স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে “সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার” উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বেলা ১১ টায় সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারের নুকুল হেয়ার কাটিং সেলুনে ফিতা কেটে পাঠাগারটি উদ্বোধন উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ও অরুয়াইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাহের উদ্দিন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজি মোঃ আবু তালেব, সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মোঃ শফিক, অরুয়াইল প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি প্রফেসর মোঃ এলাই মিয়া, সাধারণ সম্পাদক এম. মনসুর আলী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আসিফ ইকবাল খোকন, সরাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আখতার হোসেন, অরুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মোঃ বোরহান উদ্দিন, শিক্ষক গোপাল চন্দ্র গোপ, ইসমাইল মিয়া, জহরলাল সূত্রধর, খোকন বিশ্বাস, সুজন বিশ্বাস এবং “ সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার” এর উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা হারুন-অর-রশীদ ।

সেলুন ভিত্তিক পাঠাগারের কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুধীজনরা বলেন, মাদকমুক্ত ও আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে পাঠাগার আন্দোলন ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

পাঠাগারের উদ্যোক্তা, প্রতিশ্রুতিশীল লেখক ও বিশিষ্ট ব্যাংকার হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকার নবাবগঞ্জে সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমের যাত্রা শুরু। পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় এ ধরণের ৬৪ টি পাঠাগার স্থাপন করা হবে।
সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার আন্দোলনের উদ্যোক্তা বইপ্রেমী হারুন অর রশীদ কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া আবদুল্লাহ পুরের আসাদুল্লাহ মাস্টারের ছেলে ।

সরাইলে সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার উদ্বোধন


স্টাফ রিপোর্টার ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

করোনা পরিস্থিতি ও আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকূল থাকার পরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। গত প্রায় ১০দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার আউলিয়া বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে লিচু বেচা-কেনা হচ্ছে। দাম নাগালের মধ্যে থাকায় বেচা-বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। বিজয়নগর উপজেলার লিচু মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় দেশজুড়ে রয়েছে এই লিচুর সুনাম ও খ্যাতি। এ বছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বিজয়নগরে লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন চাষীরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজয়নগর উপজেলায় ৩৭৫ হেক্টর, আখাউড়ায় ৯০ হেক্টর ও কসবা উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। বাকী ৬ উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০২ সাল থেকে বিজয়নগর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ করা শুরু হয়। কম পরিশ্রমে বেশী লাভ হওয়ায় এখানকার ধানি জমিগুলোকেও লিচু বাগানে পরিনত করতে থাকেন চাষীরা।

বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমোড়া, নুরপুর, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, চান্দপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, রূপা, শান্তামোড়া, কামালপুর, কচুয়ামোড়া, ভিটিদাউপুর এলাকায় প্রায় চার শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে দেশী লিচু, এলাচি লিচু, চায়না লিচু, পাটনাই লিচু ও বোম্বাই লিচু চাষ করা হয়।

এছাড়াও উপজেলার প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই একটি লিচু গাছ আছে। যাদের বাড়িতেই একটু জায়গা আছে, তারা প্রত্যেকেই বাড়িতে অন্যান্য ফলের গাছের সাথে লিচু গাছ লাগান।

এলাকাবাসী ও চাষীরা জানান, লিচু গাছে মুকুল আসার পর থেকে কয়েক দফা বাগান বিক্রি হয়। গাছে মুকুল ও গুটি আসার পর প্রথমে বাগান কিনেন স্থানীয় ও বিভিন্ন জেলার মহাজনরা। গুটি একটু বড় হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় গাছ বিক্রি হয়। লিচু আকার ধারণ করলে তৃতীয় দফায় বিক্রি হয়। লিচু বড় হলে চতুর্থ দফায় বাগান বিক্রি হয়।

বিজয়নগর উপজেলার সবচেয়ে বড় লিচুর বাজার হচ্ছে আউলিয়া বাজার। এছাড়াও উপজেলার মেরাশানী, মুকুন্দপুর, কাংকইরা বাজার, চম্পকনগর, সিঙ্গারবিল বাজার, আমতলী বাজারসহ আরো কয়েকটি বাজারে পাইকারীভাবে লিচু বেচা-কেনা হয়।
প্রতিদিন ভোর রাত ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এসব বাজারে লিচু বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন উপজেলার আউলিয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রায় ১৫/২০ লাখ টাকার লিচু বেচা-কেনা হয়। এসব বাজার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা লিচু কিনে বিভিন্ন যানবাহনে করে নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার আউলিয়া বাজারসহ অন্যান্য বাজারগুলোতে বর্তমানে প্রতি হাজার দেশী লিচু দেড় হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, প্রতি হাজার এলাচি ও চায়না লিচু ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, পাটনাই ও বোম্বাই লিচু ২ হাজার ২০০ থেকে ২৫০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা থেকে লিচু কিনতে আসা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, বাজারে বিজয়নগরের লিচুর বিশেষ চাহিদা থাকায় আমি প্রতি বছরই এখান থেকে লিচু কিনে কুমিল্লায় নিয়ে পাইকারী বিক্রি করি। এখানকার লিচু মিষ্টি ও সু-স্বাদু হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এর চাহিদা বেশি। তিনি বলেন, এখান থেকে প্রতি একশ লিচু পাইকারী ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় কিনে কুমিল্লায় নিয়ে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করি।


হবিগঞ্জ জেলার ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন জানান, গত তিনদিন ধরে তিনি আউলিয়া বাজারে আসছেন। প্রতিদিন তিনি গড়ে প্রায় লাখ টাকার উপরে লিচু কিনেন। তিনি বলেন, লাভ একটু কম হলেও এখানকার লিচু অনেক ভালো ও মিষ্টি হওয়ায় চাহিদা থাকে বেশি।

বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের শেখ সায়মন জানান, তিনি তার প্রতিবেশী কৃষকের কাছ থেকে তিন বছরের জন্য দুইটি বাগান সাড়ে ৩ লাখ টাকায় কিনেছেন। দুইটি বাগানে ৩২টি লিচু গাছ আছে। পরিচর্যায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। দুইটি বাগানে যে পরিমাণ লিচু আছে, তা বিক্রি হবে আনুমানিক দেড় লাখ টাকা।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কালাছড়া গ্রামের লিচু চাষী আক্তার হোসেন বলেন, ৬০ শতাংশ জমিতে আমার লিচুর বাগান। এবার বোম্বাই জাতের লিচু চাষ করেছি। আগে মৌসুমের শুরুতে বাগান বিক্রি করে দিতাম। কিন্তু এবার বিক্রি করিনি। আশা করছি খরচ মিটিয়ে আড়াই লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারব।

একই এলাকার অপর চাষি মহসিন জানান, ১২০ শতাংশ জমিতে তার তিনটি লিচুর বাগান রয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার খরার কারণে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তিনি তিনটি বাগানের লিচু ৩ লাখ টাকার মতো বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারনা করছেন।

এ ব্যাপারে আউলিয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, লিচু বাজার ও বাগানে দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন যাতে সুন্দরভাবে লিচু ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন সেদিকে পুলিশের মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক মোঃ রবিউল হক মজুমদার বলেন, লিচুর ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমপক্ষে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করা হবে। আর ১০/১২ দিন বাজারে লিচু পাওয়া যাবে।

বিজয়নগরে লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় কোটি টাকার লিচু বিক্রির আশাবাদ

গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত ইসলাম কর্তৃক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও তান্ডবলীলা চালায়। সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীতে পরিনত করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের বিশেষ আভিযানিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ-২০২১খ্রিঃ হেফাজত
ইসলাম কর্তৃক বিক্ষোভ কর্মসূচি ও হরতাল চলাকালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের তান্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট ০৪ জন হেফাজত কর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উক্ত সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। উল্লেখ্য হেফাজতের তান্ডবে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯ টি, আশুগঞ্জ থানায় ০৪ টি ও সরাইল থানায় ০২ টিসহ সর্বমোট ৫৫টি মামলা রুজু হয়েছে। এসকল মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ হাজার লোকের নামে মামলা হয়েছে। এসকল মামলায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বমোট ৫১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রেস রিলিজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তান্ডবে অগ্নিসংযোগ ও তান্ডবে জড়িত আরও ০৪ জন গ্রেফতার

ফেসবুকে আমরা..