সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মোরসালিন নামে ১০ বছর বয়সি শিশু সন্তানকে হত্যার পর ছেলেধরা বলে গুজব ছড়াতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েছে বাবা মোঃ মোশাহিদ মিয়া-(৩৫)। গত রোববার রাতে উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘাতক পিতা মোশাহিদ মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। মোশাহিদ চিহ্নিত মাদকাসেবী। নিহত মোরসালিন ধরমন্ডল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।

এ ঘটনায় নিহতের মা হাসিনা আক্তার বাদি হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে নাসিরনগর থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ কবির আহমেদ বলেন, মোশাহিদ একজন চিহ্নিত মাদকাসেবী। সে দুটি বিয়ে করেছে। বড় স্ত্রীর সাথে তার বনিবনা ছিলনা। গত কয়েকদিন ধরে সে বড় স্ত্রী হাসিনা আক্তারের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই সুযোগে রোববার সন্ধ্যায় মোশাহিদ তার বড় স্ত্রীর ছেলে মোরসালিনকে ঘর থেকে ডেকে বাড়ির পাশের কবরস্থানের কাছে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

রাত নয়টার দিকে মোশাহিদ বাড়িতে এসে বলতে থাকে তার ছেলেকে ছেলে ধরা নিয়ে গেছে। বিষয়টি এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তাকে আটক করে। পরে বাড়ির পাশে কবরস্থানের ডোবায় কচুরিপানাতে লুকিয়ে রাখা মোরসালিনের লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন।

পরিদর্শক (তদন্ত) কবির আহমেদ আরো বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রীর প্রতি প্রতিশোধ নিতে কিংবা কোনো প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সে এ ধরণে কাজ করেছে। ব্লেড কিংবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে ও শ্বাসরোধে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা হাসিনা আক্তার বাদি হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে নাসিরনগর থানায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
###

নাসিরনগরে ছেলেকে হত্যার পর ছেলেধরা গুজব ॥ পিতা গ্রেপ্তার

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেছেন, কাজ করার মধ্যেই আনন্দ, কাজের মধ্যেই স্বার্থকতা। মানুষের জন্যই কাজ করা।

তিনি গতকাল সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে প্রেসব্রিফিংয়ে একথা বলেন।

এ সময় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আরো বলেন, সরকার বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সাংবাদিকরা হলেন সমাজ বির্নিমানের কারিগর। কাউন্সিলিংয়ের হাতিয়ার হচ্ছে মিডিয়া। তিনি বলেন, আমি এ জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছি।

আমি সকল ভালো কাজের সাথে থাকবো। সবাই মিলেমিশে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করবো। তিনি বলেন, মাদক হচ্ছে আমাদের সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা। মাদক থেকে হাজারো সমস্যার সৃষ্টি হয়। একটি জাতিকে ধংস করতে মাদকই যথেষ্ট। মাদকের বিষয়ে কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবেনা।

পুলিশ সুপার বলেন, পরিবার হচ্ছে সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরিবার থেকেই আমরা ভালো-মন্দ বুঝতে শিখি। তিনি বলেন, অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাকে কোন ছাড় দেয়া হবেনা। অপরাধীদের কোন পরিচয় নেই, তাদের একটাই পরিচয় তারা অপরাধী। তিনি ইভটিজার, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, ভূমিদস্যু, ছিনতাইকারীদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, কোন অপকর্ম করে আপনারা পার পাবেন না। তিনি গুজবে কান না দিতে সকল স্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, যতদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থাকবো ততদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্যই কাজ করবো।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করবো। নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে বলেন, মাদক ব্যবসার সাথে পুলিশের কোন সদস্যও যদি জড়িত থাকেন, প্রমান পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা হলেন, সমাজ বির্নিমানের কারিগর ।

আমার সকল ভালো কাজে সাংবাদিক সমাজের সহযোগীতা চাই। প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল কবিরসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি খ.আ.ম. রশিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
###

সাংবাদিকদের সাথে প্রেসব্রিফিং করলেন নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান

ফেসবুকে আমরা..