ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থানার ছাদ থেকে পড়ে নৈশ প্রহরি আহত ॥

botvনিউজ:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি মার্কেটে চুরির ঘটনায় আটক রাসেল মিয়া-(১৯) নামে এক নৈশ প্রহরী থানা ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন। তবে স্বজনদের অভিযোগ রাসেলকে নির্যাতন করে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

গত সোমবার রাতে সদর মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটে। আশংকাজনক অবস্থায় রাসেলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত রাসেল পৌর শহরের মধ্যপাড়া এলাকার শান্তিবাগের আলকাছ মিয়ার ছেলে ও শহরের সিটি সেন্টারে অবস্থিত শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের নৈশ প্রহরী।
এ ঘটনার বিচার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে আহত রাসেলের গ্রাম মধ্যপাড়াবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার ভোর রাতে শহরের ‘সিটি সেন্টারে অবস্থিত ‘স্বপ্নলোক ফ্যাশন হাউজে’ চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা ওই দোকানের ক্যাশ বাক্স ভেঙ্গে ২ লাখ টাকা নিয়ে যায়। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বিকেলে চুরির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিটি সেন্টারের নৈশ প্রহরী, চুরি হওয়া দোকানের কর্মচারী ও শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের এটিএম বুথের নৈশ প্রহরী রাসেলকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশের দাবি ইফতারের পর পর সদর থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে পুলিশের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে ভবনের ছাদে ওঠে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য লাফিয়ে পড়ে মারাত্মক আহত হয়।

এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নবীর হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রাসেলকে সিটি সেন্টারে স্থাপিত একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়। সেখানে দেখা যায় রাসেল রাতের বেলা একটি পুটলি নিয়ে দৌড়াচ্ছে। এই ফুটেজ দেখার পর পরই রাসেল পালিয়ে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বেরিয়ে ছাদে গিয়ে লাফিয়ে পড়ে মারাত্মক আহত হয়। আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাকে ঢাকায় পাঠিয়েছি। বর্তমানে তার চিকিৎসার খরচও বহন করছি।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ) রেজাউল কবীর বলেন, চুরির ঘটনার রাসেলসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ইফতারের সময় থানা ভবনের দোতালায় রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রাসেলকে সিটি সেন্টারে স্থাপিত একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়। সেখানে দেখা যায় রাসেল একটি পুটলি নিয়ে দৌড়াচ্ছে। এই ফুটেজ দেখার পর পরই রাসেল পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছাদে ওঠে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়। আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাকে ঢাকায় পাঠিয়েছি।

এদিকে রাসেলকে পুলিশ মারধোর করে থানা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে এমন অভিযোগ করেছেন রাসেলের আত্মীয়রা। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে রাসেলের আত্মীয় স্বজনসহ মধ্যপাড়ার কয়েকশত লোক অংশ নেন।
মানববন্ধনে রাসেলের মা-আমেনা বেগম, ভাই রুবেল মিয়াসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, গত সোমবার ভোর রাতে সিটি সেন্টারের স্বপ্নলোক ফ্যাশন হাউজে চুরির ঘটনায় সোমবার বিকেল ৩টার দিকে রাসেলকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে থানা হেফাজতে নিয়ে তাকে বেদম মারধোর করে।

নির্যাতনের এক পর্যায়ে পুলিশ থানা ভবন থেকে তাকে ফেলে দেয়। এতে রাসেল মারাত্মক আহত হলে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইসিওতে নিবির পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে।

রাসেলের মামা খবির মিয়া অভিযোগ করে বলেন, রাসেলকে ডেকে থানায় নিয়ে গিয়ে থানা ভবনের ছাদে নিয়ে গিয়ে বেধরক পেটানো হয়। এক পর্যায়ে বাঁচতে রাসেল ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে। মানববন্ধনে বক্তারা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।
###

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা..