জীবনবৃত্তান্ত:

হাবিবুর রহমান পারভেজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়ায় ১৯৮৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর বোধবার রাতে নানার বাড়ী জন্মগ্রহন করেন।তিনি বাবা মা র প্রথম সন্তান। বাবা মো. হোসেন আলী পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং তাবলীগ জামাতের আমীর আর মাতা মোছা. ঝরনা বেগম একজন সরকারি কর্মচারী। তার একমাত্র ছোট ভাই সায়েদুর রহমান হ:ক: প্রবাসী। দাদার বাড়ি ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার উত্তর আরিফাইল।

শিক্ষাজীবন:

হাবিবুর রহমান পারভেজ ১৯৯৫ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয় শহরের পৌর আর্দশ কিন্ডার গার্টেন স্কুল থেকে ৫ম শ্রেনী পাশ করেন।তারপর মায়ের চাকুরীর সুবাদে জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাও উ”চ বিদ্যালয় থেকে ২০০০ সালে বিঞ্জানে প্রথম বিভাগ এস এস সি পাশ করে ব্রাহ্মণব্রাড়িয়া সরকারি কলেজে ব্যবসায়ী বিভাগে ভর্তি হয়। রাজিনীতিতে জড়িয়ে পরার কারণে সে প্রথম বছর পাশ করতে পারেনি, তবে ২০০৩ সালে এস এইচ সি পাশ করে। এরপর রাজনীতি সংস্কৃতি আর সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে ২০০৭ সালে বি কম পাশ করে আর এগুতে পারেনি, তবে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ২০০৯ সালে প্রইম বিশ্ববিদ্যালয়ে এল এল বি তে ভর্তি হয়। কিš‘ কর্মজীবন রাজনীতি সংস্কৃতি আর সাংবাদিকতা এই চতুর্থমুখী ব্যবস্ততার জন্য পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। পরে মাননীয় এমপি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী মহোদয়ের সহায়তায় ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইণ কলেজ থেকে এল এল বি পাশ করেন।

কর্মজীবন:

শিক্ষাজীবন থেকেই কর্মজীবন শুরু হয়। সেটা হল ২০০৪ সাল থেকে গণ উন্নয়ন সং¯’া নামক এ জি ও র একটা শেওয়াবি প্রকল্পের  অফিস সহকারি পদের মাধ্যমে আখাউড়া পৌরসভায়। ৪ বছরের প্রকল্প শেষে ২০০৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় একই প্রকল্পের সুপারভাইজার হিসেবে যোগদান করেন। কাজ করেন ২০১০ পর্যন্ত। তারপর ২০১১ সালের শেষের দিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি বড়ি একটি খামারে সদর উপজেলায় মাঠ সহকারি হিসেবে যোগ দেয়। ২০১৪ সালে ফিল্ড সুপারভাইজারে পদন্নতী লাভ করে। ২০১৬ সারের ৩০ জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষে পল্লী সঞ্ছয় বাংকে ¯’ানান্তর হবে সিদ্ধান্ত হলেও পরে আবার ২০২০ ইং সাল পযর্ন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয় ।

 

রাজনৈতিক জীবন:

ধর্মভীরু পরিবারের হলেও ছোট বেলা থেকেই  তার মধ্যে নেত্রিত্বের গুনাবলী ছিল। কলেজের ভর্তি পরপরই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জরিয়ে পরে। কলেজের পাশাপাশি এলাকায়ও তার জনপ্রিয়তা ছিল। তাই প্রথমেই ২০০১ সালে মধ্যপাড়া শান্তিবাগ ছাত্রলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় সাধারণ সম্পদক  হয়। ২০০৪ সালেও একই কায়দায় ৩নংওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিবার্চিত হয়। এরপর ২০০৬ সালে ব্রাহ্মবাড়িয়া সরকারি কলেজের সহ-সভাপতি ও পরে ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়কের দায়িত্ব গ্রহন করেন এবং ২০১৩ সালে একটি সুন্দর সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বিদায় নেই।

সাংস্কৃতিক জীবন:

মায়ের চাকুরীর কল্যাণে গ্রামের স্কুলে লেখাপড়ার কারণে হাবিবুর রহমান পারভেজ এমনিতেই সংস্কৃতিমনা ছিলেন। গ্রামের স্কুলে যদি কখনও কবিতা আবৃত্তি, ছবি আকা প্রতিযোগিতা হতো তাতে অংশগ্রহণ করতেন। তবে ২০০০ সালে তিতাস সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদের সদস্য দিয়ে সাংগঠনিক চর্চা শুরু করেন। ২০০৪ সালে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের সহকারি পরিচালক, ২০০২ সালে যুগান্তর স্বজন সমাবেশের বাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, ২০০৫ সালে বন্ধুসভার সহ-সভাপতি, ২০০৮ সালে জে জে ডি ফ্রেন্স ফোরামের যুগ্ম-আবায়ক, ২০০৯ সালে ঘাতক-দালাল র্নিমূল কমিটির প্রচার সম্পাদক, ২০১০ সালে শুভসংঘ পাঠক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হয়ে কাজ করেন। আর ২০১২ সালে নিজে নির্বাহী পরিচালক হয়ে আ ব র নি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে সাংস্কৃতিক জগতে সফলতার সহিত এগিয়ে যায়। ২০১৩ সালের শেষের দিকে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আহবায়কের দায়িত্ব গ্রহন করেন এবং ২০১৪ সালে জেলা নাগরিক  ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়া তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমী, পাবলিক লাইব্রেরী, রেড ক্রিসেন্ট, এপেক্স ক্লাব ও সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের সাথে যুক্ত আছে।

সাংবাদিকতা:

সংগঠনের প্রেস-বিঞ্জতি  লেখতে লেখতে সাংবাদিকতা প্রতি তার আগ্রহ সৃস্টি হয়। ২০০৩ সালে এস এইচ সি পাশ করে ¯’নীয় দৈনিক তিতাসকন্ঠ পত্রিকার মাধ্যমে কাজ শুরু করেন। তারপর জাতীয় দৈনিক ভীমরুল এবং ২০০৮ সালে শেষ দিকে নতুন করে বের হওয়া জাতীয় দৈনিক বাংলদেশ সময় পত্রিকায ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুযোগ পায়। কিš‘ পত্রিকাটা বেশি ভাল করেনি সেই সাথে তার ও সাংবাদিকতায় ভাটা পরে। পরে অবশ্যই ২০০৩ সালে ছাত্ররাজনীতি শেষে এশিয়ান টিভির জেল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করে এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন।

চলছে….চলবে….

ব্রাহ্মণবাড়িয়া অনলাইন টিভির প্রকাশক -সম্পাদকের কথা

 

তিতাস পাড়ের ব্যাক্তিত্ব :

জেলার সাহিত্য ইতিহাস খুঁজতে গেলে খুব বেশি দূর অতীতে যাওয়া যায় না। জেলার সাহিত্য চর্চার বিকাশ ঘটে আধুনিককালে এসে। সাধক কবি মীর্জা হোসেন আলী থেকে অদ্যাবধি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য বৈশিষ্ট্য বিশেষ গৌরবজনক। মানুষ ও মনুষ্যত্বের বিষয়ে আপসহীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য পরিবেশ মীর্জা হোসেন আলী থেকে কবি আল মাহমুদ এবং সাধক কবি মনোমোহন থেকে অদ্বৈতমল্লবর্মণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্যের উজ্জ্বল অধ্যয়। মীর্জা হোসেন আলী, বানচন্দ্র তর্কালঙ্কর, মুন্সি ছমির উদ্দিন, দেওয়ান রামদুলাল নন্দী, কৈলাসচন্দ্র সিংহ, সাধক মনোমোহন ছান্দসিক প্রবোধচন্দ্র সেন, কবি সুফী জুলফিকার হায়দার, কবি আব্দুল কাদির, কবি জমিলা বেগম, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, অদ্বৈত মল্লবর্মণ, গবেষক আ কা মো. যাকারিয়া, ইতিহাস গবেষক ড. অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, কবি সানাউল হক, কবি ছড়াকার সাজজাদ হোসাইন খান, কবি আহমদ রফিক, সাহিত্যিক মিন্নাত আলী, কবি মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ, কবি ফজল শাহাবুদ্দীন, কবি আল মাহমুদ, মোবারক হোসেন খান, সাংবাদিক ও গবেষক মুহম্মদ মুসা, কবি মনজুরে মওলা, কথা সাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই, তিতাস চৌধুরী, কবি শিহাব সরকার, শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম প্রমুখ কবি, সাহিত্যিক ও গবেষকগণ জেলা সাহিত্য চর্চা ও বিকাশে ব্যাপক অবদান রেখেছেন এবং বর্তমানেও রাখছেন।

কালোত্তর ব্যক্তিত্ব :

তৎকালীন পূর্ববঙ্গের অগ্রসর অঞ্চলগুলোর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্যতম। আধুনিক শিক্ষার প্রভাবে জেলা জন্ম দিয়েছে অনেক শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, সমাজ সংস্কারক তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঈসা খাঁ মসনদ এ আলা, নবাব সিরাজুল ইসলাম, রামকানাই দত্ত, মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, নওয়াব স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা, বিপ্লবী অখিল চন্দ্র দত্ত, ব্যারিস্টার আব্দুল রসুল, মাওলানা মোহাম্মদ হুসাইন (রহ.), মাওলানা রুকন উদ্দিন, বিশ্ববিখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ইসলামী চিন্তাবিদ অধ্যাপক গোলাম আযম, বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, কৃষক নেতা আব্দুল মালেক, মৌলবী জিল্লুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুছ মাখন, ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক হরলাল রায়।

ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব :

জেলা ইসলাম প্রচার ও প্রসারে যুগে যুগে অসংখ্য ধর্ম প্রচারকের আগমন ঘটে এই অঞ্চলে। তারা এ অঞ্চলে ধর্ম প্রচারে ব্যাপক অবদান রাখেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– হযরত সৈয়দ আহমদ গেদুদারাজ কল্লা শহীদ, হযরত কাজী মাহমুদ শাহ, হযরত শাহ সুফী আব্দুল খালেক, ফখরে বাঙ্গাল আল্লামা তাজুল ইসলাম, হযরত মৌলানা আসগর আহমদ আল কাদরী, হযরত মাওলানা হাছান শাহ, মাওলানা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দিন, সৈয়দ আব্দুল রাবী শাহ প্রমুখ। অন্যান্য ধর্মের মধ্যে শ্রী শ্রী মা আনন্দময়ী, সাধক আনন্দ নন্দী, সাধক মনোমোহন প্রমুখ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার কৃতি সন্তান

ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান :

জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো হলো- আর ফাইলের মসজিদ (সরাইল), উলচাপাড়া মসজিদ (সদর), কাল ভৈরব মূর্তি ও মন্দির (সদর), বাসুদেব মূর্তি (সরাইল), ঐতিহাসিক হাতিরপুল (সরাইল), কৈলাঘর দুর্গ (কসবা), ভাদুঘর মসজিদ (সদর) বাঁশীহাতে শিবমূর্তি (নবীনগর), আনন্দময়ী কালী মূর্তি (সরাইল), আর্কাইভ মিউজিয়াম (সদর) ইত্যাদি।

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে তিতাস নদীতে নৌকা বাইচ, নবীনগরের ষাঁড় দৌড়, গরুর লড়াই, সরাইলের মোরগ লড়াই, বারনী বা বান্নি মেলা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দর্শনীয় স্থান সমূহ

সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা :

বাংলাদেশের আঞ্চলিক বা মফস্বল সংবাদপত্রের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এ ক্ষেত্রে একটা বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। উনিশ শতকের শেষার্ধে ত্রিপুরা জেলা তথা বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সংবাদপত্র ও সাময়িকীর উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্থানীয় সংবাদপত্র মাসিক ঊষা (১৮৯৩) এবং মাসিক হীরা (১৮৯৪) প্রকাশিত হয়। সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত ঊষা, হীরা, জয়ন্তী ও সেবক পত্রিকা বাংলা সাময়িক পত্রের ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। গ্রাম থেকে পত্রিকা প্রকাশ বিশেষ করে চুন্টা প্রকাশ ও ‘পল্লী প্রদীপ’ জেলার সংবাদপত্র ও সাময়িকীর ইতিহাস এক উজ্জ্বল সূচনা করেছে। জেলায় সংবাদপত্র প্রকাশের ১১৮ বছরের এক সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। জেলা সংবাদপত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– মাসিক ঊষা (১৮৯৩), মাসিক হীরা (১৮৯৪), মাসিক সন্তান (১৯১৩), মাসিক পল্লী প্রদীপ (১৯২০), মাসিক চুন্টাপ্রকাশ (১৯২৬), মাসিক জয়ন্তী (১৩৪৬ বাংলা), মাসিক মা (১৯৬৯), মাসিক ভোলা (১৯৬৮), ত্রৈমাসিক আল বুশরা, প্রবাহ, সাহিত্য লোক, মান্দাল, ধূমকেতু, সাপ্তাহিক ত্রিপুরা বিকাশ, সেবক, তিতাস মা, প্রতিচ্ছবি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সাকিয়াত তিতাসের খবর, দৈনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া, প্রজাবন্ধু, আজকের হালচাল, তিতাস কণ্ঠ, রাহবার, সমতট বার্তা, দিনদর্পন ইত্যাদি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা

নামকরণ :

বাংলাদেশে সেন বংশের রাজত্বকালে কোনো অভিজাত ব্রাহ্মণ পরিবার এ অঞ্চলে ছিল না। এতে পূজা অনুষ্ঠানে বেশ অসুবিধার সৃষ্টি হত। রাজা লক্ষণ সেন কারো মতে আদিশূর কান্যকুঞ্জ থেকে বেশ কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবার আনয়ন করেন। সেই ব্রাহ্মণ পরিবারের বংশধরদের এক পরিবার বসতি স্থাপন করেছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌলভী পাড়া নামক স্থানে। এই প্রসিদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়ি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নামের উৎপত্তি। অপর এক মতে, ত্রয়োদশ শতাব্দীর পূর্ব থেকে বৃহত্তর ত্রিপুরায় হিন্দুদের আধিক্য ছিল। আর সেই সময় এক অত্যাচারী ব্রাহ্মণ্যবাদের আবির্ভাব ঘটে। এই অত্যাচারী ব্রাহ্মণের হাত থেকে নিরীহ জনগণকে রক্ষার জন্য গাজী মাহমুদ শাহ (রাঃ) নামে এক ইসলামী বুজুর্গ ব্যক্তির আগমন ঘটে। তিনি অত্যাচারী ব্রাহ্মণদের এই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ‘ব্রাহ্মণ বের হয়ে যাও’ আদেশ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নামের উৎপত্তি বলে অনেকে মনে করে থাকেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নামকরণের ইতিহাস

botv নিউজ:

হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের হৃদয়ভূমি আমাদের এই প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। এদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। বাংলাদেশের যে অঞ্চলসমূহ সংগীত, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে আছে তার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অন্যতম। এই জেলাকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বললে বোধ হয় বেশি বলা হবে না। তিতাস বিধৌত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংগীত, শিল্প সাহিত্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির তীর্থ ক্ষেত্র রূপে ভারতীয় উপমহাদেশে সুপরিচিত একটি জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। গানের দেশ গুনীর দেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেন জ্ঞানী-গুনীর খনি স্বরূপ। অসংখ্য জ্ঞানী-গুনীর বিভিন্ন অবদানের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপমহাদেশব্যাপী ও বিশ্বব্যাপী আজ পরিচিত।

মেঘনা-তিতাসের পলি মাটির আবাহনে বাঁধা এ ভূখন্ড লোক সংস্কৃতির দিক থেকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ। সামাজিক ও ভূ-প্রকৃতির বিন্যাস, নদ-নদী ও জলবায়ুর প্রভাব, জনবসতির ধরন, লোকসমাজের আচার বিশ্বাস, সংস্কৃতি-ঐতিহ্য এবং নিরন্তর, পরিবর্তনশীল মানসিক পরিমন্ডলের মধ্যদিয়ে গড়ে উঠেছে এখানকার বিচিত্র বহুমাত্রিক এবং অভ্যন্তরীণ গতিশীলতায় সমৃদ্ধ লোক সংস্কৃতি। বস্তুধর্মী ও সাহিত্যধর্মী উভয় শ্রেণীর লোক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঐশ্বর্যশালী। তিতাস নদী আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। তিতাস অববাহিকায় কিংবা পলি কাদায় জন্মগ্রহণ করেছে বিশ্ববিখ্যাত অনেক কৃতী সন্তান। সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ থেকে শুরু করে শচীন দেব বর্মন ও সুবল দাস পর্যন্ত সুরের যে ইন্দ্রজাল সৃষ্টি হয়েছে তা এখন সৈয়দ আব্দুল হাদীর মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সুদৃঢ় ভিত্তিমূলের উপর প্রতিষ্ঠিত।

অপরদিকে এই জেলায় জন্মগ্রহণ করেছে বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ফখরে বাঙাল আল্লামা তাজুল ইসলাম ও ভাষাসৈনিক অধ্যাপক গোলাম আযম। মোগল আমলে নির্মিত সরাইলের আরফাইলের মসজিদ ও হাতিরপুল, কালভৈরব মন্দির, খড়মপুরের কেল্লাশাহ মাজার, নবী নগরের সতীদাহ মন্দির, বাঁশীহাতে শিবমূর্তি, সাধক মনমোহনের আনন্দ আশ্রম, হাছান শাহ মাজার, কসবার কৈলাঘর দূর্গ, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তাফা কামালের কবর এ জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে স্মরণ করে দেয়। এ জেলার ছানামুখী মিষ্টি, বিলম্বী ফল। বিলম্ব যা সারাদেশে (দু্রাপ্য), মৃৎশিল্প, তাঁত শিল্প, যাত্রা, তিতাসে নৌকাবাইচ, পুতুল নাচ, সরাইলের মোরগের লড়াই সারা দেশজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছে।

###

সাহিত্য-সংস্কৃতি তীর্থভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: 

শিল্প-সংস্কৃতি, শিক্ষা-সাহিত্যে দেশের অন্যমত অগ্রণী জনপদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ, ব্যারিস্টার এ রসুল, নবাব স্যার সৈয়দ শামসুল হুদা, কথা সাহিত্যিক অদ্বৈত মল্ল বর্মণ, কবি আবদুল কাদির, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তসহ বহু জ্ঞানী গুনীর জন্মধন্য জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
শহরের বাণিজ্য কেন্দ্র আনন্দবাজার ও টানবাজার। আনন্দবাজার, টানবাজার, জগৎবাজার, মহাদেব পট্টি, কালাইশ্রী পাড়া, মধ্যপাড়া, কাজীপাড়া ও কান্দিপাড়া শহরের পুরাতন এলাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর শিল্প-সাহিত্য ও শিক্ষা-সংস্কৃতির ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। এ শহরকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় অর্থনীতিতেও ব্যাপক অবদান রাখছে। তিতাস গ্যাস ফিল্ড, সালদা গ্যাস ফিল্ড, মেঘনা গ্যাস ফিল্ড দেশের এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ যোগায়। আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের ২য় বৃহত্তম বিদ্যুৎউৎপাদন কেন্দ্র। আশুগঞ্জ সার কারখানা দেশের ইউরিয়া সারের অন্যতম বৃহত্তম শিল্প কারখানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্প সংস্কৃতির ধারক ও বাহক এবং দলমত নির্বিশেষে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল মিলন মেলা হিসেবে এ দেশের মানচিত্রে বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত।
জেলার আশুগঞ্জে সার কারখানা ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। জেলার কয়েক শতাব্দী ধরে তাঁত বস্ত্রের জন্য বিখ্যাত। উনবিংশ শতাব্দীতে সরাইলে তানজেব নামক বিখ্যাত মসলিন বস্ত্র তৈরি হতো।
বৃটিশ আমল থেকে রাধিকার বেতের টুপি তৈরি হচ্ছে। জেলার চম্পকনগরে নৌকা তৈরি হয়। প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিখ্যাত। জেলার তিনটি গ্যাস ফিল্ড রয়েছে। এ তিনটি গ্যাস ফিল্ড হচ্ছে- তিতাস, মেঘনা ও সালদা নদী গ্যাস ফিল্ড। বলতে গেলে দেশের অন্যতম চালিকা শক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গ্যাস। জেলার ১৯৮৫ সালেই গড়ে উঠেছে বিসিক শিল্পনগরী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে উল্লেখযোগ্য খেলার স্থানসমূহ হলো –নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়াম, কাউতলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নিয়াজ মোহাম্মদ স্কুল মাঠ প্রাঙ্গন, কলেজপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, অন্নদা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় বডিং মাঠ, হালদারপাড়া ইত্যাদি।

তিতাস নদীর শান্ত প্রকৃতি দেখার মত একটি স্থান। এছাড়া তিতাস গ্যাস ফিল্ড পরিদর্শন করার মত একটি স্থান। আশুগঞ্জ ও ভৈরব বাজারের মধ্যবর্তী মেঘনা নদীর উপর ভৈরব রেলওয়ে সেতু তৈরি হয়েছে তা যে কারও মনে দোলা দেবে। এর পাশ ঘেষেই বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য মৈত্রী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এরফলে পূর্বের ফেরিঘাটের তুলনায় প্রায় ২ ঘন্টা সময় সাশ্রয় হয়েছে এবং পূর্বাঞ্চলের সাথে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিরাট বিপ্লব ও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
এছাড়াও, আরাফাইল মসজিদ (সরাইল), উলচাপাড়া মসজিদ (সদর), ভাদুঘর শাহী মসজিদ (সদর), কালভৈরব মন্দির (সদর), সৈয়দ কাজি মাহমুদ শাহ মাজার কাজিপাড়া (সদর), বাসুদেব মূর্তি (সরাইল), ঐতিহাসিক হাতিরপুল (সরাইল), খরমপুর মাজার (আখাউড়া), কৈলাঘর দূর্গ (কসবা), কুল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ (কসবা), বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের কবর (আখাউড়া), সৌধ হিরন্ময়, শহীদ মিনার, তোফায়েল আজম মনুমেন্ট, শহীদ স্মৃতিসৌধ, মঈনপুর মসজিদ (কসবা), বাঁশী হাতে শিবমূর্তি (নবীনগর), আনন্দময়ী কালীমূর্তি (সরাইল) ইত্যাদি এবং আর্কাইভ মিউজিয়াম অন্যতম।

সাংস্কৃতিক রাজধানী ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিবিধ:

রেলপথ             =৭৫ কি:মি:

রেলষ্টেশন            =  ১৪টি

রেল জংশন          =  ০১টি (আখাউড়া)

ব্রীজ        =১১৪ টি

কালভার্ট    = ১৭৯ টি

সোনালী =২৩টি

অগ্রণী     =১৩টি

জনতা     =২০টি

যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র =১টি

সামাজিক প্রতিবন্দীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র  = ১টি

টিভি রিলে কেন্দ্র   =১টি

ডাকঘর  = ১৫২টি

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিবিধ

কৃষ্টি/ঐতিহ্য :      

সরাইলের হাসলি মোরগ লড়াই,

নৌকা বাইচ,

ভাদুঘরের বান্নী(মেলা)

খড়মপুর কেল্লাশাহ (র) মাজার শরীফ এর বার্ষিক ওরশ,

নবীনগরের বৈশাখী মেলা ইত্যাদি।

দর্শনীয়/ঐতিহাসিক স্থান :

বীর শ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধি  =আখাউড়া

কোল্লাপাথর সমাধি              =কসবা

শহীদ স্মৃতি সৌধ (ফারুকী পার্ক)      = ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর

আরিফাইল মসজিদ                         = সরাইল

কল্লাশহীদ (র:) মাজার শরীফ            = আখাউড়া

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খার বসত বাড়ি   =নবীনগর

কাল ভৈরব বিগ্রহ                          =ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর

হাতিরপুল                                   = সরাইল

আনন্দময়ী কালিমুর্তি                 =সরাইল

বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি       = সরাইল

বাশি হাতে শিব মন্দির               =নবীনগর

  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার  ঐতিয্য 

 

দৈনিক      = ১৫টি

সাপ্তাহিক  = ১৯টি

পাক্ষিক   =০৬টি

মাসিক    =০৩টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পত্র -পত্রিকা  : 

ফেসবুকে আমরা..