সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বুধবার ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালের অনুষ্ঠিত কর্মশালায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাহ আলম।

ডাঃ কাওছার হাবিবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ রাফিউদ্দিন আহম্মেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজগর আলী, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকিব উদ্দিন।
বক্তব্য রাখেন মা-মনি’র উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ সামছুল আলম, স্বাস্থ্য সহকারি শরিফুল রহমান, শফিউল আলম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হুমায়ুন কবির খান ও ওয়ার্ড ইনচার্জ আসমা আক্তার।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, এডিস মশার আক্রমনের ফলে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বিস্তার ঘটে। তাই ডেঙ্গু রোগের এডিস মশার বংশ বিস্তার ও ডেঙ্গু নিয়ে আতংকিত না হয়ে ব্যক্তি,পরিবার ও সমাজকে এ থেকে মুক্ত রাখার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। কর্মশালায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ এনজিও’র প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
###

নাসিরনগরে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালা

সুমন আহম্মেদঃ
‘বিশ্বজুড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে পথ চলার বছরপূর্তি হয়েছে অনলাইন টিভি ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভি’র। আর এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজন করা হয় এক অনুষ্ঠানের। আর এতে প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তি,সাংবাদিক,সাহিত্যিক এবং সংস্কৃতি কর্মীদের সরব উপস্থিতিতে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি খ আ ম রশিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো: শামসুজ্জামান। অতিথি হিসেব আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার প্রশান্ত বৈদ্য,ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মনজুরুল আলম,সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন,অনুশীলন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি আবদূন নূর,প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন জামি।অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ড্রিম ফর ডিজএ্যাবেলিটির মো: হেদায়েতুল আজিজ মুন্না। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তৃতা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভির কর্নধার সাংবাদিক সাব্বির আহমেদ সুবীর। একবছর আগে যাত্রা শুরু করা ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে এরই মধ্যে দর্শক-শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন অনলাইন ভিত্তিক এই টেলিভিশন এলাকার মানুষের সংবাদ চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা রাখছে। সংবাদ পরিবেশনায় নতুনমাত্রা যুক্ত করা ছাড়াও সংবাদের বিষয়-বৈচিত্র্যের কারনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভি এগিয়ে গেছে। আগামীদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষা-সংস্কৃতি,ঐতিহ্য,উন্নয়ন-অগ্রগতির খবর তুলে ধরা ছাড়াও এই জেলার মানুষের সুখ-দুখের খবর তুলে ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভি তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দৈনিক প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি শাহাদত হোসেন। আলোচনা সভার পর কেক কাটেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজা,সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক মো: সাদেকুর রহমান ও আ ফ ম কাউসার এমরান,দৈনিক মানবজমিনের ষ্টাফ রিপোর্টার জাবেদ রহিম বিজন,বাংলাভিশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি আশিকুল ইসলাম,বাংলাদেশ প্রতিদিন’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন বেলাল,এনটিভি’র ষ্টাফ রিপোর্টার শিহাব উদ্দিন বিপু,যমুনা টিভি’র শফিকুল ইসলাম,৭১ টিভির জালাল উদ্দিন রুমি,সংবাদ প্রতিদিন’র প্রতিনিধি মজিবুর রহমান খান,আরটিভি’র আজিজুর রহমান পায়েল,নিউজ টুয়েন্টি ফোরের মাসুক হ্নদয়,একুশে টিভি’র মীর মো: শাহীন,এসএ টিভি’র মনিরুজ্জামান পলাশ,মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের আশেক মান্নান হিমেল,জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর প্রতিনিধি আজিজুল আলম সঞ্চয় ও দৈনিক নবচেতনার শফিকুল আলম স্বপন।
###

বিশ্বের দরবারে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে তুলে ধরছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া টিভি বছরপূর্তির আলোচনায় বক্তারা

সুমন আহম্মেদঃ
অবশেষে সরাইলের ধর্মতীর্থ এলাকার ঐতিহাসিক বধ্যভূমিতে “ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যার স্থান, এই স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হইল”। এধরনের লেখা সম্বলিত একটি সাইনবোর্ড টানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গত সোমবার বিকেলে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে দখলকৃত ওই জায়গায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গণহত্যার স্থানের স্বীকৃতির সাইনবোর্ডটি স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মোসা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা,

মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ সহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। এ সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে দেওয়া অনাপত্তিপত্রের প্রতিবেদনটিও তিনি বাতিল ঘোষণা করেন। ফলে দখলমুক্ত হয়েছে বধ্যভূমি ও সওজের জায়গা। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ছাড়াও স্থানটি নৌঘাট হওয়ায় নিয়মিতই অভিযান চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করত।

এদের মধ্যে চুন্টার সংখ্যালঘু সমাপ্রদায়ের এক পরিবারের ২২ জন হত্যার ঘটনাটি ছিল চাঞ্চল্যকর। এসব কারনে এ জায়গাটি বধ্যভূমি হিসাবে স্বীকৃত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে’ও এর দালিলিক প্রমাণসহ উল্লেখ করেছেন অনেক লেখক। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন ধরে ওই বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় একটা কিছু করার চেষ্টা করে আসছিলেন। সওজের খাল সংলগ্ন পশ্চিম পাশে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ মৌজার ৪৭৩৬ দাগের ২২ শতাংশ ভূমির মালিক ছিলেন চাকসার গ্রামের আবদুস সাত্তার ও তার ভাতিজা আবদুল আহাদ ছিলেন ৮৮৩১ দাগের ১২ শতক জায়গার মালিক। জায়গাটির ৪০-৫০ গজের মধ্যে রয়েছে একাধিক বসতবাড়ি।

১০ বছর আগে ওই দুইদাগের ৩৪ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেন ফরহাদ রহমান। পরে তিনি পানি নিষ্কাশনের খাল ধর্মতীর্থ নৌঘাট, ধর্মতীর্থ বধ্যভূমি ও সওজের জায়গা পর্যন্ত মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলেন। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার সহায়তায় ওই বধ্যভূমিতে ১২ ফুট উচ্চতা ও ৪ ফুট প্রস্থের লোহার তৈরী একটি ফলক স্থাপন করেন। ফলকে ৪৬ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকাযুক্ত সাইনবোর্ড লাগানো হয়। এক বছর পরই সাইনবোর্ডটি চুরি হয়ে যায়।

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বধ্যভূমিটি সরজমিনে পরিদর্শনও করেছেন। গত ১৮ জুন ওই জায়গায় ‘এম আবদুল্লাহ ফরহাদ ফিলিং ষ্টেশন’ নামে একটি পেট্রোল পাম্প করার অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অনাপত্তির আবেদন করেছেন ফরহাদ রহমানের ছেলে আবদুল্লাহ ফরহাদ। ৪ জুলাই জেলা প্রশাসক ২০৪ নং স্বারকে তদন্ত করে অনাপত্তি প্রতিবেদন চেয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেন। ইউএনও দেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াংকাকে। সহকারি কমিশনারের মৌখিক নির্দেশে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরী করেন সার্ভেয়ার ও কাননগো মো. ইব্রাহিম খান। সহকারি কমিশনার প্রতিবেদনটি ৯ জুলাই প্রেরণ করেন ইউএনও’র কাছে। ইউএনও ওই প্রতিবেদনটি গত ১০ জুলাই প্রেরণ করেছেন জেলা প্রশাসকের দফতরে। আর ১০ জুলাই রাতেই বধ্যভূমি থেকে উধাও হয়ে যায় ৪৬ জন শহীদের নাম সম্বলিত ফলকটি। তবে প্রতিবেদনের সাথে বাস্তবতার কোন মিল না থাকার বিষয়টি চাওর হতে থাকে গোটা সরাইলে। এ ঘটনায় ২০ জুলাই জাতীয় একটি দৈনিকে “নেপথ্যে সওজের জায়গা দখল, সরাইলে বধ্যভূমি থেকে ৪৬ শহীদের নাম ফলক উধাও” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের। ঘটনার ১ মাস ২৩ দিন পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ‘ধর্মতীর্থ গণহত্যা’ নামক স্থানটিতে ছুটে যান সরাইলের ইউএনও এএসএম মোসা। এর আগে তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ সকলকে উপস্থিত থাকার আহবান জানান। সোমবার বিকাল ৫টার দিকে যান ওই বধ্যভূমিতে।

উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, কালিকচ্ছ ইউপি কমান্ডার রমেশ চন্দ্র দেব সহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। সাবেক এমপি মৃধা বধ্যভূমির স্বীকৃতি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি বিজড়িত একটি ফেনা লাগানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এএসএম মোসা বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও গণ্যমান্য লোকদের সহায়তায় মূল বধ্যভূমিটি চিহ্নিত করেছি। পরে সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছি।
###

অবশেষে সরাইলের বধ্যভূমিতে প্রশাসনের সাইনবোর্ড ॥ অনাপত্তিপত্র বাতিল ঘোষণা

ফেসবুকে আমরা..