botv-নিউজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পঞ্চম শ্রেণীর এক প্রতিবন্ধী ছাত্রকে বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক জোরপূর্বক বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত ১২ মার্চ ওই ছাত্রের মা এবং সদর উপজেলার গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা বিলকিছ জাহান রিমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে সহকারি শিক্ষিকা বিলকিছ জাহান রিমি বলেন, তার প্রতিবন্ধী ছেলে মোঃ আবদুল্লাহ আল সিফাত মেধাবী ছাত্র। সে সদর উপজেলার গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত। তার রোল নং-৩। প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাশে তার রোল নং ছিল ১ থেকে ৩ এর মধ্যে।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে আশীষ চন্দ্র দেব এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই প্রতিবন্ধী ছেলে মোঃ আবদুল্লাহ আল সিফাতের উপর মানসিক, নির্যাতন ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। প্রধান শিক্ষক প্রায়ই আবদুল্লাহ আল সিফাতকে আবুইল্লা বলে ডাকে। সম্প্রতি তিনি সিফাতকে নৌকা থেকে ফেলে প্রাননাশের হুমকি দেন।
অভিযোগে গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা বিলকিছ জাহান রিমি আরো বলেন, চলতি বছরের শুরুতে সিফাতের ওপর প্রধান শিক্ষক আশীষের নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি সহকারী শিক্ষিকা শিরিন আক্তারের ক্লাস চলাকালে শ্রেণীকক্ষে ঢুকে হাতে লেখার জন্য সিফাতকে কটাক্ষ করেন। এরপর সিফাতকে ১৫ দিনের মধ্যে হাতে লেখা সুন্দর করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে তাকে চতুর্থ শ্রেণিতে নামিয়ে দিতে বলেন। এ ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যায় সিফাত। সিফাতের মা প্রধান শিক্ষক আশীষকে তার মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কথা একাধিকবার জানালেও গত ৬ মার্চ প্রধান শিক্ষক আশীষ সহকারী শিক্ষক শিরিন আক্তারের মাধ্যমে সিফাতের মাকে জানিয়ে দেন, সে আর এই বিদ্যালয়ের পড়ালেখা করতে পারবে না। পরদিন সিফাতকে জোরপূর্বক বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র দেন ওই প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশীষ চন্দ্র দেব অভিযোগটি উদ্দেশ্যমূলক দাবি করে বলেন, আমি যদি ছয় বছর ধরে সিফাতকে নির্যাতন করে থাকি তাহলে এতদিন পরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলো কেন?। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক এবং ভিত্তিহীন। সিফাতের মা আমাদের বিদ্যালয় থেকে শহরে বদলি হয়ে যাবেন বলে আমাকে নিজেই বলেছেন সিফাতকে ছাড়পত্র দিতে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
###
Leave a Reply