botvনিউজ:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা জাতীয় পার্টির কোন্দলের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার জেলা জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলাকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২- (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার গাড়িসহ ৬/৭টি গাড়ি ভাঙচুর করে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা ইফতার মাহফিলের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে।
জেলা জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, দল থেকে বহিস্কৃত নেতা ওয়াহেদুল হক ওহাবের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা এই হামলা করেছে। তবে এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তারও করতে পারে নি।

এদিকে জেলা জাতীয় পার্টির ইফতার মাহ্ফিলে হামলার ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা এমপি। গতকাল শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টায় সরাইল-বিশ্বরোডের লালশালুক নামে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন তিনি এই দাবি করেন। তিনি হামলাকারীদের আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউল হক মৃধা এমপি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার। রাজনৈতিক সহাবস্থানের তীর্থভূমি হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিচিত। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত নেতা ওয়াহেদুল হক ওয়াহাবের পাশাপাশি সরকারি দলের এক প্রভাবশালী নেতাও জড়িত।

তিনি বলেন, আমাদের সমর্থনে আওয়ামী লীগ গত ৯ বছর ধরে ক্ষমতায়। কিন্তু সরকারের সমমনা দলের প্রতি এমন বিদ্বেষমূলক আচরণের কারণ আমাদের জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দেশ নিয়ে ভাবলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ দেশ নিয়ে ভাবে না। তারা নিজেদের কথা ভাবে।
হামলার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জিয়াউল হক বলেন, যখন আমার গাড়িটি ভাঙচুর করা হয় তখন এক পুলিশ কর্মকর্তার গাড়ি সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। এতেই বুঝা যায় এ হামলা পরিকল্পিত। দলের পক্ষ থেকে মামলা নিয়ে থানায় গেলেও পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করছে না। তিনি আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামলার জড়িতদের গ্রেফতার করা না হয় তাহলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পাশাপাশি রাজপথ ও নৌপথ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা রেজউল ইসলাম ভূইয়া, সরাইল উপজেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির, আশুগঞ্জ উপজেলা জাপার সদস্য সচিব মিরাজ শিকদার প্রমুখ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া লোকনাথ উদ্যান সংলগ্ন পৌর কমিউনিটি সেন্টারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টি ইফতার মাহফিল গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন।

ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে পার্টির মধ্যে আগ থেকেই উত্তেজনা থাকায় আগে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ অবস্থায় ইফতার মাহফিল শুরু হওয়ার মুহুর্তে কমিউনিটি সেন্টার অতর্কিত হামলা চালায় জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা ওয়াহেদুল হক ওয়াহাবের অনুসারীরা। এ সময় হামলাকারীরা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার গাড়ি সহ ৬/৭টি গাড়ি ভাংচুর করে। হামলায় ইফতার মাহফিল পন্ড হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আল-মামুন সরকার সরকারি দলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ’আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ আনা খুবই হাস্যকর। নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারনেই জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নবীর হোসেন জানান, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
###

জাতীয় পার্টির কোন্দল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলা

ফেসবুকে আমরা..