ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বাঁধা!

 

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা আওয়ামীলীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে বাঁধা দিয়েছে পুলিশ। বাঁধার কারনে তরিঘরি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করতে বাধ্য হন আয়োজকরা।

রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও প্রয়াত সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চুর মৌলভীপাড়ার বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কর্তব্যরত সাংবাদিকদের সাথেও অশোভন আচরন করেন।

সম্প্রতি জেলার বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগ, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবের প্রতিবাদে রোববার দুপুর ১২টায় জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফুল হাই সাচ্চুর বাসভবন প্রাঙ্গনে ওই ৫ নেতার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দল থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবকৃত নেতা আমানুল হক সেন্টু লিখিত বক্তব্য পাঠ করার সময় সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এ. বি.এম মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাঁধা প্রদান করেন। এ সময় পুলিশের সাথে সংবাদ সম্মেলন আহবানকারীদের তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। পুলিশের বাঁধার মুখে তরিঘরি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করতে বাধ্য হয় আয়োজকরা। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সদর থানার সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) শিমুল পারভেজ সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিনারা আলম, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি কাউসার আহমেদ প্রমুখ।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর বিরোধীতা করায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম, জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা আমানুল হক সেন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিনারা আলম ও জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি কাউছার আলমকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায় দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

সদ্য অনুষ্ঠিত জেলার বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামীলীগের সম্মেলনে নেতারা এই ৫ নেতার বহিষ্কার দাবি করে কাউন্সিলের সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গ্রহণ করে ও কাউন্সিলদের সুপারিশ জেলা আওয়ামীলীগের কাছে প্রেরণ করে।

এর আগেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ওই ৫ নেতাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের জন্য সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব করা হয়। এই ৫ নেতার মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, একই সময়ে এবং একই স্থানে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনের কর্মসূচী ঘোষনা করায় আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয় সেজন্য সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সাথে পুলিশের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এ.বি.এম মশিউজ্জামান বলেন, একই সময়ে ও একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী ঘোষনা করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রাখতে সেখানে আমরা গিয়েছিলাম।
###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা..