ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশের সেবার মান বৃদ্ধি, পুলিশের দৈনন্দিন ডিউটি মনিটরিং ও জেলার ৯টি থানার দৈনন্দিন কার্যক্রম মনিটরিং ও জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে পুলিশকে দিক-নির্দেশনা দেয়ার জন্য ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস++) নামক পুলিশের একটি এ্যাপস চালু করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে এক প্রেসব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, “ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম” (সিডিএমএস++) নামক এ্যাপসের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৯টি থানায় বসানো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে থানা সমূহের বাস্তব চিত্র, প্রবেশ গেইট, ডিউটি অফিসার, সেরেস্তা, বেতার অপারেটরের কার্যক্রম, থানা হাজত করিডোরসহ ও থানাগুলোর কার্যক্রম জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে দেখা যাচ্ছে ও মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস++) এ্যাপসটি পুলিশ সদর দপ্তরের। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এটি চালু করা হয়েছে। ৬ মাস ধরে এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলে। গত ১৬ জুলাই থেকে এর কার্যক্রম পুরোদমে চালু হয়েছে। এই প্রকল্পটি বর্তমানে কুমিল্লা ও চাদপুর জেলায় চলছে।

তিনি আরও বলেন, এই এ্যাপসের মাধ্যমে জেলা পুলিশের ১৪৭৯জন সদস্যের প্রতিদিনের হাজিরা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সমস্ত ফোর্সের কর্মস্থলে উপস্থিতি, কে কোথায় ডিউটি করছেন তা দেখে তাদেরকে কন্ট্রোল রুম থেকে দিক নির্দেশনা দেয়া যাচ্ছে। এই এ্যাপসের মাধ্যমে জেলা পুলিশের কতজন ছুটিতে, কতজন ট্রেনিংয়ে, কতজন মিশনে আছেন তা জানা যাচ্ছে। তেমনি এই এ্যাপসের মাধ্যমে থানায় মামলা এট্রি করা, আসামী সার্চ করা, সিডি লেখা, আসামী ফরোয়াডিং দেয়া, অনুসন্ধ্যান স্লিপ পাঠানো, নোট লেখা, চার্জশীট লেখাসহ নানা ধরনের কাজ করা যায়। কোন লোকের বিরুদ্ধে মামলা আছে কিনা, কয়টি মামলা আছে, কোন থানায় কতটি মামলা আছে তা জানা যায়।

পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান আরও বলেন, বিট পুলিশের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মামলার পরিমাণ অনেক কমেছে। ২০১৯ইং সাল থেকে চলতি বছরের (২০২১ইং) জুলাই মাস পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত ১০ হাজার ৪১৪টি মামলার মধ্যে পুলিশ ৮ হাজার ৬২৩টি মামলা নিষ্পত্তি করেছে। বিট পুলিশিং এর কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দাঙ্গাসহ নারী নির্যাতন মামলা কমেছে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় দায়েরকৃত ৫৬টি মামলায় ৬৫০জন আসামীকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬জন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবাদবন্দী প্রদান করেছেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ বিভাগে অপরাধীদের কোন স্থান নেই। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে গত দুই বছরে (তার কার্যকালে) পুলিশের ২৫ সদস্যকে চাকুরিচ্যুত এবং ১০০জনকে সাজা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলায় মাদক ও অবৈধ মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। অভিযান চালানো হবে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে। পুরো শহরকে পুনরায় সিসি টিভির আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু করা হবে।প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) মোহাম্মদ আবু সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজনসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা..