নিজ উদ্যোগে পুকুরে ফেলা বালি অপসারনের কাজ শুরু করেছেন মালিকপক্ষ

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্দেশে পৌর এলাকার মধ্যপাড়ায় অবৈধভাবে ভরাটকৃত একটি পুকুরের বালি অপসারনের কাজ শুরু করেছেন পুকুরের মালিকপক্ষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে ৬/৭জন শ্রমিক পুকুরে নেমে পুকুর থেকে বালি অপসারনের কাজ শুরু করেন। অপসারণকৃত বালি ভ্যানে করে অনত্র নেয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পুকুরের মালিকপক্ষের শাহআলম বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা নিজ খরচে অবৈধভাবে ভরাটকৃত পুকুরের বালি অপসারণ শুরু করেছি। তিনি বলেন, রাতের বেলা ভেকু মেশিন এনে পুকুরের তলদেশ থেকে বালি অপসারন কাজ শুরু করা হবে। তিনি বলেন, প্রশাসনের দেয়া সময়সীমার মধ্যেই পুকুরে ফেলা বালি অপসারণ করা হবে।

উল্লেখ্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মধ্যপাড়ায় রাতের আঁধারে অবৈধভাবে একটি পুকুর ভরাট করার দায়ে ওই পুকুরের মালিকপক্ষের মোঃ শাহজাহান মিয়া-(৫৫) কে গত সোমবার বিকেলে ২ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদন্ড এবং আগামী তিনদিনের মধ্যে ব্যক্তি খরচে পুকুরে ফেলা বালি অপসারণ করে পুকুরকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালত।

সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদার এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। দন্ড পাওয়া মোঃ শাহজাহান মিয়া মধ্যপাড়ার বাওলা দীঘির পাড়ের মরহুম সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

এর আগে অবৈধভাবে পুকুর ভরাটের খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়–য়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক পুকুর ভরাট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে পুকুর ভরাট করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও পুকুরটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেন।

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়–য়া পুকুরের মালিকপক্ষের শাহজাহান মিয়া ডেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যান।
পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শাহজাহান মিয়াকে দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের জেল প্রদান করেন। পাশাপাশি আগামী তিনদিনের মধ্যে ব্যক্তি খরচে পুকুরে ফেলা বালি অপসারণ করে পুকুরকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে মালিকপক্ষকে নির্দেশ দেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার মধ্যপাড়া বর্ডার বাজারের উত্তর পাশে ৫নং ওয়ার্ড এলাকায় বিএস খতিয়ান নং- ৪৩৪ ও বিএস দাগ নং-৬৬১ এর পুকুরটি পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশ অমান্য করে পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহন ছাড়াই পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। ওই এলাকার শাহজাহান মিয়া, মোঃ শাহ আলম, পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলী আহসান কাওছার, মোঃ মুনির হাজী, আলী হোসেনসহ অজ্ঞাত আরো তিন-চারজন মিলে পুকুরটি ভরাট করছেন। প্রায় ১৫ ফুট গভীরের এ পুকুরটির দক্ষিণ পশ্চিমাংশে ৯০০ বর্গফুট ও উত্তরাংশে ৬০০ বর্গফুট অংশ ভরাট করা হয়।

এ বিষয়ে বর্ডার বাজার জামে মসজিদ ও এলাকাবাসীর পক্ষে ডাঃ মো. আবু সাঈদ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, নাজমুল ইসলাম, মোঃ সুজন মিয়া, মাহবুব আলম, মনির হোসেন, মোঃ সুজন মিয়া প্রমুখ বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলী আহসান কাউসারের নেতৃত্বে রাতের বেলা ট্রাক্টরে করে বালি ফেলে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কাউন্সিলর কাউছার পুকুর ভরাট করে সেখানে তার একটি অফিস নির্মান করেছেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে পুকুরের মালিকেরা মঙ্গলবার সকাল থেকে পুকুরে ফেলা বালি অপসারনের কাজ শুরু করেছে। তিনি বলেন, পুকুরটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।                                                       ###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা..