স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোববার থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বসন্তকালীন পূজা “বাসন্তী পূজা”। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কেন্দ্রীয় মন্দির আনন্দময়ী কালী বাড়িতে পাচঁদিনব্যাপী বাসন্তী পূজার আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে মহাসপ্তমী পূজা। সপ্তমী পূজায় ভক্তরা মায়ের রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলী প্রদান করেছেন। অঞ্জলী প্রদানকালে ভক্তরা করোনা মহামারী থেকে মুক্তির প্রার্থনা করেছেন।
রোববার সন্ধ্যায় ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ৫দিন ব্যাপী বাসন্তী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বাসন্তী দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হয়। আজ সোমবার সকালে সপ্তমী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মহাসপ্তমীতে দেবীকে প্রাণ প্রতিষ্ঠা, চক্ষুদান, ঘট স্থাপন সহ ষোড়শ উপাচারে পূজা করাহয়। দুপুর ১টায় অঞ্জলী প্রদান করা হয়।
অঞ্জলী প্রদান কালে ভক্ত বনশ্রী দেবনাথ জানান, নিজের এবং পরিবারের সমৃদ্ধির পাশাপাশি চলমান মহামারী করোনা থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছি। মা-দূর্গা শরৎকালে শারদীয় দেবী, বসন্তকালে মা বাসন্তীরূপে বিরাজিতা। তিনি যেন সবাইকে সুস্থ রাখে, সকলের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে দেয় সেই প্রার্থনা করেছি।
অপু দেব নামে অপর এক ভক্ত জানান, মা-সকল ভক্তের মাঝে বিরাজিতা। তিনি পরম মমতাময়ী। মায়ের রাতুল চরণে প্রার্থনা করেছি। তিনি সকলকে যেন ভাল রাখেন সুস্থ রাখেন মহামারী করোনা থেকে সুস্থ রাখেন সেই প্রার্থনা করছি।
অঞ্জলী প্রদান শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। রাতে দেবীর অর্ধরাত্রী বিহিতপূজা (শ্রী শ্রী কালিপূজা) অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সকালে অষ্টমী পূজা ও দুপুর ১টায় অঞ্জলী প্রদান করা হবে। সন্ধ্যায় সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার সকালে নবমী পূজা ও দুপুর ১টায় অঞ্জলী প্রদান শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার দশমীতে রাত ১০টায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বাসন্তী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ীর প্রধান পুরোহিত গোবিন্দ চক্রবর্তী জানায়, দুর্গাপূজা হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসব প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী বাংলার প্রথম দূর্গাপূজার প্রচলন করেন রাজা সুরথ। তিনি রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য বসন্তকালে দেবী দূর্গাকে বিশেষ উপাচারে পূজা করে রাজ্য ফিরে পেয়েছিলেন। এর পর থেকে ভক্তরা বাসন্তী পূজা করে আসছে।
অন্য দিকে ত্রেতাযুগে প্রভু রামচন্দ্র রাবণকে পরাজিত করার জন্যে দেবি দূর্গার আরাধনা করে পূজা করেছিলেন। এর পর থেকে শরৎকালে দেবীর অকাল বোধন শারদীয় দূর্গোৎসব হয়ে আসছে।
তিনি জানান, এবছর করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মহামারী করোনা থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
পুরোহিত গোবিন্দ চক্রবর্তী জানান, এবার দেবী গজে আগমন ও দোলায় গমন করবেন। এর মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ যেন হয় পুরো পৃথিবী এই প্রার্থনা করা হয়।
Leave a Reply