সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ধর্মতীর্থ এলাকার বধ্যভূমি থেকে শহীদদের নামফলক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। আবহাওয়া অনুকুলে এলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৮ অক্টোবর উপজেলার চুন্টা সেনবাড়ির ২২ জনসহ সরাইল থানায় ও কালিকচ্ছ ক্যাম্পে আটক শতাধিক লোককে ধর্মতীর্থ নৌ ঘাটে লাইনে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বর্বর পাকবাহিনী। তবে সবার পরিচয় মেলেনি। পরবর্তীতে ধর্মতীর্থ বধ্যভূমি হিসেবে জায়গাটি পরিচিতি পায়।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার সহায়তায় ওই বধ্যভূমিতে ১২ ফুট উচ্চতা এবং ৪ ফুট প্রস্থের লোহার তৈরি একটি ফলক স্থাপন করা হয়। ফলকে ৪৬ জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা লাগানো হয়। পরবর্তীতে ফলক থেকে নামের তালিকাটি চুরি হয়ে যায়।

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খানসহ অনেকে বধ্যভূমিটি সরজমিনে পরিদর্শন করেন। গত বুধবার রাতে বধ্যভূমির ওই নাম ফলকটির নিচের ঢালাই করা পিলারের লোহার তৈরি খুঁটি ভেঙ্গে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা। বধ্যভূমির জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এমন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বধ্যভূমি সংলগ্ন চাকসার গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রশিদ (৫৫), আবদুল মতালিব মিয়া (৫৩) ও জনাব আলী (৫৬) বলেন, ‘রাসেল ও বাবু মুন্সিসহ বেশ কয়েকজন মিলে ফলকটি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তারা এটা করেছে।’
সরাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জায়গাটি বধ্যভূমি হিসেবে অনেক আগেই চিহ্নিত হয়েছে।

অতীতেও এমন ঘটনা সেখানে ঘটেছে। এবার চিনতে পেরেছি। বুধবারের ঘটনা ঘটিয়েছে মুসা চেয়ারম্যানের ছেলে রাসেল ও বাবু মুন্সি নামের একটি ছেলে। আমরা এ ঘটনার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আবহাওয়া ভাল হলে এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি দিব।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ এস এম মোসা সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘নামফলক ভাঙ্গার বিষয়টি আমি শুনেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।’
###

সরাইলে বধ্যভূমি থেকে শহীদের নাম ফলক উধাও

ফেসবুকে আমরা..