নাসিরনগরে কলঙ্কজনক হামলার কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে

botv নিউজঃ

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সাধারণ সম্পাদক ও দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নাসিরনগরের হিন্দু পল্লীতে যে হামলা হয়েছে তাতে মায়ের বদন মলিন হয়েছে।

শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর রাজবাড়িতে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট আয়োজিত দিনব্যাপী আন্তঃসাম্প্রদায় সম্প্রীতি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীতের পংক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, হিন্দু পল্লীতে হামলায় মায়ের বদন মলিন হয়েছে। কোনো ধর্মই দ্বন্দ্ব-সংঘাত হানাহানির কথা বলে না। এ কলঙ্কজনক হামলার কারণে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে।
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অনুকূল চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃসাম্প্রদায় সম্প্রীতি উৎসবে ড. বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনের জন্য শুধু মুসলমানই নয়, সব ধর্মের লোকজনই রক্ত দিয়েছেন। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমরা আশা করি এ ধরণের কলঙ্কজনক ঘটনা আর বাংলাদেশে ঘটবে না।

এর আগে দুপুর ১২টায় পায়রা উড়িয়ে সম্প্রীতি উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় মন্দিরের পুরোহিত সবুজ চক্রবর্তী ও মসজিদের ইমাম সোহরাব হোসেন।
উৎসবে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, নাসিরনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে সালমা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক মিয়া ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল মিয়া প্রমুখ।
উৎসবে উপস্থিত ছিলেন, বৃটিশ হাইকমিশনের গভর্ন্যান্স টিম লিডার এ্যাসলিন বেকার, পেইভের রূপকার অ্যালিস্টার লেগ, দ্যা হাঙ্গার প্রজেক্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈকত শুভ্র আইচ মনন প্রমুখ। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। উদ্বোধনের আগে একটি সম্প্রীতি র‌্যালি ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। উৎসবে সহস্রাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিনবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাস-(৩০) নামক এক যুবক তার ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে একটি ব্যাঙ্গাত্মক ছবি পোস্ট করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা ঐ যুবককে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরের দিন ৩০ অক্টোবর এলাকায় মাইকিং করে নাসিরনগর উপজেলা সদরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এবং হেফাজত ইসলামের ব্যানারে পৃথক দু’টি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে সমাবেশ থেকে একদল লোক হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর করে। ঘটনার পর নাসিরনগর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদেরকে জেলা পুলিশ লাইনে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও প্রত্যাহার করা হয়। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। দায়েরকৃত ৮টি মামলার মধ্যে ১টি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পুলিশ।

###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরো খবর

ফেসবুকে আমরা..