স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোঃ হাবিবুর রহমান বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তান্ডবের ঘটনা স্বাধীনতা বিরোধী ও ইতিহাস-ঐতিহ্য বিরোধী কাজ। তিনি আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেফাজতের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
এ সময় ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান আরো বলেন, বাংলাদেশকে যেন পিছিয় দেওয়া যায়- এটি সে ধরনের স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের কাজ বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, কোন সভ্য মানুষের পক্ষে এ ধরনের কাজ করা সম্ভব নয়। এটি সম্পূর্ন স্বাধীনতা বিরোধী ও ইতিহাস ঐতিহ্য বিরোধী কাজ। যারা এই ঘটনার পেছনে ইন্ধনদাতা, যারা পরিকল্পনাকারী, তারা ঘটনাস্থলে থাক বা না থাক, অবশ্যই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, জেলা পুলিশ, সিআইডি এবং পিবিআই সম্মিলিতভাবে মামলাগুলো তদন্দ করছে। আমরা সবাই সমন্বয়ের মাধ্যমে তদন্ত করছি। ইতিমধ্যে মামলাগুলো তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কারা ঘটনার সাথে জড়িত ছিল, আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করছি।
ভিডিও ফুজে থেকে আসামীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যেই অনেককেই শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো মামলাই ঝুলে থাকবেনা, যত দ্রুত সম্ভব আমরা সব মামলা নিস্পত্তির দিকে যাব।
তিনি বলেন, গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ব্যাপী হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তান্ডবের ঘটনায় দায়েরকৃত ৫৬টি মামলার মধ্যে ৯টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এছাড়াও ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে মাদরাসার ছাত্রদের চালানো তান্ডবের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা গুলোর মধ্যে ৫টি মামলার তদন্তভারও সিআইডিকে দেয়া হয়েছে।
এর আগে ডিআইজি হাবিবুর রহমান হেফাজতের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কার্যালয়, সুর স¤্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান, সিআইডির পুলিশ সুপার মোঃ শাহরিয়ার রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ বড়–য়া, সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। হামলাকারীরা সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরিতে পরিনত করে। এ সব ঘটনায় মোট ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ শনিবার সকাল পর্যন্ত ৩৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।