স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে দ্বিতীয় দফায় গণটিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে জেলার ৯টি উপজেলার ৯৮টি ইউনিয়ন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ড এক যোগে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ মাঃ একরাম উল্লাহ বলেন, জেলার ৯টি উপজেলায় ৯৮টি ইউনিয়ন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের মোট ১১০টি কেন্দ্রে ৩০৬টি বুথ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে একযোগে টিকার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিটি বুথে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে।এবারের ক্যাম্পেইনও বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জেলায় ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড় ১০টায় শহরের নিয়াজ মুহাম্মদ উচ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দেখা যায় নারীদের জটলা। তারা টিকা কার্ড কেন্দ্রের ভেতরে থাকা স্বেচ্ছাসেবীর হাতে দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছেন। ভেতর থেকে স্বেচ্ছাসেবীরা কার্ড দেখে নাম ধরে ডাকছেন। যাদের নাম বলা হয়, তারা কেন্দ্রের ভিতর গিয়ে টিকা দিয়েছন।

বেলা ১১টায় ওই কেন্দ্রে উপস্থিত থাকা পরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাউসার আহমেদ জানান, সকাল নয়টায় টিকা দেওয়া শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ২০০জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। কতক্ষণ টিকাদান চলবে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বরাদ্দকৃত টিকা থাকার যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত দেওয়া হবে।

সিভিল সার্জন ডাঃ মাহাম্মদ একরাম উল্লাহ আরও জানান, কোনো ধরণের বিশৃংখলা ছাড়াই গণটিকাদান কর্মসূচী শেষ হয়েছে। ক্যাম্পেইন শুধুমাত্র প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে৷  তিনি বলন, কতজন টিকা দিয়েছেন তা গননা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষদের গণটিকা প্রদান


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সকল নৌপথে নৌ দুর্ঘটনা রোধকল্পে এবং প্রচার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা লুৎফুর রহমান ( নাছিমা মুকাই আলী), উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঞা, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঞা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফয়জুন নাহার, ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুল হক হামদু, জিয়াউল হক বকুল, হাজী মোঃ জিতু মিয়া, সারোয়ার রহমান ভূঞা, কামরুজ্জামান রতন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, থানার এস.আই ইউনুছ মিয়া প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

নৌ পথে দূর্ঘটনারোধ কল্পে বিজয়নগরে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উদ্বোধনের পায় তিন বছর পর কোন ধরণের অস্ত্রোপচার ছাড়াই পুত্র সন্তানের জন্মদিলেন প্রসূতি পারুল বেগম (২৮)। গত শুক্রবার গভীর রাতে পারুল বেগম স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কোন ধরণের অস্ত্রোপচার ছাড়াই পুত্র সন্তান জন্ম দেন।

হাসপাতালটি উদ্বোধনের প্রায় তিন বছর পর কোন প্রসূতি মাতা হাসপাতালে শিশু জন্ম দিলেন। এই বাচ্চাটিই হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নেয়া প্রথম শিশু। হাসপাতালে জন্ম নেয়া প্রথম শিশুটি কোন ধরণের অস্ত্রোপচার ছাড়াই জন্ম নেয়ায় খুশি প্রসূতি মাতার পরিবার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম শিশু জন্ম দেয়া প্রসূতি পারুল বেগম উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের টানগেরাগাঁও গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকসার চালক সাহিদ মিয়ার স্ত্রী। বর্তমানে নবজাতক ও তার মা সুস্থ্য ও ভালো আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর হাসপাতালে শুধুমাত্র বর্হিবিভাগ চালু করা হয়। পরে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে জেলার একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

চলতি মাসের ২ মে হাসপাতালটিতে আবার চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়। কিন্তু চালু হওয়ার চারদিন পরই ৬ মে থেকে আবার হাসপাতালটিকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হিসেবে চালু করা হয়।
গত শুক্রবার (১০ আগষ্ট) থেকে পুনরায় হাসপাতালে সাধারণ জনগণের চিকিৎসা সেবা শুরু হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রসব ব্যাথা নিয়ে পারুল বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। হাসপাতালে ভর্তি করার পর প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারী করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন চিকিৎসকগণ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুম এর নির্দেশনায় ডাঃ ইয়াসমিন আক্তার ও ডাঃ শাউলিন জাহানের তত্ত্বাবধায়নে প্রসূতি পারুল বেগমকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। প্রসূতির পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকগণকে প্রয়োজনে প্রসূতিকে সিজারিয়ান অপারেশনের কথা বলা হলেও চিকিৎসকগণ তাদেরকে নরমাল ডেলিভারি করানোর কথা বলেন। শুক্রবার গভীর রাত দেড়টার দিকে ডাঃ ইয়াছমিন আক্তার ও ডাঃ শাউলিন জাহানের তত্ত্বাবধানে প্রসূতি পারুল বেগম অস্ত্রোপচার ছাড়াই একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।

এ ব্যাপারে শিশুর পিতা সাহিদ মিয়া বলেন, সিজারিয়ান অপারেশন ছাড়া তার স্ত্রী সন্তান প্রসব করায় তিনি খুশী। এতে তার কোন খরচ হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু হওয়ার পর এটিই হাসপাতালে জন্ম নেয়া প্রথম শিশু। নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে প্রসূতি পারুল বেগম একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ায় আমরা খুবই খুশী। তিনি বলেন, প্রসূতির পরিবার থেকে আমাদেরকে প্রয়োজনে সিজারিয়ান অপারেশন করার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু আমরা ওই প্রসূতিকে নরমাল ডেলিভারী করাই। বর্তমানে শিশু ও তার মা ভালো ও সুস্থ্য আছে।।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই প্রসূতি মায়েদের নরমাল ডেলিভারী। সিজারিয়ান অপারেশন ছাড়া সন্তান প্রসব হলে এটি প্রসূতির জন্য মঙ্গলজনক।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জনবল সংকট রয়েছে। হাসপাতালে ৮জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছে ৬জন। ৭ জন নার্স থাকার কথা থাকলে আছে ৫জন, আয়া আছে মাত্র ২জন। তিনি বলেন, আমাদের ফিল্ড পর্যায়েও ৫জন চিকিৎসকের সংকট রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ একরামউল্লাহ সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নেয়া প্রথম শিশুটি কোন ধরণের অস্ত্রোপচার ছাড়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্ম নেয়ায় আমরা খুবই খুশী। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত জনবল সংকট লাঘব করার চেষ্টা করা হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ছাড়াই জন্ম নিয়েছে প্রথম শিশু


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীতে অভিযান চালিয়ে ২২টি নৌযানকে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিতাস নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার থেকে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাটের নৌপথে অভিযান চালান নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীর নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, তিতাস নদীতে চলাচলকারী কোনো নৌযানের নিবন্ধন, সার্ভে সনদ, চালকের নিবন্ধন, নৌকায় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম বয়া ও লাইফ জ্যাকেট রাখা হয় না। ওই নৌপথটিও অনুমোদিতও নয়।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের উপ-সচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদরুল হাসানের নেতৃত্বে শহরের আনন্দবাজার ঘাট থেকে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট পর্যন্ত যৌথভাবে অভিযান চালায় নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

এসময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করাসহ নৌযানের নিবন্ধন, সার্ভে সনদ, চালকের নিবন্ধন এবং নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের দায়ে দুটি ড্রেজার (খননযন্ত্র), ১০টি ট্রলার (বাল্কহেড) সহ ২২টি নৌযানকে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা হয়।

অভিযান চলাকালে আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদীবন্দরের উপপরিচালক শহীদ উল্লাহ, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান ও সার্ভেয়ার বাস্তুব ফকির এবং র‌্যাব-১৪ এর ভৈরব ক্যাম্প ও ভৈরব নৌপুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদীবন্দরের উপপরিচালক শহীদ উল্লাহ বলেন, অভিযান চালিয়ে ড্রেজারসহ ২২টি নৌযানকে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আনন্দবাজার-চম্পকনগর নৌপথের তিতাস নদীর লইস্কা বিলে যাত্রীবাহী নৌকাডুবে ২৩জনের মৃত্যু হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কা বিলে নৌকা ডুবিতে নিহতদের পরিবারকে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। বুধবার নৌকা ডুবিতে নিহতদের পরিবারকে শোক ও সমবদেনা জানাতে বিজয়নগরে ছুটে যান।

তিনি উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের জহিরুল হক ভুঁইয়ার বাড়িতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে নিহত মেডিকেল ছাত্র আরিফ বিল্লাহর স্বজনদেরকে সমবেদনা জানান। জহিরুল হক ভুঁইয়ার ছেলে আরিফ বিল্লাহ ওরফে মামুন (২০) ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ওইদিন নৌকা ডুবিতে মারা যান।

পরে তিনি দলীয় কার্যালয় গিয়ে নৌকা ডুবিতে নিহতদের স্বজনদের শোক ও সমবেদনা জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা লুৎফুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মানা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, বিজয়নগর উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ ও দলীয় নেতাবৃন্দ প্রমুখ।

মোকতাদির চৌধুরী এমপি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকাহত পরিবারের স্বজনদের সমবেদনা জানান।

লইস্কার বিলে নৌকা ডুবিতে নিহতদের স্বজনদের সমবেদনা জানালেন মোকতাদির চৌধুরী এমপি


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কার বিলে শুক্রবার বিকেলে যাত্রীবাহি নৌকা ডুবির ঘটনায় জামিলা খাতুন (৬৫) নামে আরও এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৩ দাঁড়িয়েছে।

রোববার সন্ধ্যা ৭টায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷

মৃত জামিলা খাতুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে বৃদ্ধা জামিলা খাতুন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিজয়নগরের চম্পকনগরের নৌকাঘাট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার জন্য নৌকায় উঠেন। নৌকাটি বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কার বিলে আসার পর একটি বালুবাহি ট্রলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। এতে জামিলা বেগম মারা গেলে পরিবারের লোকজন সাথে সাথে প্রশাসনের অগোচরে তার লাশ নিয়ে যায়। এজন্য সরকারিভাবে জামিলার নাম নিহতের তালিকায় প্রকাশ পায়নি, তার পরিবার জেলা প্রশাসনের ২০ হাজার টাকাও পায়নি।

রোববার সকালে জামিলা খাতুনের পুত্রবধূ আখি আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে নৌকা ডুবিতে তার শ্বাশুড়ি জামিলা খাতুন মারা গেছেন জানালে সাংবাদিকরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জামিলা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তার পরিবারকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, জামিলা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ নিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৩ দাঁড়িয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকা ডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কার বিলে শুক্রবার সন্ধ্যায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় নৌকার মাঝিকেই দায়ী করেছেন ওই নৌকার যাত্রী মোঃ জামাল মিয়া (৫০)। নৌকাটি ডুবে তিনি কোন রকমে প্রাণ বাঁচান ।

জামাল মিয়ার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অয়েল মিলের (সরিষার তেল ভাঙ্গানির মেশিন) মেশিন সংস্কার ও ফিটিংয়ের কাজ করেন। পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কান্দিপাড়ায়।

শনিবার দুপুরে লইস্কার বিলে উদ্ধার কাজ দেখতে গিয়ে জামাল মিয়া বলেন, শুক্রবার তিনি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামে একটি অয়েল মিলে কাজ শেষে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার চম্পকনগর নৌকা ঘাট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আসার জন্য নৌকায় উঠেন। তিনি বসেন নৌকার ছৈয়ার উপরে (নৌকার ছাদে)। তিনি বলেন, নৌকাটিতে তখন নারী, শিশু মিলিয়ে প্রায় শতাধিক যাত্রী ছিলো।
তিনি বলেন, নৌকাটি বিজয়নগর উপজেলার লইস্কার বিলে প্রবেশ করার সময় আমি নৌকার উপর থেকে দেখতে পাই বিলে বালিবাহী দুইটি ট্রলার। এ সময় আমি ও নৌকার ছাদে থাকা কয়েকজন যাত্রী মাঝিকে নৌকাটি বিলের বাম পাশ দিয়ে নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু নৌকার মাঝি মাঝি আমাদের কথা না শুনে মাঝ বিল দিয়ে নৌকাটি চালাতে থাকে। এক সময় নৌকাটি গিয়ে ট্রলারের সাথে সজোরে ধাক্কা খায়। সাথে সাথে নৌকাটি উল্টে ডুবে যায়।

জামাল মিয়া আরও বলেন, নৌকাটি ডুবার সাথে সাথে তিনি সাতরে উপরে উঠার চেষ্টা করলে ট্রলারের দুইজন কর্মচারী তাকে টেনে উপরে তুলেন। পরে তিনি ট্রলারে উঠে নৌকায় থাকা আরেকজন যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। জামাল মিয়া দাবি করেন নৌকার মাঝির ভুলের কারণেই এতোগুলো মানুষ মারা গেছে।

জামাল মিয়া বলেন, চোখের সামনে মানুষের মৃত্যু দেখেছি। মানুষের আহাজারি শুনেছি। তাই শনিবার উদ্ধার কার্যক্রম দেখতে ঘটনাস্থলে এসেছি। উল্লেখ্য নৌকা ডুবিতে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নৌকা ডুবির ঘটনায় মাঝিকে দায়ী করলেন যাত্রী জামাল মিয়া


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রবাসী ভাইকে দেখতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন বিজয়নগর উপজেলার আদমপুর গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জলী বিশ্বাস (৩০) ও তার শিশু কন্যা ত্রিদিবা বিশ্বাস (আড়াই বছর)। শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কার বিলে নৌকা ডুবির ঘটনায় মা-মেয়ের সলিল সমাধি হয়।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে একটি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে মা-মেয়ের লাশ বিজয়নগরে নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদয় বিদারক ঘটনার অবতারণা হয়। শিশু ত্রিদিবা বিশ্বাসের মুখটি দেখে অনেকের চোখেই পানি দেখা যায়।
লাশ নিতে আসা অঞ্জলী বিশ্বাসের দেবর সুমন বিশ্বাস জানান, তার বৌদির বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার গোকর্ণঘাট গ্রামে। তাদের বাড়ি উপজেলার আদমপুর গ্রামে। তিনি বলেন, বৌদির ভাই হরিপদ বিশ্বাস প্রবাসী। তিনি গত কয়েক মাস আগে ছুটি নিয়ে দেশে এসেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে হরিপদ বিশ্বাস আবার বিদেশ চলে যাওয়ার কথা।

তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেলে ভাই হরিপদ বিশ্বাসকে দেখতে অঞ্জলী বিশ্বাস তার ছেলে সৌরভ বিশ্বাস (১৭), কন্যা মন্দিরা বিশ্বাস (৬) ও আড়াই বছরের শিশু কন্যা ত্রিদিবা বিশ্বাসকে নিয়ে নৌকায় করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসছিলেন।পথিমথ্যে সন্ধ্যায় নৌকাটি বিজয়নগর উপজেলার মনিপুর ইউনিয়নের লইস্কার বিলে ডুবে গেলে শিশু কন্যা ত্রিদিবা বিশ্বাস সহ মা অঞ্জলী বিশ্বাস মারা যান।
তিনি বলেন, তার ভাতিজা সৌরভ ও ভাতিজি মন্দিরাকে নৌকা থেকে জীবিত উদ্ধার হয়। উদ্ধারের পরপরই তাদেরকে বিজয়নগরে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য নৌকা ডুবির ঘটনায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত নারী শিশুসহ ২২জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপাতত উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রবাসী ভাইকে দেখতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন অঞ্জলী ও তার মেয়ে


স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
হাতের মেহেদীর রঙ শুকানোর আগেই সলিল সমাধি হয়েছে নববধূ শারমীন আক্তারের (১৮)।  শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কার বিলে নৌকা ডুবিতে মারা যায় শারমীন।

শনিবার সকাল ৮ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামো শারমিন আক্তারের দাফন সম্পন্ন হয়। নববধূ শারমীন আক্তার ভাটপাড়া গ্রামের মৃত জারু মিয়ার কণ্যা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র এক সপ্তাহ আগে গত ২০ আগস্ট বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের আউলিয়া বাজারের জহিরুল ইসলাম (২৭) সাথে শারমীনের বিয়ে হয় । বিয়ের পর এই প্রথম নববধূকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসছিলেন জহির। শুক্রবার নৌকা ডুবিতে স্ত্রীকে হারান জহির। নবপরীণিতা স্ত্রীকে হারিয়ে স্বামী জহির পাগল প্রায় ।

শনিবার সকাল ৯টায় ভাটপাড়ার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় জহিরের আহাজারিতে ভারী হয়েছে ওই বাড়ির পরিবেশ। তার কান্না দেখে উপস্থিত সকলের চোখেই ছিলো পানি। জহির বলেন তিনি শুক্রবার বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ঘাট থেকে নৌকায় উঠেন। মাঝিকে বারণ করা সত্বেও প্রতি ঘাট থেকে নৌকায় যাত্রী তোলা হয়। যাত্রীরা মাঝিকে নিষেধ করলেও সে কর্ণপাত করেনি। এসময় নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রীতে বোঝাই হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে নৌকাটি ঠিক মতো চলতে পারছিলোনা। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে লইস্কার বিলে একটি বালিবাহী ট্রলারের সাথে ধাক্কা লেগে তাদেরকে বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়। তিনি বলেন, আমি সাতরিয়ে কোন রকমে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও শারমীন পানিতে তলিয়ে যায়। রাতের বেলা তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচার দাবি করেন।

উল্লেখ্য শুক্রবারের নৌকা ডুবিতে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধার অভিযান আপাতত সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

হাতের মেহেদির রঙ শুকানোর আগেই নববধূ শারমীনের সলিল সমাধি

 

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বালু বোঝাই ট্রলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকা ডুবে গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কা বিলে এ ঘটনা ঘটে।

এতে নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত ২১ জন যাত্রী মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অর্ধশতাধিক যাত্রী।তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম জানা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। আহতদের মধ্যে প্রথমে ৮ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

আহতরা হলেন, আইয়ূব মিয়া (৪০), ইব্রাহিম (১২), আহমদউল্লাহ (১৩), মুরাদ মিয়া (৩৫), তানজির (১০) ও ফারুক মিয়া (৪৫)। বাকিদের পরিচয় যাচাই চলছে৷

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে দেখতে আসেন।

নৌকার যাত্রী সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের আঁখি আক্তার বলেন, তিনি তার স্বামী মুরাদ মিয়া, দুই ছেলে, শ্বাশুড়ি, ভাসুরের তিন ছেলে সহ বিজয়নগরের চম্পকনগর ঘাট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আনন্দ বাজার ঘাটে আসতে নৌকায় উঠেন। নৌকায় প্রায় শতাধিক যাত্রী ছিলেন। নৌকাটি পথিমধ্যে লইস্কা বিলে এসে বালু বোঝাই একটি ট্রলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে পানিতে তলিয়ে যান। তিনি তার স্বামী ও একটি শিশু পুত্রকে নিয়ে সাতরে বিলের কিনারে আসতে পারলেও তার আরেক ছেলে, শ্বাশুড়ি ও ভাসুরের তিন ছেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

হাসপাতালে আহত মুরাদ মিয়া বলেন, হঠাৎ ট্রলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। তারপর অনেক কষ্টে এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সাতরে উপরে উঠেছি। আমার ১ ছেলে, মা ও তিন ভাতিজা এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

নৌকায় থাকা যাত্রী মোহাম্মদ রাফি বলেন, আমি নৌকার ছাদে বসে ছিলাম। বিজয়নগরের চম্পকনগর নৌকাঘাট থেকে বিকাল সাড়ে ৪টায় নৌকাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার আনন্দ বাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। নৌকাটি লইস্কার বিলে আসলে বালু বোঝাই একটি ট্রলারের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। আমি ঝাঁপ দিয়ে পানিতে পড়ে সাতরে উপরে উঠি। রাফি আরো বলেন, নৌকার নিচে ও উপরের শতাধিকের মতো যাত্রী ছিলো।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে আছি। এ পর্যন্ত ২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। এখনো নৌকাটি উদ্ধার করা যায়নি। তিনি বলেন, হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

বিজয়নগরে শতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকা ডুবি, ২১ জনের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক 

ফেসবুকে আমরা..