সুমন আহম্মেদঃ
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার বাজারগুলোতে মনিটরিং করায় ও জেলা সদরসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হওয়ায় স্বস্তিতে রমজান মাস পালন করতে পেরেছেন জেলাবাসী। নিয়মিত বাজারগুলো মনিটরিং করায় ভেজাল পন্য বিক্রেতা ও অসাধু ব্যবসায়ীরা সুবিধা করতে পারেনি।
রমজান শুরু হওয়ার পর গত ৭ মে থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ৪৯৫ জনকে ২১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জরিমানাসহ বিভিন্ন আইনে ১১ জনকে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জেলাবাসী যেন স্বস্তিতে পবিত রমজান মাস উদযাপন করতে পারেন, রমজান মাসে রোজাদারদেরকে যাতে ভেজাল খাদ্য খেতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেলার শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
রমজান মাস শুরু হওয়ার পর প্রথম রমজান থেকেই জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে পর্যায়ক্রমে জেলার বিভিন্ন বাজার, অভিজাত মার্কেট ও বিপনী বিতানগুলো পরিদর্শন করতে থাকেন।
তাঁর নির্দেশে বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগন রমজান মাস শুরু হওয়ার আগ থেকেই খাদ্যদ্রব্য ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, মানসম্মত খাদ্য ও ইফতার নিশ্চিতকরণ, যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখার জন্য সড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই উৎপাদন, দুধে ভেজাল নিরসনে অভিযান পরিচালনাসহ মেয়াদোত্তীর্ণ পন্য ও ঔষধ বিনষ্ট করে।
ভ্রাম্যমান আদালত ও দ্রব্যমূল্য মনিটরিং এর কারনে বাজারে মাংসের দাম ও মান নিশ্চিতকরণ, রাসায়নিক দ্রব্যে ফল পাকানো বন্ধকরণ ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অনুরোধে বাজার থেকে হাইকোর্ট নির্দেশিত ৫২ টি পণ্যের প্রত্যাহার ও বিক্রয় বন্ধ নিশ্চিত করে। মাসজুড়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় নকল ট্যাং ও ভেজাল গুড় তৈরির কারখানার মালামাল জব্দ করা, বিপুল পরিমান খাবার অনুপযোগী পঁচা খেজুর ধংস করা হয়।
ইফতার সামগ্রীতে পোড়া তেলে ইফতার ভাজা, খাবারে কাপড়ের রঙ ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইফতার তৈরি ও বিক্রয়কে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
গত ৭ মে থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালত ৪৫৩ জনকে ২১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা জরিমানাসহ বিভিন্ন আইনে ১১ জনকে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার এন্ড কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি মোঃ আজিজুল হক বলেন, আমরা পুরো রমজান মাস জেলা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে রেখেছি।
এ ব্যাপারে জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দত্ত বলেন, জেলা প্রশাসনের কড়া নজরদারী ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার কারনে এবছর রমজান মাসে বাজারে পন্যের দাম স্থিতিশীল ছিল। জেলাবাসী স্বস্তিতে রোজা রাখাসহ ঈদের কেনা কাটা করতে পেরেছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা রমজানের আগ থেকেই বাজারগুলোর উপর নজরদারী শুরু করেছিলাম। ব্যবসায়ী নেতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে আমরা বাজারগুলো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। এর সুফল জেলাবাসী পেয়েছে। তারা স্বস্তিতে রমজান মাসে রোজা রাখতে পেরেছেন। তিনি বলেন জেলা প্রশাসনের এই ধারা সব সময় অব্যাহত থাকবে।
###
Leave a Reply