
সুমন আহম্মেদঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের বোরো ধানে চিটা পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। উপজেলার আকাশি বিলে রোপন করা বোরো ধানে চিটা পড়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, কোল্ড ইনজুরির কারণে ধানে চিটা পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, তারা বর্তমানে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু জমির ধানে চিটা পড়ায় তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। ধানে চিটা পড়ায় পথে বসতে হবে উপজেলার গোর্কণ ইউনিয়নের জেঠাগ্রামের পাশ্ববর্তী আকাশী বিলের অনেক কৃষক পরিবারকে। বর্তমানে এসব জমি থেকে নামে মাত্র ধান পাওয়া যাবে। ভুক্তভোগীরা এ ঘটনার জন্য দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করেছেন।
জেঠাগ্রামের ভুক্তভোগী কৃষক সফিক মিয়া বলেন, তার জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য ইটভাটাও দায়ি।
একই গ্রামের কৃষক তাহের মিয়া বলেন, তিনিসহ তার তিন ভাই প্রায় ২০ কানি (এক কানি ৩০ শতাংশ) জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন কিন্তু প্রায় সব জমির ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে। ধানের মধ্যে চাল নেই। তিনি বলেন, সময় মতো দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ না পাওয়ায় এবং পার্শ্ববর্তী ইটভাটার কারনে ধানে চিটা হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। তিনি আরো বলেন, বিআর-২৮ জাতের ধানে চিটা বেশী দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ কৃষক তাদের খরচের টাকাও ঘরে তুলতে পারবেন না।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আনিচ্ছুজ্জামান ক্ষতিগ্রস্ত ধানি জমি পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন জমিতে আগাম ধান রোপন করায় ও আবহাওয়াজনিত কারণে চিটা হতে পারে। তিনি কৃষকদেরকে দ্রুত ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, নতুবা জমিতে ধান ঝরে পড়তে পারে।
এদিকে উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের হাওরেও আকস্মিক শিলাবৃষ্টির পাশিপাশি ধানে চিটা হয়ে বেশীর ভাগ জমির ফসলই নষ্ট হওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে নাসিরনগর উপজেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করা হয়। ঝড় আর শিলাবৃষ্টির কারণে উপজেলায় ৩ হাজার ৬শ হেক্টর জমির পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
###