স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের কর্মসূচী চলাকালে শহরজুড়ে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর তান্ডব ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসকারীদের বিচার চেয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মুফতি আবদুর রহিম কাসেমি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।

গ্রেপ্তারকৃত মুফতি আবদুর রহিম কাসেমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষক ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন অভিযোগের কারনে গত বছরের ১ ডিসেম্বর তাকে জামিয়ার শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এমনকি তাকে মাদরাসায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচী চলাকালে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর গত ২৩ এপ্রিল তিনি সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বিবৃতিতে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসকারীদের বিচার চান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তান্ডবের ঘটনার পর পরই আত্মগোপনে চলে যান মুফতি আবদুর রহিম কাসেমি।
মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রাম থেকে কাশেমিকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোঃ রইছ উদ্দিন মুফতি আবদুর রহিম কাসেমিকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মাওলানা আব্দুর রহিম কাসেমী বিগত ২০১৬ সালে ও গত ২৬,২৭ ও ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তান্ডবের ঘটনার মূলহোতা। তিনি তান্ডবের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুফতি আবদুর রহিম কাসেমি স্বীকার করেছেন, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কাশেমী জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসাসহ আশপাশের বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র- শিক্ষককে নিয়ে ব্যাপক তান্ডবলীলা চালায়। এ সময় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

তিনি বলেন, মুফতি আবদুর রহিম কাসেমিকে ২০১৬ সালের মামলাসহ একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
উল্লেখ্য মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়।

এসময় হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তনসহ সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরিতে পরিনত করে।

তান্ডবের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ সকল মামলায় ৪১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ হাজার লোককে আসামী করা হয়। পুলিশ মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব মামলায় ৪১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন হেফাজত নেতা মুফতি আবদুর রহিম কাসেমি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাড়ে ৩৭ কেজি গাঁজা ও মাদক বিক্রির নগদ ৪ হাজার টাকাসহ ৫ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪-এর ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার ভোর রাতে গত সোমবার রাতে পৃথক অভিযানে সদর উপজেলার নন্দনপুর, আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর ও আশুগঞ্জ টোলপ্লাজার সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় গাঁজাবহনকারী একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে র‌্যাব অফিস থেকে পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর থেকে মাদক ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন-(৩২) কে ১০ কেজি গাঁজা ও মাদক বিক্রির নগদ ৪ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কুতুব উদ্দিন কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের ধন মিয়ার ছেলে।


অপর অভিযানে সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় র‌্যাব সদস্যরা আশুগঞ্জ টোলপ্লাজার সামনে একটি প্রাইভেট কার আটক করে। পরে প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী মোঃ শহিদ মিয়া-(৩০) ও মোঃ ইব্রাহীম-(৪০) কে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায়।

অপরদিকে মঙ্গলবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা সদর উপজেলার নন্দনপুর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী মোঃ রনি খন্দকার-(২৫), মোঃ রুবেল-(২৫) মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে সাড়ে ১১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব ঘটনায় সদর ও আশুগঞ্জ থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রেস রিলিজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড হাইওয়ে থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেছেন মোঃ শাহজালাল। গত সোমবার বিকেলে তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেন। এর আগে তিনি ফরিদপুর জেলার করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবকালে বিশ্বরোড হাইওয়ে থানার আক্রমনের পর গত ২৮ এপ্রিল বিশ্বরোড থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মোঃ শাখাওয়াত হোসেনকে গাজীপুর বদলি করা হয়।

বিশ্বরোড হাইওয়ে থানায় নব-যোগদান করা ওসি মোঃ শাহজালাল দায়িত্বপালনকালে সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইওয়ে থানার ওসি হিসেবে মোঃ শাহজালালের যোগদান


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সিএনজিচালিত অটোরিকসার সাথে ট্রাক্টরের মুখোমুখী সংঘর্ষে কাউছার মিয়া-(৩৫) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সদরের জিলুকদার পাড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত কাউছার মিয়া উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বেড়তলা গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে নাসিরনগর থেকে যাত্রীবাহি একটি সিএনজিচালিত অটোরিকসা সরাইল আসার পথে সরাইল-নাসিরনগর আঞ্চলিক সড়কের জিলুকদারপাড়ায় ট্রাক্টরের সাথে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকসা যাত্রী কাউছার মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ কবির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সরাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় অটোরিকসার যাত্রী নিহত

ফেসবুকে আমরা..