botvনিউজ:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুরে ডাকাতি শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী মসজিদে মাইকে ঘোষনা দিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করে ২ ডাকাতকে গণপিটুনি দিলে ডাকাত নিহত হয়। গত বুধবার গভীর রাত আড়াইটায় উপজেলার চর-শিবপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত ডাকাতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। একজনের নাম আল-আমিন-(৩২)। তিনি নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার বিবিরকান্দি গ্রামের মরহুম রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। অজ্ঞাতনামা ডাকাতের বয়ন আনুমানিক (৩০)।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাত দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সংঘবদ্ধ একদল ডাকাত উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের চার বাড়িতে ডাকাতি করে। রাত দেড়টার দিকে ডাকাতরা চরশিবপুর উত্তর পাড়ার বাবুল মিয়ার বাড়িতে চড়াও হয়ে গেইটের তালা কেটে বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে। পরে ঘরের লোকজনকে হাত-পা বেঁধে নগদ ৪ লাখ ৩০হাজার টাকা, ৫ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। পরে পাশের বাড়ির স্বপন মিয়ার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে ঘরের লোকদের জিম্মি করে ঘরে রক্ষিত নগদ ১লাখ টাকা, ৩ভরি স্বর্ণাংকার নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ডাকাতদল একই গ্রামের প্রবাসী ওমর আলীর বাড়িতে প্রবেশ করে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে নগদ ১০হাজার টাকা ও ২ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। সর্বশেষ তারা ইয়ামিন মিয়ার বাড়িতে দরজা ধাক্কা দিলে ইয়ামিন মিয়া দরজা খুলে দেয়। ডাকাতরা ঘরে ঢুকেই ইয়ামিন মিয়াকে কুপিয়ে আহত করে। পরে তার ঘর থেকে ২ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
চার বাড়িতে ডাকাতি শেষে ডাকাতদল চলে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করে। মাইকের ঘোষনা শুনে দুই গ্রামের লোকজনসহ চারদিক থেকে ডাকাতদলকে ঘিরে ফেলে এবং ২জনকে আটক করে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞাতনামা -(৩০) ডাকাত নিহত হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতবস্থায় অপর ডাকাত আলামিন-কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণ পর সে মারা যায়।
ডাকাতির শিকার হওয়া স্বপন মিয়া জানান, ‘রাত দুইটার দিকে ৮/১০জনের মুখোশধারী একদল ডাকাত তার ঘরে ঢুকে তাদের সকলকে হাত-পা বেঁধে ঘর থেকে ১লাখ টাকা, ৩ভরি স্বর্ণালংকার ও ৫টি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায়।
ডাকাতির শিকার হওয়া প্রবাসী ওমর আলীর স্ত্রী জয়নবের নেছা জানান, ৭/৮জনের একদল মুখোশধারী ডাকাত তাঁর ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে নগদ ১০হাজার টাকা ও ২ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
ডাকাতের হামলায় আহত ইয়ামিন মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া জানান,‘‘রাত আড়াইটার দিকে তাদের দরজায় কে বা কারা ধাক্কা দেয়। তার বাবা দরজা খুলে দিলে ডাকাতরা তার বাবাকে মাথায় ও শরীরে বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে আহত করেন। এসময় ঘরের মহিলাদের কাছ থেকে ২ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) চিত্ত রঞ্জন পাল জানান, ডাকাতির ঘটনায় গ্রামবাসীর পিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের পরিচয় আমরা নিশ্চিত করতে পরেছি, অপরজনের পরিচয় জানার চেস্টা করছি।
তিনি বলেন, ডাকাত নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০০/৪৫০ লোককে আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা ও বাবুল মিয়া বাদী হয়ে একটি ডাকাতি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
###