সুমন আহম্মেদঃ
বণাজি গাছের ঝোঁপঝাঁড়। সামান্য দূরত্বে কাঠ ও ফলের গাছ। বাড়ির ওঠানে কাপড় শুকানোর জন্য ঝুলছে ক্যাবল (লোহা ও তামার)। এসবের মাঝখান দিয়েই সরাইল পিডিবি টেনে দিয়েছেন মোটা সার্ভিস সিঙ্গেল (এক তারের) ক্যাবল। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ওই ক্যাবল থেকেই শতাধিক গ্রাহককে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। সরাইল উপজেলার পল্লী একা চুন্টা ইউনিয়নের ঘাগড়াজোর এলাকায় দেয়া হয়েছে এ সংযোগ।
প্রায় আধা কিলোমিটার দূরত্বে তিন তারে লাইন দিতে ৪ খুঁটির জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চেয়েছেন বিল বিতরণকারী মো. কিবরিয়া। তার সাথে রয়েছেন হানিফ নামের আরেক কর্মকর্তা। দরদামে মিলেনি। তাই ভুগান্তিতে পড়েছে ঘাগড়াজোর গ্রামের শতাধিক গ্রাহক। অস্থায়ী কর্মচারি কিবরিয়া গত ২-৩ বছর আগে চুক্তির ভিত্তিতে চুন্টা বাজারে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মিটার বাইপাস সংযোগ দিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন।
পরে আবার যাদু মন্ত্র দিয়ে কিভাবে বেঁচেও গেলেন। সরজমিনে ঘাগড়াজোর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় প্রায় আধা কিলোমিটারেরও অধিক জায়গার শতাধিক গ্রাহক ছটফট করছেন। মাটিতে পড়ে রয়েছে ডিশ লাইনের ক্যাবলের বান্ডিল। ওই এলাকার বিদ্যুতের পুরাতন ৪-৫টি খুঁটি তুলে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন পিডিবি’র লোকজন। গ্রামের আরেক অংশে বসানো হয়েছে নতুন পুরাতন খুঁটি। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদির (৫০),
আজিজুর রহমান (৫৩) ও হাবিবুর রহমান (৭২) জানান, ১০-১২ বছর আগে তারা প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ করে ৪/৫টি খুঁটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলেন। হঠাৎ করে গত ২-৩ মাস আগ থেকে সেখানকার পুরাতন খুঁটি গুলো তুলে নিতে থাকে পিডিবি। লোকজন বাঁধা দেয়। পিডিবি থামেনি। আস্তে আস্তে সেখানকার ৪টি খুঁটিই পিডিবি উঠিয়ে নিয়ে আসে। একাধারে ৩ দিন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকে ওই গ্রামের লোকজন। মসজিদের মুসল্লি, রোগী ও শিশুরা প্রচন্ড কষ্ট করে। ফ্রিজের কাঁচা মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। গরুর খামারিরা পড়ে বিপাকে। গ্রামবাসী বিষয়টি মিডিয়ার লোকজনকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে অবহিত করেন। ওইদিন সন্ধ্যার সময় তড়িঘড়ি করে পিডিডি’র লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতেই ওই এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ দিয়েছেন।
যেকোন সময় ওই সংযোগে স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণহানির ঘটনার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন গ্রামবাসী। সিঙ্গেল ক্যাবল ছিদ্র হয়ে গাছ টিনের চাল ও ওঠানের কাপড় শুকানোর তারেও বিদ্যুৎ এসে যেতে পারে। আব্দুল হান্নান (৩৮) নামের আরেক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, গ্রামের এই অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে ৪ খুঁটির জন্য কিবরিয়া ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা চেয়েছেন। আমরা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বলেছি। এতে রাজি হয়নি। টাকা একটু বেশী পেয়ে আমাদেরকে বঞ্চিত করে গ্রামের আরেক অংশে খুঁটি বসানোর কাজ করছেন।
আমাদের পুরাতন খুঁটি গুলোও সেখানে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদেরকে ৪-৫ দিন অন্ধকারে রেখেছেন। গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, এ কাজের সাথে লাইনম্যান-বি মো. আব্দুস সবুর ও লাইনের কাজের সাহায্যকারী মো. হানিফ মিয়াও এ কাজের সাথে জড়িত। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) নওয়াজ আহমেদ খান বলেন, এ লাইনের কাজের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। খুঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব।
###
Leave a Reply