সুমন আহম্মেদঃ
সরাইলের বিভিন্ন গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগের বাণিজ্য। লাখ লাখ টাকার চুক্তিতে সরকারের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এক শ্রেণির ঠিকাদার এ কাজ করছেন। গত শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিজসরাইল গ্রামের হাবিব মিয়ার বাড়িতে দেয়া হয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। এ ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন। গতকাল নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মোসার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে সংযোগ দেওয়ার ৫ দিন পরই এ লাইনটি সহ আরো ২৫ টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন প্রশাসন। গাঁ ঢাকা দিয়েছেন অবৈধ সংযোগে সহায়তাকারী রাঘব বোয়ালরা।

সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্র জানায়, মাটির নিচের খনিতে আমাদের গ্যাস অফুরান নয়। ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে গ্যাসের মজুদ ও কমে আসছে। এ লক্ষ্যে সরকার গত প্রায় ৩-৪ বছর আগেই দেশের সকল আবাসিক সংযোগ স্থাপনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছেন। সুযোগে কিছু ঠিকাদার অর্থের লোভে জালজালিয়াতির মাধ্যমে সরাইলের বিভিন্ন জায়গায় গোপনে সংযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। এ জাতীয় কিছু সংযোগ অভিযানের মাধ্যমে আগে বিচ্ছিন্নও করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। গতকাল সকালে নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মোসা বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানীর (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) প্রকৌশলী মো. শফিকুল

ইসলামকে সাথে নিয়ে পুলিশ সহ অভিযানে নামেন। প্রথমেই চলে যান নিজসরাইল গ্রামের বহুতল ভবনের মালিক হাবিব মিয়ার বাড়িতে। গত শুক্রবার গভীর রাতে দেওয়া সংযোগের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান। কোন ধরনের বৈধতা না থাকায় ওই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। একই গ্রামের মো. আলমগীর মিয়া সাড়ে ছয় বছর ধরে বিল দেন না। তাকে ৭৮ হাজার টাকা বিল প্রদানে বাধ্য করেন। সেই সাথে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উপজেলা সদরের পাশে সাঘরদীঘি পাড় গ্রামে অভিযান চালিয়ে বসতবাড়ির ২৫টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। অভিযান চলাকালে কিছু ঠিকাদারকে উপজেলা সদর ও আশপাশে অস্বস্থিতে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন জানায়, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সদর ইউনিয়নের নিজসরাইল গ্রামের হাবিব মিয়ার সদ্য নির্মাণকৃত বহুতল ভবনে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য রাস্তার মাটি কাটতে শুরু করে শ্রমিকরা। নিজ সরাইল গ্রামের কার্পেন্টিং করা সড়ক থেকে হাবিবের বাড়ির দূরত্ব দেড় শতাধিক গজ হবে। আর উপজেলা চত্বর থেকে আধা কিলোমিটার। থানা তো আরো কাছে। স্থানীয় লোকজন দেখে এ কাজকে অবৈধ বলে বাঁধা দেন। মুহুর্তের মধ্যে মাটি কাটা বন্ধ করে পালিয়ে যায় ঠিকাদার ও লেবাররা। থানা থেকে ছুটে আসেন পুলিশ সদস্য। রাত ১টার দিকে অতি গোপনে প্রথমে সড়কের পাশের পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ও পরে কার্পেন্টিং করা সড়কটি কেটে ফেলেন। লোকাল মিস্ত্রি দিয়ে বাখরাবাদ গ্যাস লাইনের পাইপ ছিদ্র করে সংযোগ স্থাপন করেন। কাজ চলাকালে চারিদিকে চলে বিশেষ পাহারা।

সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, এ কাজে পুলিশের কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। কেউ অভিযোগ করে থাকলে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট। সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, এই সড়কটি কাটার অনুমতির জন্য পরিষদে কেউ কোন আবেদন করেনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-মহা ব্যবস্থাপক মো. জাহিদুর রেজা বলেন, সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি উপায়ে এ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আবাসিক সংযোগ দেওয়া বা অন্য জায়গার সংযোগ স্থানান্তরের কোন বিধান নেই। এ জাতীয় অবৈধ কাজের দায়ে জেল জরিমানা দুটিই হতে পারে। সরজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম মোসা বলেন, হাবিব মিয়া সম্পূর্ণ অনিয়ম ও বেআইনি কাজ করেছেন। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
###

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে অভিযান– সরাইলে ২৬ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

 সুমন আহম্মেদঃ
সরাইল সদরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মোড় থেকে প্রাতঃবাজার পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। সাধারণ মানুষের স্বস্থিতে চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। সরাইলের প্রধান সড়কটিকে যেকোন উপায়ে যানজট মুক্ত করতেই হবে। আইনশৃঙ্খলা সভার সম্মানিত সদস্যকে লাঞ্জিত করার বিষয়টিও কঠোরভাবে দেখতে হবে। বিএডিসি মোড়কে সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডমুক্ত করে নির্বাচনের কেন্দ্র পুনরায় সেখানে স্থানান্তর করার জোর প্রস্তাবও এসেছে। সরাইল-অরুয়াইল সড়কটি নির্মাণ করতে সাবেক এমপি মৃধা ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরকে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। সড়কটির কাজের অনিয়মরোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করার আহবান জানিয়েছেন রফিক ঠাকুর।

গতকাল নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরাইল উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় উপরোল্লেখিত কথা গুলো বলেছেন বক্তারা। এ ছাড়াও অবৈধভাবে সরকারি জায়গা/খাল দখল, জুয়া মাদক ও আটক বাণিজ্য নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।

বক্তব্য রাখেন-সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সরাইল মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, উপজেলা প্রকৌশলী মো. এমদাদুল হক, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, রফিকুল ইসলাম খোকন, মো. শাহজাহান মিয়া,

মো, রাজিবুর রহমান রাজ্জি, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. দ্বীন ইসলাম, মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, মো, সরাফত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম কানু। কমিটির উপদেষ্টা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন,

সড়কের পাশ ও সড়ক দখল করে যত্রতত্র দোকান, দোকানের মালামাল সড়কে, হোটেলের ছুলা সড়কে এভাবে একটা উপজেলা চলতে পারে না। অতিদ্রুতই এসব দখলদারদের উচ্ছেদ করে সড়কটিতে যানজট মুক্ত করা হবে। কোন অনুরোধ ও তদবির কেউ করবেন না। এসব কোন কাজেও আসবে না।
###

মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় বক্তারা– সরাইলের ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে


সুমন আহম্মেদঃ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এলাকায় তিতাস নদীর উপর থাকা ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই পথে গত মঙ্গলবার রাত থেকে ভারী ও মাঝারি যানবাহন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভারী ও মাঝারী যানবাহন গুলোকে বিকল্প পথ হিসেবে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

এ অবস্থায় বিকল্প সড়কটিতে থেমে থেমে যানজট দেখা দিচ্ছে। ফলে যাত্রীদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যেই সেতু মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। সেতুটি ঠিক করতে কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগবে বলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ধারণা পাওয়া গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন জানান, মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাজপুরের পুরোনো ক্ষতিগ্রস্থ সেতুর চতুর্থ স্প্যানের ফুটপাতসহ রেলিং ভেঙ্গে পড়ে। একপাশ দিয়ে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেতুর অবস্থা ভালো না হওয়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী ভারী ও মাঝারি যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়ে বিকল্প হিসেবে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়।

এছাড়া চট্টগ্রাম-সিলেট পথের যানবাহনকে আখাউড়া-চান্দুরা সড়ক ব্যবস্থার করতে বলা হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনের ছোট ছোট যান একপাশ দিয়ে চলতে পারবে।
এদিকে বিকল্প পথটিতে এখন থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে সরাইল থেকে নাসিরনগর পর্যন্ত সড়কে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ওই সড়কটি সরু হওয়া এ ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, তাঁর এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হোসেন সরকার জানান, যানজট যেন বড় আকার ধারণ না করে সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ।
###

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সরাইলের শাহবাজপুর ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে যান চলাচলে বিঘিন্নত

ফেসবুকে আমরা..