botvনিউজ:

আগামীকাল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনের উপ-নির্বাচন। উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের তিনজন প্রার্থী। এরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম (নৌকা), জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত রেজোয়ান আহমেদ (লাঙ্গল) এবং ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী মাওলানা এ.কে.এম আশরাফুল হক (মিনার)। ইতিমধ্যেই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন।
আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম (নৌকা) এর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে জাপা প্রার্থী রেজোয়ান আহমেদ (লাঙ্গল) এর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন জাপার কো-চেয়ারম্যান ও সাবেকমন্ত্রী জি.এম. কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ। পুরো নির্বাচনী এলাকায় বর্তমানে বিরাজ করছে উৎসব আমেজ।
এক সময়ের জাতীয় পার্টির (এরশাদ) দূর্গ হিসেবে পরিচিত নাসিরনগর আসনটি বর্তমানে আওয়ামীলীগের শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী তিনবার এবং আওয়ামীলীগ প্রার্থী ৫বার বিজয়ী হন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপ-নির্বাচনে মূলত আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মধ্যেই এখানে মূল লড়াই হবে। দুই দলের জন্যই ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে বিএনপি সমর্থকদের ভোট। স্থানীয়দের ধারণা বিএনপি’র তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ভোট নির্বাচনের জয় পরাজয়ের নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে। যে কারণে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ওইসব ভোটারদের নজর রাখছেন। তাদেরকে ভোটের দিনে কেন্দ্রে আনার জন্য বিশেষ করে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদেরকে তৎপর থাকতে বিভিন্ন পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগে প্রকাশ্য বিরোধ না থাকলেও ভেতরে ভেতরে বিরোধ রয়েছে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে দলের প্রার্থী বিএম ফরহাদ হোসেন সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে না পারার বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জেলার একাধিক টিম প্রার্থীর পক্ষে প্রচার- প্রচারণা চালিয়েছে।
এদিকে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী না থাকায় ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের পিছিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অবশ্য জাতীয় পার্টির রেজওয়ান আহমেদ একাধিকবার প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা তার প্রতি সহানুভূতি দেখাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, যেহেতু দেশে বর্তমানে ভোটের পরিবেশ নেই, তাই আমাদের দল নির্বাচনে অংশ নেয় নি। আমাদের সমর্থকরা কেউ যদি উৎসাহী হয়ে ভোট দিতে যায় তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজোয়ান আহমেদ নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ক্ষমতাসীন দল যদি কেন্দ্র দখল করে ভোট কারচুপি না করে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে যদি নির্বাচন হয় তাহলে তিনি বিজয়ী হবেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম বলেন, জনগন উন্নয়ন চায়। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় জনগন নৌকা মার্কাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী করবেন বলে তিনি আশা করেন।
উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বি.এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রামের জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আল-মামুন সরকার বলেন, ‘সকল বিরোধীদলও যদি এক হয়ে যায় তবু আমাদের প্রার্থীকে হারাতে পারবে না। উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরই জয় হবে। তিনি বলেন, নাসিরনগর ছিল এক সময়ের অবহেলিত জনপদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দেয়া যে প্রতিশ্রুতি ছিল সেসব বাস্তবায়ন করে নাসিরনগরকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। প্রয়াত নেতা ছায়েদুল হক মন্ত্রী থাকাকালে এলাকায় বেশ উন্নয়ন করেছেন।
এ ব্যাপারে জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা এম.পি বলেন, ‘যুগ যুগ ধরেই আমরা দেখে এসেছি কোনো দল নির্বাচনে না এলে তাদের সমর্থিত ভোটাররা সমমনা দলকে বেছে নেয়। সেই ক্ষেত্রে আমরা বিএনপি’র ভোট পাব বলে আশা করছি। বিএনপি’র অনেক নেতা-কর্মীই আমাদেরকে ফোন করে পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্থ করেছেন। সব মিলিয়ে এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জিতবে বলে আমি আশাবাদী।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদের ২৪৩ নং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১- সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ৯ জন। এর পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১০ হাজার ৪শ ১০ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৩ হাজার ৫শ ৯৯ জন। উপ-নির্বাচনে ৭৪টি ভোট কেন্দ্রের ৩৬৪টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ জন্য ৭৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩৬৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৭২৮জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই কর্মকর্তাদেরকই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে গত ৮ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা নাসিরনগরের উপ-নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে আইনশৃংখলা সভা ও নাসিরনগরে পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এসব অনুষ্ঠানে ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হকের মৃত্যুতে আসনটি শূণ্য হয়। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর তিনি মারা গেলে নির্বাচন কমিশন আসনটি শূণ্য ঘোষণা করে। ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সালে তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

লড়াই হবে নৌকা-লাঙ্গলের মধ্যে

botvনিউজ:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত। অস্বাভাবিক হারে কুকুরের বংশ বিস্তার ও উৎপাত বৃদ্ধি পেলেও বন্ধ রয়েছে কুকুর নিধন অভিযান। বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পৌর এলাকার প্রতিটি পাড়া ও মহল্লাবাসী ।
দিনের বেলা শহরের কুকুরের সংখ্যা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর পরই বেওয়ারিশ কুকুর বিভিন্ন মহল্লা থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে কুকুরের সংখ্যাও উৎপাত।
পৌর এলাকার ভাদুঘর বাস টার্মিনাল, মেড্ডা বাসস্ট্যান্ড, কাউতলী মোড় চৌরাস্তা, কালীতলী স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে, কালীবাড়ি মোড়, রেলওয়ে স্টেশন, কান্দিপাড়ার মোড়, মেড্ডা সিও অফিসের মোড়, মওলা ভবনের সামনে, সদর থানা কম্পাউন্ড, মঠের গোড়া, সদর হাসপাতালের সামনে, কুমারশীল মোড়, জেলরোড মোড়, পৌর ভবনের সামনে, সুপার মার্কেটের সামনে, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে, খৈয়াসারের মোড়, সড়ক বাজার গোলচত্বর, মহাদেবপট্টিসহ বিভিন্ন স্থানে রাতের বেলা দলবেঁধে কুকুর হাটাহাটি করে। কোন পথচারীকে একা পেলে তার উপর হামলে পড়ার চেষ্টা করে। এছাড়াও রাতের বেলা পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন রাস্তায় কুকুরের উৎপাতে মহল্লাবাসী বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পায়।

গত মাসখানেক আগে মধ্যপাড়া এলাকায় দুলাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি কুকুরে কামড় দেয়। পৌর এলাকার কাজীপাড়ার বাসিন্দা মোরশেদ মিয়া বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ সময় মতো কুকুর নিধন না করায় বর্তমানে শহরে কুকুরে উপদ্রব বেড়েছে। তিনি বলেন, কুকুরের উপদ্রবে রাতের বেলা শহরে চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। রাতের বেলা কুকুরের দল কাউকে একা পেলে তার উপর আক্রমন করার চেষ্টা করে। অনেক সময় কুকুর রিকসাযাত্রীকেও লাফিয়ে কামড় দেওয়ার চেষ্টা করে।
মধ্যপাড়ার বাসিন্দা ফারুক মিয়া বলেন, ভোরে কুকুরের উপদ্রবে বাসাবাড়ির ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুল, কোচিংসহ চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কখন কুকুর কাকে কামড় দেয় সেই আতংকে থাকি। শহরবাসী অবিলম্বে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে ॥ আতঙ্কে শহরবাসী

ফেসবুকে আমরা..