স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণটিকা কার্যক্রম শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। জেলার ৩০৬টি বুথে শনিবার সকাল ৯টা থেকে গণটিকা দেয়া শুরু হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। তবে বেশীর ভাগ বুথে দুপুর ১২টার মধেই শেষ হয়ে যায় টিকাদান।

এদিকে জেলার সরাইল উপজেলার অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক মহিলাকে দুইবার টিকা দেয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নোমান মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে গণটিকাদান কর্মসূচী চলার সময় বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া প্রমুখ। প্রতিটি কেন্দ্রে নিবন্ধনকৃত ২০০জনকে টিকা দেয়া হয়।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলার ৯৮টি ইউনিয়ন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের ১১০টি কেন্দ্রের ৩০৬টি বুথে শনিবার সকাল ৯টায় একযোগে টিকা দেয়ার কাজ শুরু হয়। প্রতিটি বুথে টিকা দেয়ার জন্য দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী, তিনজন স্বেচ্ছাসেবক ও ১জন সুপারভাইজার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও প্রতিটি বুথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিলো।

সরজমিনে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের হুমায়ূন কবির পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ নং ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজ, ২ নং ওয়ার্ডের মেড্ডা (পশ্চিম) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৮ নং ওয়ার্ডের পৌর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯নং ওয়ার্ডের সাহেরা গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১০ নং ওয়ার্ডের নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা মানুষের উপচেপড়া ভীড়। আলাদা লাইনে দাড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নারী-পুরষসহ ২৫ বছরের বেশি বয়সি লোকেরা টিকা নিচ্ছেন।

৪নং ওয়ার্ডের হুমায়ূন কবির পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা পূর্ব পাইকপাড়ার বাসিন্দা বেবি রাণী সাহা বলেন, সরকার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিনামূল্যে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করেছে এটা ভাবা যায়না। তিনি টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

একই কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা লক্ষণ সাহা নামক এক ব্যক্তি বলেন, দেরিতে হলেও নিজের এলাকায় টিকা দিতে পেরেছি, এটাই বড় কথা। তিনি বলেন, এভাবে যদি সারা দেশে টিকা গণটিকা কার্যক্রম চালানো হয় তাহলে হয়তো আমরা সহসাই দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে পারবো।

টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর সভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান আনসারী বলেন, প্রথম দিনেই টিকার দেয়ার ব্যাপারে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। অনেকেই টিকা দিতে এসেছেন তবে যাদের নিবন্ধন আছে শুধু তাদেরকেই টিকা দেয়া হয়েছে।

এদিকে পৌর সভার ৯ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মৌড়াইল সাহেরা গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় টিকা দেয়ার জন্য মানুষের ভীড়। ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ ফারুক মিয়া বলেন, কেন্দ্রে আসা সবাই টিকা দিতে পারেনি। দুইশত টিকা সাড়ে ১১টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে সরাইল উপজেলার অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা গ্রামের মুসলিম খাঁর স্ত্রী রোজিনা বেগম দুইবার টিকা গ্রহণ করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নোমান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই মহিলার স্বামীর সাথে তার কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই মহিলা সকালে একবার টিকা দিয়ে সাথে থাকা কার্ডটি টিকাদান কেন্দ্রের টেবিলে রেখে বাড়ি চলে যান। পরে প্রায় ১ ঘন্টার ব্যবধানে ওই মহিলা আবার কেন্দ্রে এসে তথ্য গোপন করে আবার টিকা নেন। দুইবার টিকা নেয়ায় ওই মহিলার কোন ধরনের সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে ডাঃ নোমান মিয়া বলেন, আশাকরি কোন ধরণের অসুবিধা হবেনা। তিনি বলেন, ওই মহিলা তথ্য গোপন করে নিজেই দুইবার টিকা নিয়েছেন। এতে অন্য কারো দোষ নেই।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরামউল্লাহ বলেন, সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে জেলার ৩০৬টি বুথে গনটিকা দেয়া হয়েছে। কোথাও কোন ধরনের ঝামেলা হয়নি। সরাইলের এক মহিলার দুইবার টিকা নেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। সংশ্লিষ্টদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলবেন। সিভিল সার্জন ডাঃ একমরাম উল্লাহ আরো বলেন, এভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মোট ৬১ হাজার ২শ লোককে টিকা দেয়া হবে। তিনি বলেন, পরবর্তী টিকা আগামী ১৪ আগষ্ট দেয়া সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ দৌলা খাঁন বলেন, টিকা নিয়ে দুঃচিন্তার কোন কারণ নেই। পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকা দেয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণটিকা কার্যক্রম শুরু


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে র‍্যাব-১১ সদস্যদের বহনকারী একটি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নয়জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলার শাহবাজপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে চারজনের নাম পাওয়া গেছে, এরা হলেন ক্যাপ্টেন তৌফিক আহমেদ, কর্পোরাল জাহিদুল ইসলাম, নায়েক বেলাল হোসেন ও কনস্টেবল আক্কাস আলী।

এ ব্যাপারে বিশ্বরোড খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহজালাল আলম বলেন, শনিবার সকাল ৯টার দিকে র‍্যাব-১১ সদস্যদের বহনকারী একটি মাইক্রোবাস হবিগঞ্জের দিকে যাওয়ার পথে শাহবাজপুর এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা হঠাৎ করে মহাসড়কে উঠে পড়লে অটোরিকশাটিকে রক্ষা করতে গিয়ে র‍্যাব সদস্যদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।

এতে গাড়িতে থাকা ৯জন কমবেশী আহত হন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

সরাইলে দুর্ঘটনার কবলে র‍্যাবের মাইক্রোবাস


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনাভাইরাস মহামারিকালে চিকিৎসা সংকটের কথা চিন্তা করে রোগীদেরকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্যে চালু হয়েছে “টেলি মেডিসিন সেবা”। ফোন করলেই রোগীরা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসদের সেবা পাবেন।
মানবিক সেবামূলক সংগঠন “বাতিঘর” ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে ১০ সদস্যের একটি চিকিৎসক টিম নিয়ে শনিবার সকাল থেকে এই সেবা কার্যক্রম চালু হয়।

“বাতিঘর” ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আজহার উদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রোগীরা তাদের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টাই বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে রোগীদের সুবিধার্থে ১০টি হটলাইন নাম্বার ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে। ১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের মাধ্যমে শ্বাসকষ্টে ভোগা ও মুমুর্ষ রোগীদেরকেও সেবা দেয়া হবে।

এছাড়াও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামাদের মরদেহ কবর ও শেষকৃত্যানুষ্ঠানের ব্যবস্থাও আছে তাদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সদ্য অবসরে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ. শওকত হোসেন চিকিৎসক টিমের সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন। টেলিমেডিসিন চিকিৎসক টিমে আরো রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফাইজুর রহমান ফয়েজ, ডাঃ খোকন চন্দ্র দেবনাথ, ডাঃ সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, ডাঃ শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ, ডাঃ মাহফিদা আক্তার হ্যাপি, ডাঃ ইনজামামুল হক সিয়াম, ডাঃ আকিব জাবেদ রাফি, ডাঃ শাখাওয়াত তানভীর তানিম ও ডাঃ তানভীর চৌধুরী।

এ ব্যাপারে বাতিঘরের চিকিৎসক টিমের সমন্বয়ক ডাঃ মোঃ শওকত হোসেন বলেন, করোনার সংক্রমণ ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখতে আমরা এই সেবার ব্যবস্থা করেছি। করোনাকালে ঘরে বসেই সাধারণ মানুষ বিনামুল্যে আমাদের সেবা পাবেন। এই উদ্যোগের ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দারা ফোন করে ঘরে বসে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালু হয়েছে বিনামূল্যে টেলি মেডিসিন সেবা


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকার ঘোষিত গত দুই সপ্তাহের লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মুখে মাস্ক না পড়ে অযথা বাইরে ঘুরাফেরা, দোকানপাট খোলা রাখাসহ সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অমান্য করায় ২ হাজার ১৩২ জনকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গত ২৩ জুলাই (শুক্রবার) সকাল থেকে গত ৫ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪দিনে জেলা সদরসহ জেলার ৯টি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২ হাজার ১৩২ জনকে ১০ লাখ ৬১ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করেন।

শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত বৈদ্য বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন মানার জন্য জনসাধারণকে বার বার বলা হচ্ছে। লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা সদরসহ জেলার ৯টি উপজেলায় ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন। পাশাপাশি মাঠে রয়েছেন সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ।

তিনি বলেন, গত ২৩ জুলাই সকাল থেকে ৫ আগষ্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪ দিনে জেলায় সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ,নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮ এর ধারা সমূহের লংঘনের অপরাধে ২১৩২ জনকে ১০ লাখ ৬১ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, জনস্বার্থে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

দুই সপ্তাহের লকডাউনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জরিমানা

ফেসবুকে আমরা..