সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই খন্দকার বাবর পরিচয়দানকারী প্রতারক মোঃ ইয়াছিন খাঁ ওরফে খন্দকার বাবর-(৪০) নামে এক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় হাফেজ মুফতি আব্দুর রহিম-(৩৩) নামে তার এক সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এই তথ্য জানান।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলার কোতোয়ালী এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক মোঃ ইয়াছিন খাঁ ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের মরহুম মোঃ সোলেমান খাঁর ছেলে এবং গ্রেপ্তারকৃত হাফেজ মুফতি আব্দুর রহিম কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার মনোহরদিয়া গ্রামের মৃত সাহার আলীর ছেলে। মুফতি আবদুর রহিম বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার চেলিখলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার শাহী জামে মসজিদে ইমামতি করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলার আসামী হিসেবে পুলিশ শুক্রবার দুপুরে তাদেরকে বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, প্রতারক ইয়াছিন খাঁ নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই খন্দকার বাবর এবং সরকারি বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আবু মুছার ছেলে মোঃ ইছহাককে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা গ্রহণ করেন। পরে ইছহাকের চাকরী না হলে ইছহাকের পরিবার তাদের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর ইয়াছিন আমাকে মোবাইল ফোনে ফোন করে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। সে জানায় চাকরি দেয়ার জন্য নেয়া টাকা সে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়েছে। কিন্তু তারা চাকরি প্রার্থীর কথা ডিআইজি-এসপিকে বলেননি। পরবর্তীতে আমরা তদন্তে জানতে পারি সে একজন প্রতারক। মূলত সরকারের বড় কর্মকর্তা পরিচয়ে চাকরি দেয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করাই তার কাজ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান আরো বলেন, প্রতারক ইয়াছিন খাঁ তাকে মোবাইল ফোনে আরো বলেন, “ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হওয়ার পেছনে ইয়াছিনের ভূমিকা রয়েছে। সেজন্য তিনি তাকে স্যার বলে ডাকেন। কিন্তু ইয়াছিন তাকে বলেছে আপনি এখন বড় র্যাঙ্কের অফিসার, তাই আমাকে স্যার ডাকার দরকার নেই”।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মেহেদী হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার ( পুলিশের বিশেষ শাখা) আলাউদ্দিন চৌধুরী, বিশেষ শাখার ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আমম্মেদ ও নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
###