সুমন আহম্মেদঃ
আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের তৎকালীন পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারী ভবন সংলগ্ন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত ঘোষনা করেছিলেন।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় স্থানীয় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসূচীর উদ্বোধন করবেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান। পরে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন ও সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খা পৌর মিলনায়তনে আলোচনা সভা।

এর আগে সকাল ৮টা ৮ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে জেলার আটজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা উদ্বোধন করবেন “আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া” সংগঠনের উদ্যোগে “রঙিন হবে আমাদের স্কুল” কর্মসূচীর আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে আঁকা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ছবি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্র“মুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্র বাহিনী পাক বাহিনীর উপর বেপরোয়া আক্রমন চালাতে থাকে। ১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধে ২০ হানাদার নিহত হয়। ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। এখানে ১১ হানাদার নিহত হয়, শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা। এরই মাঝে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে। ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্র“মুক্ত হয়ে পড়ে। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাক বাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।

এরপর থেকে চলতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করার প্রস্তুতি। মুক্তি বাহিনীর একটি অংশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্র বাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানিসার সড়ক দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের চতুর্দিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় পাক সেনারা পালিয়ে যাবার সময় ৬ ডিসেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমান সহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ ডিসেম্বর রাতের আধারে পাকিস্তানী বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাঁধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করে। মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। একই দিন সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলা শত্র“মুক্ত হয়।
###

আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন শিশুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।  শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে মনোজ্ঞ এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। বিশেষ ক্ষমতা স¤পন্ন শিশুরা নাচ, গান, অভিনয় করে শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চ মাতিয়েছে।

শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান।

শিল্পকলা একাডেমির সহ-সভাপতি আল-মামুন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ বড়–য়া প্রমুখ।

নাচ, গান ও অভিনয় পরিবেশন করে কবিতা খাতুন, রিমন মিয়া, গোবিন্দ সাহা, মো. মহিউদ্দিন, মাহুমা খানম, লিজা রানী দাস, হুমায়ারা সিদ্দিকা নুন, মুজাহিদ রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস তন্নী, মামুনূর রশিদ রনি, সাওবান, রাব্বি।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারন সম্পাদক উসমান গণি সজীব জানান, বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন শিশুদের এমন পরিবেশনা দেখে সবাই মুগ্ধ। এমন সুন্দর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে সুযোগ পেলে তারা অনেক কিছুই করতে পারে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, ‘ওই শিশুরা অন্য আট-১০টা শিশুর মতোই। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন অনেক শিশুই ইতিমধ্যেই বিভিন্নভাবে সাফল্য অর্জন করেছে। আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে আরো আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
###

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশেষ ক্ষমতা সম্ন্নপ শিশুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

ফেসবুকে আমরা..