। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে, প্রতিবাদ করলে ভালো মানুষেরা ঠিক ফেঁসে যায়। বস্তুত অন্যায় প্রবণ মানুষদের সংখ্যা কম হলেও সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষেরা অন্যায়ের প্রতিবাদে যেন বিপদ-ঝুঁকি নীরবেই সহ্য করে থাকে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এখন আতঙ্কিত বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব। এই চরম ক্রান্তিকালে এইদেশে হতদরিদ্র মানুষের সাহায্যের জন্য হাত পাতছে তাদেরই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে। থমকে গেছে তাদের  অর্থনৈতিক কাজ-কর্ম, থমকে গেছে জীবনযাত্রা। এখন  চারিদিকে শুধুমাত্র মৃত্যুর মিছিল ও নিত্যদিনেই অসহায় মানুষের খাদ্য সংগ্রহের নানা দুঃসংবাদ। এ “বাংলাদেশে অদৃশ্য করোনাভাইরাস” যে তাণ্ডব চালাচ্ছে, সেইটাকেই সামাল দিতে পৃথিবীর উন্নত ও মহাশক্তিধর দেশগুলোও হাবুডুবু খাচ্ছে। স্বভাবতই এমন প্রভাবের বাইরে থাকতে পারছে না বাংলাদেশও। ক্রমাগতই বাড়ছে যে করোনার সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বাড়ছে বেকারত্ব কিংবা মানুষের ক্ষুধা। মুখ থুবড়ে পড়েছে এইদেশের অর্থনীতি।
এরি মধ্যে সরকার বিরোধী একটি চক্র না কি হতদরিদ্র মানুষকে উসকে দিয়ে এই সরকারকে বিপাকে ফেলছে।
সরকার গরিব-অসহায় মানুষদের জন্যে সাহায্যে দিচ্ছে না তা নয়। কিন্তু শোনাও যাচ্ছে, এক শ্রেণীর মানুষ তারা এ সংকট মুহূর্তে অসৎ উপায়েই গরীব-অসহায়দের নাম ভাঙিয়ে লুটেপুটে খাচ্ছে। বর্তমানের এই সরকার গরীব- অসহায়দের নানা ভাবে খাদ্য সংকটের মোকাবিলা করা সত্ত্বেও সরকারের জনপ্রতিনিধিরাই যে চাল সহ অন্যান্য কিছু চুরি করছে। কি নিষ্ঠুর এই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। শুনাও যাচ্ছে, এই গরিব অসহায় মানুষরা খাদ্যের জন্যে প্রতিবাদ করলে সে সকল প্রতিনিধিরা তাদের মারছে ও মানসিক আঘাত করছে। সরকারের উচিত হবে খুবদ্রুত তাদেরকে চরম শাস্তি দেওয়া। তারা এই দেশের সাধারণ মানুষদের ভোটে- কখনই নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য না। এ সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও খুব দ্রুত  এগিয়ে আসা উচিত। এখনই সময় মানবতা প্রদর্শনের।
সুতরাং যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে খুব শক্ত হয়ে। হতদরিদ্র মানুষের নিত্যদিনের জন্যে সাধারণ খাবারের অধিকার রয়েছে। আমাদের ভাবনায়  শুরুর মাত্র একমাস না যেতেই ক্ষুধার নতুন রাজ্যে যেন প্রবেশ করছে মানুষ। আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশটার কোনো মানুষ না খেয়ে না মরে সেই লক্ষে সর্ব প্রথম এই সরকারকেই ভাবতে হবে। সম্মিলিত ভাবেই চেষ্টা করতে হবে, যাঁরা পারবে তাঁরাও গরিব অসহায় মানুষের জন্যে  সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। অসহায় মানুষের ইচ্ছা এবং সামর্থ থাকলেও এই ভাইরাসের স্বাস্থ্য-ঝুকির কারনে সবার দরজায় গিয়ে সাহায্য চাওয়া বেশ কঠিন। তাই অনলাইনেও তো পারি মিলিত হয়ে সাহায্য করতে। আপনার অংশগ্রহণ যত সামান্যই হোক না কেন বিশ্বাস নিয়েই পাঠানো চেষ্টা করা উচিত। অন্তত একটি ঠিকানা আছে এখানে দেওয়া যেতেই পারে। যোগাযোগ ঠিকানা –simullovetv24@gmail.com আর তাঁদের, Bkash – 01794178063
বর্তমান সরকার সকল সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের একদিনের বেতনটা কেটে নিয়ে হতদরিদ্র মানুষদের সাহায্যের জন্যে একটি মহৎ কাজ করছে। কিন্তু সকল শ্রেণী পেশার মানুষের এ সরকার সাহায্যের জন্য কোনো আবেদন করতে পারছে না। তাই উচিত হবে, সকল পেশার সামর্থযোগ্য মানুষের এই দেশের গরিব অসহায় মানুষদের জন্য সাহায্য করা। পরিশেষে আবারও বলতেই হচ্ছে অন্যায় স্বার্থ হাসিলের জন্য অর্থকে কোনো মহল বা শ্রেণীর অসৎ মানুষ টোপ হিসেবে কাজে লাগায়। এরাই হীন চরিত্রে মানুষ, সম্পদ হোক বা খাদ্য কিংবা অর্থই হোক লোভের জঘন্য কাজে লিপ্ত হয়ে থাকে। ঠিক এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে তা ঘটছে। এদের ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা, নীতি-আদর্শটা লোপ পায়। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ও সীমাহীন দুর্নীতি  করার প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হলেই যেন উদগ্র অর্থলালসা এবং  অসহায় গরিবদের দেওয়া সামান্য খাদ্যদ্রব্য গুলোকেও  হাত ছাড়া করতেই চায় না। অন্যায় পথে অর্জিত কোনো কিছুই সেই মানুষকে বিবেকহীন ও দাম্ভিক করে তোলে। এক শ্রেণীর মানুষ শুধুই সুযোগ খোঁজে কখন তার সময় আসে চুরি করার বা আত্মসাৎ করার উপযুক্ত সময়। এ ভাবেই সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে, ধনী-দারিদ্র্যের বৈষম্য। গরিব মানুষের খুব সাধারণ খাদ্য দ্রব্যটাকে যারা এমন দুর্দিনে চুরির ইচ্ছা পোষণ করে তারা এক কথায় বলতে গেলেই বলা যায় বিবেকহীন পশুরূপী শয়তান।
লেখক:
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

সরকারের লকডাউনে জনপ্রতিনিধিরাই দরিদ্র মানুষের খাদ্য ভোগ করছে

ফেসবুকে আমরা..