সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে স্ত্রীর পরকীয়ার বলি শফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে-(২৫) তিন বছর এবং নিহতের সৎ ভাই জসিম উদ্দিনকে-(২৬) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম এই দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম উদ্দিন নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের মরহুম ইদ্রিস মোল্লার ছেলে এবং মরিয়ম বেগম ইব্রাহিমপুর গ্রামের লাল মিয়ার কন্যা এবং নিহত শফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগমের সাথে তার বিমাতা ভাই জসিম উদ্দিনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল।
২০১২ সালের ৩ অক্টোবর রাতে নিজ ঘরে জসিম ও মরিয়মকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন শফিকুল। পরে জসিম ও মরিয়ম দু’জন মিলে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে শফিকুলকে হত্যা করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে হত্যাকান্ডের পরদিন তড়িঘড়ি করে শফিকুলের লাশ দাফন করা হয়।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই বছরের ২৫ অক্টোবর নিহতের খালাতো ভাই রাজন মিয়া বাদী হয়ে জসিম উদ্দিন ও নিহতের স্ত্রী মরিম বেগমকে আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) নাসির উদ্দিন শরীফ মামলাটি তদন্ত করে মোট ৯ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে সাক্ষ্য গ্রহন করেন।
আদালত মামলাটি পর্যালোচনা করে আসামীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় মামলার প্রধান আসামী মোঃ জসীম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং নিহতের স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় মরিয়ম বেগম আদালতে উপস্থিত থাকলেও ঘটনার পর থেকে আসামী জসীম উদ্দিন পলাতক রয়েছেন। এদিকে রায় শুনে আদালতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিহতের স্ত্রী মরিয়ম বেগম।
মামলার রায় শুনে বাদি রাজন মিয়া এবং বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ খান সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরিফুল হক মাসুদ জানান, তারা ন্যায় বিচার পাননি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
###