botvনিউজ:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কাজিয়াতলী সীমান্তের শূন্য রেখায় টানা ৪দিন অবস্থানকারী শিশুসহ ৩১ রোহিঙ্গা নর-নারীকে অবশেষে ফেরত নিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলী সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে তাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়।

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মান্নান জাহাঙ্গীর ও বিজিবির সূত্র বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

এর আগে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলী সীমান্তের ২০২৯ নং পিলারের কাছ দিয়ে কাটাতারের বেড়া অতিক্রম শিশুসহ ৩১ রোহিঙ্গা নর-নারীকে বাংলাদেশের পাঠানোর চেষ্টা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। এ সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সদস্যরা তাদের বাঁধা দিলে ৩১ রোহিঙ্গা সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান নেয়। গত ৪দিন ধরে প্রচন্ড শীতে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে রোহিঙ্গা শিশুরা। বিষয়টি সমাধানে একাধিকবার বিজিবি ও বিএসএফ’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোন সমাধান হয়নি।

সোমবার বিএসএফ’র পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য ২টি তাবু টানিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া তাদেরকে খাবারও সরবরাহ করা হয়।মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিএসএফ তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়।

এ ব্যাপারে কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মান্নান জাহাঙ্গীর বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ভারতীয় সীমান্তের কাটাতারের ভিতর দিয়ে ৫/৬টি গাড়িতে করে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে শূন্যরেখার কাছে দায়িত্বপালনরত অতিরিক্ত বিজিবি সদস্যদের চৌকিও গুছিয়ে কাজিয়াতলী ক্যাম্পে নিয়ে আসে বিজিবি।

২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ. কর্নেল মুহাম্মদ গোলাম কবির বিষয়টি মুঠোফোনে সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেছেন।
###

অবশেষে কসবার সীমান্তরেখা থেকে ৩১ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে বিএসএফ

botvনিউজ:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল বলে পরিচিত অরুয়াইল এবং পাকশিমুল ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষের প্রতিদিন স্থানীয় ছেতরা নদী পারাপারের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে ৬৫০ ফুট লম্বা একটি বাঁশের সাঁকো। শুষ্ক মৌসুমে এই সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও নদীর ওপর কোন ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে না।

একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও তারা কোন আশার আলো দেখছেন না। তবে সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী জানিয়েছেন, প্রকল্প প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘদিন আগেই পাঠানো হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাজাপুর, কাকুরিয়া, চর-কাকুরিয়া, সিঙ্গাপুর, রাণীদিয়া, বানিয়ারটেক, পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর, ষাটবাড়িয়া, হরিপুর, ফতেপুরসহ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব, কুলিয়ারচর ও বাজিতপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ অরুয়াইল বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সাঁকোর ওপর দিয়ে আসা যাওয়া করে।

বিশেষ করে এসব গ্রামের প্রায় সহস্রাদিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকোর ওপর দিয়ে অরুয়াইল আবদুস সাত্তার কলেজ ও অরুয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। আসা-যাওয়া করতে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগ পোহায়।

অরুয়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম আদনান, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়ামিন, অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আবদুল হাকিম, দশম শ্রেণীর হুমায়রা ও নবম শ্রেণীর ছাত্রী শ্রাবন্তি জানায়, তাদের সবার বাড়ি রাণীদিয়া ও বানিয়ারটেক গ্রামে।

তারা বলে, এই সাঁকোর ওপর দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায়ই পায়ে পেরেক ঢুকে যায়। বৃষ্টির মধ্যে চলতে গিয়ে পা পিচলে যায় আবার অনেক সময় পা তরজার ভেতর ঢুকে যায়। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি জানান।

কাকুরিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী গোলাম আলী ক্ষোভ ও হতাশার সাথে বলেন, এমন অবহেলিত আর কোন এলাকা আছে বলে আমার জানা নাই। নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে এখানে একটি ব্রীজ নির্মান করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও পাস করার পর তারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভুলে যান।

এলাকাবাসী জানান, এই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। তবে এই সাঁকো নির্মাণে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কোন ভূমিকা নেই। রাণীদিয়া গ্রামের ১৭টি দরিদ্র পরিবার যৌথভাবে তাদের নিজেদের অর্থে এ সাঁকো নির্মাণ করেন। বিনিময়ে সাঁকো ব্যবহারে তারা জনপ্রতি ২টাকা করে টোল আদায় করেন। ৬৫০ ফুট দৈর্ঘ্য এই সাঁকো নির্মানে প্রথমে সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় হয় বলে দাবি করেন নির্মাতাদের একজন রহমত আলী। তিনি জানান, এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তে তারা নিজেদের অর্থে এই সাঁকো নির্মাণ করেন। তিনি বলেন, কার্তিক মাসে তারা সাঁকো বসান এবং জৈষ্ঠ মাসে সাঁকো খুলে ফেলেন। প্রতিদিন দেড়-দু’হাজার টাকা আয় হয় বলে তিনি জানালেও প্রকৃতপক্ষে দৈনিক আয় আরো বেশি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে অরুয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আসিফ ইকবাল খোকন বলেন, এলাকার হাজার হাজার মানুষের কথা বিবেচনা করে ছেতরা নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মাণ খুবই জরুরী। বিশেষ করে এলাকার শত শত শিক্ষার্থীর দুর্ভোগের জন্য হলেও এখানে ব্রীজটি হওয়া খুবই প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে অরুয়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আবদুল হালিমের সহায়তায় উল্লেখিত স্থানে একটি ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব আমব্রেলা প্রকল্পভূক্ত করিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন করাতে পারেননি। সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল মৃধাও প্রকল্পটি নিয়ে ডিও লেটার দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও সফল হতে পারেন নি।

তিনি আরো জানান শুধু অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের ৮/১০ গ্রামের মানুষজনই নয় এপথ দিয়ে পাশ্ববর্তী ভৈরব, কুলিয়ারচর ও বাজিতপুর উপজেলার ১০/১৫টি গ্রামের মানুষ এখান দিয়ে চলাচল করে থাকেন। ছেতরা নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

এ ব্যাপারে অরুয়াইল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ব্রীজটি খুবই জরুরী। অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ পথ দিয়ে চলাচল করে। মানুষের কষ্টের শেষ নাই। এখানে একটি ব্রীজ হলে অরুয়াইল বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্যের এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ছেতরা নদীতে ব্রীজ নির্মাণ এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি।

এ ব্যাপারে অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের সাথে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী ইমদাদুল হক বলেন, বৃহত্তর কুমিল্লা প্রজেক্টে এ ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
###

সরাইলে ১০ গ্রামবাসীর চলাচলে ভরসা ৬৫০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকো !

ফেসবুকে আমরা..