botvনিউজ:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য মনোনীত হয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম প্রকাশ শিউলী আজাদ।
তিনি সরাইলের মাটি ও মানুষের নেতা, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ প্রয়াত এ.কে.এম ইকবাল আজাদের স্ত্রী।
বিগত ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন সাদা মনের এই মানুষটি।
এরপরই রাজনীতির মাঠে নামেন শিউলী আজাদ। স্বামীর রাজনৈতিক জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে দ্রুত দলের মধ্যে একটা ইমেজ সৃষ্টি করেন। পরে তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়কের পদ লাভ করেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শিউলী আজাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন। পরে মহাজোটের স্বার্থে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-( সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে দলীয় মনোনয়ন চান। কিন্তু সেখানে জোটের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন।
সর্বশেষ দলীয় কর্মকান্ড ও ত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৌটায় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মনোনীত হন।
এদিকে মহান স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য পেয়ে আনন্দে ভাসছে সরাইল। সর্বত্র চলছে মিষ্টি বিতরণ। প্রবাসীরাও উৎসবে মেতে উঠেছেন।
ইকবাল আজাদ ও শিউলী আজাদের নানা ছবি, কমেন্টেস-এ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এ যেন এক বিশাল প্রাপ্তি। ধন্যবাদ জানিয়ে জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন সরাইলবাসী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের এক সময়ের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার আবদুল খালেকের ছেলে এ কে এম ইকবাল আজাদ। ১৯৮৭ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমেই প্রথম হাতেখড়ি তার। ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। দলের জন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ শুরু করেন। এক সময় ইকবাল আজাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য লড়াই শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর তিনি সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন। সততা ও দক্ষতার সাথে দলকে পরিচালনা করে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। এক সময় হয়ে যান সরাইলের মাটি ও মানুষের নেতা। সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করে ইকবাল আজাদ ২০০১ সালে এবং ২০০৬ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে দলীয় মনোনয়ন চান। ২০০৮ সালে তার মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়টি তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ছিল আলোচিত বিষয়। ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর দলীয় আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে খুন হন জনপ্রিয় এই নেতা।
এদিকে প্রয়াত আজাদ ইকবালের সহধর্মীনি শিউলী আজাদ সংরক্ষিত আসনে এমপি মনোনীত হওয়ায় শনিবার সকালে সরাইল সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন পরে সরাইলে আওয়ামীলীগের একজন প্রতিনিধি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। আমরা চাই সকল ভেদাভেদ ভুলে দল ও জনগনের কল্যাণে তিনি কাজ করবেন। শিউলী আজাদ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, দল ও জনগনের জন্য আমার স্বামী ২২টি বছর সততা স্বচ্ছতার সাথে রাজনীতির মাঠে কাজ করেছেন। সরাইল নিয়ে তার অনেক ছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। নৃশংস ও নির্মমভাবে হত্যা করে সকল স্বপ্ন ধূঁলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। চিরতরে আমাকে বিধবা ও দুই সন্তানকে করেছে এতিম। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ত্যাগ ও কাজের মূল্যায়ন করেছেন। সেই সাথে হাসি ফুটিয়েছেন সরাইলের লাখো মানুষের মুখে। আমি তাঁর কাছে ঋণী ও কৃতজ্ঞ। সকলের সহযোগীতায় ইকবাল আজাদের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নে এলাকার উন্নয়নই আমার মূল লক্ষ্য।
###
Leave a Reply