স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের কর্মসূচী চলাকালে গত ২৬ মার্চ মাদরাসার ছাত্রদের ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ধ্বংসপ্রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনটি দ্রুত সংস্কার করে ট্রেনের যাত্রাবিরতি পুনরায় চালু করার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
আজ বেলা সাড়ে ১১টায় সচেতন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহিদ লাভলু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির পরিচালক শাহআলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র হোসনে আরা বাবুল বাবুল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২৬ মার্চ হেফাজতের সন্ত্রাসীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে হামলা করে স্টেশনের কন্ট্রোল রুমের সিগন্যাল প্যানেল ভাংচুর করে পুড়িয়ে দেয়াসহ পুরো স্টেশনটি ভাংচুর করে লন্ডভন্ড করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি বলতে চাই, ভবিষ্যতে হেফাজতকে এ ধরনের কর্মকান্ড করতে দেয়া হবে না।
বক্তারা বলেন, গত ২৪ মে থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে কোন ট্রেন যাত্রা বিরতি দিচ্ছেনা। বক্তারা অবিলম্বে ধ্বংসপ্রায় রেলওয়ে স্টেশনটি সংস্কার করে স্টেশনটিতে ট্রেনের যাত্রাবিরতি পুনরায় চালু করার দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা হেফাজতের তান্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। মানববন্ধনে বলা হয়, একই দাবিতে বুধবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তির অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়।
এসময় হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌরসভা কার্যালয়, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবসহ সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরিতে পরিণত করে।