সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ছয় আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড- এবং ৫ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে পৃথক সময়ে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
মামলাগুলো হচ্ছে বিজয়নগর উপজেলার সোহরাব চৌধুরী হত্যা মামলা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডার তুষার মিয়া হত্যা মামলা।

গত সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতুরপুর গ্রামের অটোরিকসা চালক সোহরাব চৌধুরী হত্যা মামলায় তিন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামের মরহুম আওলাদ মিয়ার ছেলে মহরম আলী-(২৮), সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের থলিয়ারা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে মোঃ আলমগীর-(২৮) এবং বিজয়নগর উপজেলার বাগদিয়া গ্রামের মরহুম আলী হোসেনের ছেলে আব্দুল কাদির (৪৮)।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল সকালে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের রফিক চৌধুরীর ছেলে সোহরাব চৌধুরী সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় সোহরাবের চাচাতো ভাই সাচ্চু চৌধুরী বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এদিকে ঘটনার দুদিন পর উপজেলার বুল্লা-টানপাড়া সড়কের একটি সেতুর নিচ থেকে সোহরাবের লাশ পাওয়া যায়।

পরে পুলিশ নিহত সোহরাবের মোবাইল ফোন ট্র্যাকের মাধ্যমে আসামি মহররম আলীকে সনাক্ত করে আটক করে। পরে মহরম আলী আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার করেন এবং তার সাথে মোঃ আলমগীর ও আব্দুল কাদির নামে দুই জন জড়িত থাকার কথা জানান।

মামলায় ১০ জন সাক্ষির সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিজ্ঞ বিচারক ৩ আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।
এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট এসএম ইউসুফ। তিনি বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে এই রায় যুগান্তকারী।

অপরদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, আসামীরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
পরে একই আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডার তুষার মিয়া হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করেন।

এই মামলায় বিজ্ঞ আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডার সোনা মিয়ার ছেলে মোমেন প্রকাশ মোমিন-(২৫) একই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে সুমন-(২৫) ও সহিদুল হকের ছেলে ফাহাদ মিয়া-(২২) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং বাকি ৫ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল ফোন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২০১১ সালের ২৯ জুন বিকেলে পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডার জালাল মিয়ার ছেলে প্রবাসী তুষার মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মামা সাজ্জাদ মাহমুদ বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় আদালত তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পি.পি) এস.এম ইউসুফ বলেন, বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত এই রায় দিয়েছেন। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। বাদি পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে আরো ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম।
###

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় দিন দুপুরে অফিসে ঢুকে পিস্তল ঠেকিয়ে সাড়ে আট লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার বিকেলে ব্রিটিশ ট্যোবাকো কোম্পানির পরিবেশকের (ডিস্ট্রিবিউটর) পৌর এলাকার লাল বাজারের অফিসে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে সন্ধ্যা সাতটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয় নি।

কোম্পানির সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রীতম পাল মুন্না ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বেলা চারটার কিছু পর আমরা অফিস কক্ষে ১৩-১৪ জন মিলে কাজ করছিলাম। এ সময় মোটর সাইকেলে করে আসা তিনজন অফিসে ঢুকে। তারা হেলমেট পড়া ও মুখে মাস্ক লাগানো। তারা আমাদেরকে পিস্তল ঠেকিয়ে প্রথমেই আলমীরা ও খোলা অবস্থায় থাকা সাড়ে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে আমাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে নেয়।

সেলস ম্যানেজার মানিক দেব বলেন, ‘আমি বাড়িতে খাবার খেতে যাওয়ার পরপরই এ ঘটনা ঘটে। সিসি টিভির ফুটেজে ঘটনার বিস্তারিত দেখা যাচ্ছে। পুলিশ ও আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসে পরিদর্শন করে গেছেন।

এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রসুল আহমেদ নিজামী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে তিনি ওই অফিসে যান। কিভাবে কি হয়েছে সেটা জানার চেষ্টা চলছে। অফিস সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত থাকতে পারেন বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন।
###

দিনদুপুরে আখাউড়ায় পিস্তল ঠেকিয়ে সাড়ে আট লাখ টাকা ছিনতাই

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের খলাপড়া গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন খলাপাড়া গ্রামের হোসেন মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম-(৩৭) এবং কন্যা নিলা আক্তার-(২১)। এ ঘটনায় সদর মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ জানায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খলাপাড়া গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনশত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদেরকে রবিবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
###

তিনশত পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদক ব্যবসায়ী মা-মেয়ে গ্রেপ্তার

সুমন আহম্মেদঃ
শিশু নির্যাতন নিপীড়ন, ধর্ষণ বন্ধ ও হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খেলাঘরের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে খেলারঘর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সহ-সভপাতি রতন কান্তি দত্তের সভাপতিত্বে ও খেলাঘর জেলা কমিটির সাহিত্য সম্পাদক জুয়েলুর রহমানের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাট্য সংস্থার সভাপতি সাংবাদিক মনজুরুল আলম, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারন সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম,

সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান হোসেন, জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পিযূষ কান্তি আচার্য, খেলাঘর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, জেলা নাগরিক কল্যাণের সভাপতি মো. ইয়াকুব আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আল-আমীন শাহীন, সাংবাদিক উজ্জল চক্রবর্তী, বিশ্বজিৎ পাল বাবু, রক্তদানের সংগঠন “আত্মীয়” এর সমন্বয়ক সমীর চক্রবর্তী প্রমুখ।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারাদেশে আশঙ্কাজনকভাবে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে, যা রাষ্ট্রের জন্য খুবই উদ্বেগজনক। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
###

শিশু নির্যাতন বন্ধ ও হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবিতে

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ধর্মতীর্থ এলাকার বধ্যভূমি থেকে শহীদদের নামফলক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। আবহাওয়া অনুকুলে এলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৮ অক্টোবর উপজেলার চুন্টা সেনবাড়ির ২২ জনসহ সরাইল থানায় ও কালিকচ্ছ ক্যাম্পে আটক শতাধিক লোককে ধর্মতীর্থ নৌ ঘাটে লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বর্বর পাকবাহিনী। তবে সবার পরিচয় মেলেনি। পরবর্তীতে ধর্মতীর্থ বধ্যভূমি হিসেবে জায়গাটি পরিচিতি পায়।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার সহায়তায় ওই বধ্যভূমিতে ১২ ফুট উচ্চতা এবং ৪ ফুট প্রস্থের লোহার তৈরি একটি ফলক স্থাপন করা হয়। ফলকে ৪৬ জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা লাগানো হয়। পরবর্তীতে ফলক থেকে নামের তালিকাটি চুরি হয়ে যায়।

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানসহ অনেকে বধ্যভূমিটি সরজমিনে পরিদর্শন করেন। গত বুধবার রাতে বধ্যভূমির ওই নাম ফলকটির নিচের ঢালাই করা পিলারের লোহার তৈরি খুঁটি ভেঙ্গে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। বধ্যভূমির জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এমন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বধ্যভূমি সংলগ্ন চাকসার গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রশিদ (৫৫), আবদুল মতালিব মিয়া (৫৩) ও জনাব আলী (৫৬) বলেন, ‘রাসেল ও বাবু মুন্সিসহ বেশ কয়েকজন মিলে ফলকটি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তারা এটা করেছে।’
সরাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জায়গাটি বধ্যভূমি হিসেবে অনেক আগেই চিহ্নিত হয়েছে।

অতীতেও এমন ঘটনা সেখানে ঘটেছে। এবার চিনতে পেরেছি। বুধবারের ঘটনা ঘটিয়েছে মুসা চেয়ারম্যানের ছেলে রাসেল ও বাবু মুন্সি নামের একটি ছেলে। আমরা এ ঘটনার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আবহাওয়া ভাল হলে এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি দিব।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ এস এম মোসা সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘নামফলক ভাঙ্গার বিষয়টি আমি শুনেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’
###

সরাইলে বধ্যভূমি থেকে শহীদের নাম ফলক উধাও

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি এবং অপর তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের বহুল আলোচিত গৃহবধূ কামরুন্নাহার তূর্না হত্যা মামলায় স্বামী আরিফুল হক রনিকে-(৩০) মৃত্যুদন্ড এবং বেলা সাড়ে ১১টায় একই আদালত বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের রিপন মিয়া হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- এবং রিপন মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগমকে-(৩৫) বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

এই মামলার যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভেলানগর গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া-(৪৫), বাতেন মিয়ার ছেলে মোঃ কবির-(৩৪) এবং কাজী মোস্তফার ছেলে মোঃ হাবিব-(২৩)।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম আশুগঞ্জের বহুল আলোচিত গৃহবধূ কামরুন নাহার তূর্না হত্যা মামলার রায়ে তূর্নার স্বামী এবং মামলার একমাত্র আসামী আরিফুল হক রনিকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রনি আশুগঞ্জ উপজেলার চর-চারতলা গ্রামের আমিরুল হকের ছেলে। রায় ঘোষনার সময় রনি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে আশুগঞ্জ উপজেলার চর-চারতলা গ্রামের আমিরুল হকের ছেলে আরিফুল হক রনির সাথে তার চাচা মফিজুল হকের একমাত্র কন্যা কামরুন নাহার তূর্নার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিলো। পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল রাতে তূর্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রনি। পরে তার লাশ বাড়ির একটি পরিত্যক্ত পানির ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়। হত্যার সময় তূর্না তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল তূর্ণার বাবা মফিজুল হক স্বামী রনিকে একমাত্র আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে রনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। বিজ্ঞ বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কয়েক মাস কারাভোগের পর রনি জামিনে মুক্ত হয়ে গা ঢাকা দেন।
এদিকে মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তূর্ণার বৃদ্ধ পিতা মফিজুল হক। তিনি বলেন, পলাতক রনিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকরের জন্য সরকার প্রধান ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানাই।

এদিকে মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও ভারপ্রাপ্ত পিপি এস.এম ইউসুফ। তিনি বলেন, আদালতের রায়ে আমরা খুশী।
অপরদিকে বেলা সাড়ে ১১টায় একই আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের রিপন মিয়া হত্যা মামলার রায়ে উপজেলার ভেলানগর গ্রামের শিপন মিয়া (৪৫), মোঃ কবির (৩৪) ও মোঃ হাবিব (২৩) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রত্যেককে আরো ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগমকে (৩৫) বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের রিপন মিয়ার সাথে উপজেলার ভেলানগর গ্রামের শিপন মিয়ার মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধ চলছিল। পাশাপাশি রিপনের স্ত্রী আমেনা বেগমের সাথে শিপনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিলো।
এসবের জেরে গত ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারির কোনো এক সময় আসামিরা রিপনকে হত্যা করে তার শ্বশুর বাড়ি ভেলানগর গ্রামের একটি জমিতে পুতে রাখে। পরে ১০ জানুয়ারি দুপুরে মাটি খুঁড়ে রিপনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন নিহত রিপনের ভাই বারু মিয়া বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে উপরোক্ত চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে আমেনা বেগম জামিনে কারামুক্ত ছিলেন। বাকিরা সবাই কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও ভারপ্রাপ্ত (পি.পি) এস.এম ইউসুফ সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মোফাক খায়রুল ইসলাম বলেন, মামলার এক নম্বর আসামি আমেনা বেগমকে খালাস দেয়ায় আমি সন্তুষ্ট। তবে দ-প্রাপ্ত বাকি আসামিদের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
###

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক হত্যা মামলার রায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড ॥ তিনজনের যাবজ্জীবন

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে কেরামবোর্ড খেলাকে কেন্দ্র করে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩০জন আহত হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

এলাকাবাসী জানান, গত শনিবার কেরামবোর্ড খেলা নিয়ে হাজীপুর গ্রামের পূর্বপাড়ার মস্তু মিয়ার ছেলে আবেদের সাথে পশ্চিম পাড়ার শিশু মিয়ার ছেলে শরিফ মিয়ার হাতাহাতি হয়।

বিষয়টি মিমাংসা করতে সোমবার রাতে উভয়পক্ষ সালিশে বসে। সালিশে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়ায় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৩০জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

আহতদের মধ্যে আব্দুল খালেক-(৮৫), লোকমান মিয়া-(৪৫), লিটন মিয়া-(২৫), মাসুক মিয়া-(৩৮), শামীম মিয়া-(২৬), আলী আহাম্মদ-(৪৬), আইয়ুব মিয়া-(৩৫), হুমায়ূন মিয়া-(৩০), মজিদ মিয়া-(৪৫), মুজিবুর রহমান-(৪২), নূরুল আমিন-(৩৫), মোঃ রাসেল-(২৫), জিয়াউর রহমান-(৩৫), সাচ্চু মিয়া- (৪০), আরব আলী-(৪০), জীবন মিয়া-(২৩) এবং সামসু মিয়া-(৪২) কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়জুল আজিম বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রনে আছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
###

কেরামবোর্ড খেলাকে কেন্দ্র করে বিজয়নগরে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত-৩০

সুমন অহম্মেদঃ
ভারতে মুসলমানদের উপর হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা। সোমবার দুপুরে শহরের কান্দিপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার সামনে থেকে কওমি ছাত্র ঐক্য পরিষদের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।

জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি আব্দুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আনোয়ার বিন মুসলিম, মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম, মাওলানা জাকারিয়া খাঁন, জেলা ইসলামী ঐক্যজোটের প্রচার সম্পাদক মুফতি এনামুল হাসান ও কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কাউসার আলম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতে মুসলমানদের উপর হামলা ও নির্যাতন করা হলেও ভারতীয় সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেনা। বিশ্বের যে কোন দেশে মুসলমানদের উপর হামলা হলে আমরা তার প্রতিবাদ করে যাব।

বক্তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, আপনি ভারত সরকারকে বলুন মুসলমানদের উপর হামলা বন্ধ করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। এ সময় বক্তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষনা দেন।
###

ভারতে মুসলমানদের উপর হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কওমি মাদরাসার ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল

সুমন অহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের সখ্যতার অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও একজন ইউপি চেয়ারম্যান।

সোমবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জনপ্রতিনিধিগন এই অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীরা বলেন, পুলিশ নিরীহ ও নিরপরাধ যুবকদের আটক করে তার পকেটে মাদক ঢুকিয়ে বাণিজ্য করেন।

উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মোসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আইন-শৃংখলা কমিটির সদস্যরা।

সভায় উপজেলার শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন অভিযোগ করে বলেন, শাহাজাদাপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা এ.এস.আই গোপী সরকার স্থানীয় মাদক ব্যবসায়িদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। ইউনিয়নের মলাইশ, নিয়ামতপুর, ধাউরিয়া ও শাহজাদাপুর গ্রামে তাঁর অনেক আত্মীয় আছেন। ওইসব আত্মীয়দের কয়েকজনকে তিনি সোর্স নিয়োগ করেছেন। এসব সোর্সদের সহায়তায় তিনি মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের আটক করেন। পরে সোর্সদের মাধ্যমেই চুক্তি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। তিনি গোপী সরকারকে ওই ইউনিয়ন থেকে প্রত্যাহার করার দাবি করেন।

সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, মাদকের বিষয়টিকে পুঁজি করে থানার কতিপয় পুলিশ নিরীহ যুবকদের হয়রানি করছে। কৌশলে বাণিজ্য করছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে কিছু পুলিশ সদস্য যাকে সামনে পাচ্ছেন তাকেই (ছাত্র, যুবক) আটক করেন। পরে কৌশলে ছেলেদের পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট বা ফুরিন্দা ঢুকিয়ে দিয়ে মাদক ব্যবসায়ি বা সেবনকারী সাজিয়ে চুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্য করে তাদেরকে ছেড়ে দেন। এভাবে চলতে পারে না। তিনি পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার অনুরোধ করেন।

সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মোসা সভায় উপস্থিত পুলিশের প্রতিনিধির উদ্যেশ্যে বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে তদন্ত দ্রুত ব্যবস্থা নিন।

এ ব্যাপারে সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূরুল হক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এ.এস.আই গোপী সরকার বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা।
###

সরাইলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক ব্যবসায়িদের সাথে পুলিশের সখ্যতার অভিযোগ

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুইশত পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইদুল-(৩৪) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের বিয়াল্লিশ্বর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাইদুল একই ইউনিয়নের সোহাতা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত আশু মিয়ার ছেলে।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে সদর উপজেলার বিয়াল্লিশ্বর গ্রামের মলি¬কা সিএনজি পাম্পের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ২শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তাররকৃত সাইদুল একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।রোববার সকালে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
###

দুইশত পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

ফেসবুকে আমরা..