সুমন আহম্মেদঃ
ঐক্যফন্টের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি বলেছেন, ‘ঢাকায় বসে রাজনীতি করার দিন শেষ। ওনাদের (ড. কামাল) সাথে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এমন অনেকেই আছেন যারা ওনাদেরকে শুধু টিভিতে ও খবরের কাগজে দেখেন।

তিনি গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণের চেক বিতরণকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এর আগে মন্ত্রী কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণনের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানেও তিনি ড. কামালের সমালোচনা করে বলেন, ‘তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করতে নানা কথা বলে বেড়ান।

মন্ত্রী জানান, গত পাঁচ বছরে কসবা ও আখাউড়া উপজেলার ১৭০০ জনকে চাকুরি দেয়া হয়েছে। চাকরি দেয়ার এ ধারা বর্তমান সরকারের আমলেও অব্যাহত থাকবে। জনগণের সেবক হিসেবে আগামী দিনেও সকলের সুখে-দু:খে তিনি পাশে থাকতে চান। মন্ত্রী ওই দিন দুই উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারন মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

কসবার অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন, পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েলসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূঁইয়া, পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
###

ড. কামালকে উদ্দেশ্য করে আইনমন্ত্রী ঢাকায় বসে রাজনীতি করার দিন শেষ

সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক সংঘর্ষে ১জন নিহত এবং চারপুলিশসহ উভয়পক্ষের ৩৫জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরও ভাংচুর করে দাঙ্গাবাজরা।শুক্রবার বিকেলে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের আতিকুড়া গ্রামে এবং সকালে ঢাকা-সিলেট মহাড়কের সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড মোড়ে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সরাইলে ওজনে মাংস দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে চারপুলিশ সহ উভয়পক্ষের ২০জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় মহাসড়কে ১ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে ও মহাসড়কের দু’পাশে ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

শুক্রবার সকালে বিশ্বরোড মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ২০ রাউন্ড শর্টগালের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শুক্রবার সকালে সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে দুবাই থেকে ছুটিতে আসা ধন মিয়া-(৩৫) বিশ্বরোড মোড়ে সদর উপজেলার খাটিহাতা গ্রামের কসাই কালু মিয়ার দোকান থেকে মাংস ক্রয় করেন। পরে তিনি অন্য জায়গায় মাংস মেপে দেখেন ওজনে কম।

পরে ধন মিয়া কালু মিয়ার দোকানে এসে ঘটনার প্রতিবাদ করলে দোকানী কালু ও তার ভাইয়েরা ধন মিয়াকে এবং একই গ্রামের রফিজ উদ্দিনের ছেলে দিপু (২৬) কে ছুরিকাঘাত করে।

এ ঘটনায় বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থানরত কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার জের ধরে সকাল ১০টায় উভয় গ্রামের কয়েকশত লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বিশ্বরোড মোড়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এতে করে বিশ্বরোড মোড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ঢাকা-সিলেট, কুমিল্লা-সিলেট, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে সদর থানার চার পুলিশসহ উভয়পক্ষের ২০জন আহত হয়। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন যানবাহনে থাকা যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহায়।

এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে সরাইল থানার পুলিশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার পুলিশ ও হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ব্যাপক লাঠিপেটা এবং ১০ রাউন্ড কাদানে গ্যাস এবং ২০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে ১ ঘন্টাপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
আহতদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার এস.আই প্রেমধন, এস.আই নিয়ামত উল্লাহ, কন্সটেবল সামসুল হক ও মাহবুব রয়েছেন। অন্যান্য আহতরা সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল এবং বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি ও চিকিৎসা নেয়।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, সংঘর্ষে সদর থানার চার পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছে। তিনি বলেন, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে সদর থানার পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ২০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। তিনি বলেন, মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

অপরদিকে শুক্রবার বিকেলে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের আতিকুড়া গ্রামে দু’দল গ্রামবাসীরসংঘর্ষে ফুল মিয়া-(৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। এ সময় উভয়পক্ষের ১৫জন আহত হয়েছেন। জমিতে গরু ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানান, গত তিনদিন আগে আতিকুড়া গ্রামের ফুল মিয়ার জমির ধান খেয়ে ফেলে একই এলাকার আক্কাস মিয়ার গরু। এ ঘটনায় উভয়ের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শুক্রবার রাতে সালিশে এ ঘটনা নিষ্পত্তির কথা ছিলো। কিন্তু বিকেলে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ফুল মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত এবং উভয়পক্ষের ১৫জন আহত হন বলে বিকেল ৪টায় ঘটনাস্থলে থাকা নাসিরনগর থানার এস.আই মো. কাউছার জানান।

###

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক সংঘর্ষে নিহত-১ ॥ আহত- ৩৫ ॥ বিশ্বরোড মোড় রণক্ষেত্র

ফেসবুকে আমরা..